প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১১ নভেম্বর : প্রতি বছর কার্তিকের শুক্লা নবমী তিথিতে বাংলা জুড়ে হয়েথাকে দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো।তবে এবার আর শুধু তিথি মেনে নয়,সারা বছর হবে জগদ্ধাত্রী পুজো।তারই জন্য রবিবার নবমীর দিন ৪ ফুট উচ্চতার অষ্টধাতুর জগদ্ধাত্রী মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হল পূর্ব বর্ধমানের কালনার কাঁসারীপাড়ার গৌরাঙ্গ মঠে।হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতিতে ধর্মীয় রীতি মেনে জগদ্ধাত্রীর মূর্তিটি মঠের সংহাসনে অধীষ্ঠিত করে হল পুজোপাঠ। দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজা অর্চনা উপলক্ষে সোমবারও মাতোয়ারা থাকলো গৌরাঙ্গ মঠ চত্ত্বর।
কালনা শহরের কাঁসারীপাড়ায় রয়েছে শ্রীশ্রী সীতারাম দাস ওঙ্কারনাথ প্রতিষ্ঠিত গৌরাঙ্গ মঠ। সেই মঠে এতদিন মাটির তৈরি জগদ্ধাত্রী দেবী প্রতিমার পুজো হত।মাটির তৈরি প্রতিমার পরিবর্তে মঠের সিংহাসনে অষ্টধাতুর জগদ্ধাত্রী মূতি স্থায়ী ভাবে স্থান পাওয়ার ব্যাখ্যা অবশ্য দিয়েছেন মঠ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের কথা অনুযায়ী,কুলটির রাণীতলা এলাকার দাস পরিবারের মন্দিরে এতদিন নিত্য পুজো হত প্রায় ৪ ফুট উচ্চতার অষ্টধাতুর জগদ্ধাত্রী মূর্তিটির।ওই পরিবারের সদস্যরা কয়েক মাস আগে মূর্তিটি মঠেকে হস্তান্তর করেছেন।
এই হস্তান্তরে কারণ প্রসঙ্গে কুলটির ওই দাস পরিবারের সদস্য ধনঞ্জয় দাস এদিন বলেন,’প্রায় ষাট বছরেরও বেশী সময় ধরে আমাদের বাড়ির মন্দিরে অষ্টধাতুর জগদ্ধাত্রী মূর্তিটির নিত্য পূজা হত। কিন্তু আমাদের ছোট পরিবারে লোকবল কমে যাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয়।এই অবস্থায় দেবীর নিত্য পুজোয় যাতে কোনও ত্রুটি না হয়, সেই কারণেই আমারা আমাদের পরিবারের দেবী মূর্তিটি গৌরাঙ্গ মঠকে হস্তান্তর করি ।’ এখানে প্রতিদিন ঠিকঠাক ভাবে দেবীর পূজাঅর্চনা হবে বুঝেই দেবীকে মঠ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছেন বলে ধনঞ্জয় দাস জানিয়েছেন।
মঠের পরিচালন সমিতির অন্যতম সদস্য চণ্ডীদাস মুখোপাধ্যায় ও মধুসূদন চট্টোপাধ্যায় জানান,এতদিন তিথি মেনে দু’দিন মঠে জগদ্ধাত্রী প্রতিমার পুজো হয়েছে।তবে রবিবার অষ্টধাতুর দেবী জগদ্ধাত্রীর মূর্তি মঠে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখান থকে বারোমাস অর্থাৎ নিত্যদিন মঠে ভক্তি সহকারে হবে দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো।তার জন্যেই বিশেষ সিংহাসন তৈরী করে দেবীকে মঠে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এলাকার জনপ্রতিনিধি মৌসুমী রায় কার্ফা বলেন, ‘এতদিন প্রতি বছর নির্দিষ্ট তিথিতে মঠে দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো হত।এখন থেকে প্রতিদিন নিষ্ঠা সহকারে দেবী জগদ্ধাত্রীর পূজা হবে মঠে।এরজন্য নতুন মন্দির তৈরী করা হয়েছে।সাথে সাথে সিংহাসনও তৈরী করা হয়েছে।দেবীর ভক্তরা বছরের যেদিন ইচ্ছা মঠে এসে দেবী জগদ্ধাত্রীর পুজো দেওয়ার ইচ্ছা পূরণ করতে পারবেন।’।