গীতা সুগীতা কর্তব্যা কিমন্যৈঃ শাস্ত্রবিস্তরৈঃ।
যা স্বয়ং পদ্মনাভস্য মুখপদ্মাদ্বিনিঃসৃতা ৷৷
সর্বশাস্ত্রময়ী গীতা সর্বদেবময়ী যতঃ।
সর্বধর্মময়ী যস্মাত্তস্মাদেতাং সমভ্যসেৎ |
গীতা স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের মুখপদ্ম থেকে নিঃসৃত হয়েছেন। সেই গীতা সুন্দরভাবে পাঠ করতে হবে। অন্যান্য বহু রকমের শাস্ত্রের প্রয়োজন নেই। যেহেতু শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা সর্বশাস্ত্রময়ী, সর্বদেবময়ী ও সর্বধর্মময়ী, সুতরাং গীতা অভ্যাস করা একান্ত কর্তব্য।
শালগ্রামশিলাগ্রে তু গীতাধ্যায়ং পঠেত্ত্ব যঃ।
মন্বন্তরসহস্রাণি বসতে ব্রহ্মণঃ পুরে ৷৷
হত্বা হত্বা জগৎ সর্বং মুষিত্বা সচরাচরম্ ।
পাপৈর্ন লিপ্যতে চৈব গীতাধ্যায়ী কথঞ্চন।
তেনেষ্টং ক্রতুভিঃ সর্বৈদত্তং তেন গবাযুতম্ ।।
গীতামভ্যস্যতা নিত্যং তেনাপ্তং পদমব্যয়ম্ ।।
যিনি শালগ্রাম শিলার সামনে গীতাধ্যায় পাঠ করেন, তিনি সহস্র মন্বন্তর ব্রহ্মলোকে বাস করেন। যদি কোন ব্যক্তি বারংবার জগৎ নাশ বা চৌর্য-কর্ম করে, এমন জনও গীতাধ্যায়ী হলে কোন প্রকার পাপে লিপ্ত হয় না। উপরন্তু তিনি সর্বজ্ঞ হন এবং দশহাজার গো-দানের ফল লাভ করেন। প্রত্যহ গীতাধ্যায়ী ব্যক্তি অভয়পদ প্রাপ্ত হন।
গীতাধ্যায়ং পঠেদ্ যস্তু শ্লোকং শ্লোকার্ধমেব বা।
ভৰপাপৰিনিমুক্তো যাতি বিষ্ণোঃ পরং পদম্।।
যিনি গীতার একটি অধ্যায়, একটি শ্লোক কিংবা অর্ধ শ্লোক মাত্র পাঠ করেন, তিনি সংসার-পাপ থেকে মুক্ত হয়ে বিষ্ণুধামে গমন করেন।
যো নিত্যং বিশ্বরূপাখ্যমধ্যায়ং পঠতি দ্বিজঃ।
বিভূতিং দেবদেবস্য তস্য পুণ্যং বদাম্যহম্ ৷৷
বেদৈরধীতৈর্যৎ পুণ্যং সেতিহাসৈঃ পুরাতনৈঃ।
শ্লোকেনৈকেন তৎ পুণ্যং লভতে নাত্র সংশয়ঃ ৷৷
আব্রহ্মস্তম্ভপর্যস্তং জগতৃপ্তিং করোতি সঃ।
বিশ্বরূপং সদাধ্যায়ং বিভূতিঞ্চ পঠেত্ব যঃ ৷৷
যে ব্রাহ্মণ ভগবদ্গীতার শ্রীকৃষ্ণের বিশ্বরূপ নামক একাদশ অধ্যায় ও বিভূতিযোগ নামক দশম অধ্যায় নিত্য পাঠ করেন, আমি এখন তাঁর পুণ্যের কথা বলছি। সমগ্র বেদ, ইতিহাস, পুরাণ অধ্যয়ন করলে যে পুণ্য হয় এক শ্লোকেই সেই পুণ্য হয়ে থাকে। যিনি প্রতিদিন বিশ্বরূপ ও বিভূতিযোগ নামক অধ্যায় পাঠ করেন তিনি
আব্রহ্ম স্তম্ভ পর্যন্ত জগতের প্রীতি সাধন করেন।
অহন্যহনি যো মর্ত্যো গীতাধ্যায়ং পঠেত্ব বৈ।
দ্বাত্রিংশদপরাধাংস্ত ক্ষমতে তস্য কেশবঃ।।
লিখিত্বা বৈষ্ণবানাঞ্চ গীতাশাস্ত্রং প্রযচ্ছতি।
দিনে দিনে চ যজতে হরিং চাত্র ন সংশয়ঃ ৷৷
চতুর্ণামেব বেদানাং সারমুষ্কৃত্য বিষ্ণুনা ।
ত্রৈলোক্যস্যোপকারায় গীতাশাস্ত্রং প্রকাশিতম্ ৷৷
কেশব প্রত্যহ গীতাধ্যায়ী ব্যক্তির বত্রিশ প্রকার অপরাধ ক্ষমা করেন। যিনি গীতাশাস্ত্র লিখে বৈষ্ণবকে প্রদান করেন তিনি প্রত্যহ শ্রীহরিপূজার ফল প্রাপ্ত হন
সন্দেহ নেই। বিষ্ণু চারি বেদের সার উদ্ধার করে ত্রিভুবনের উপকারের জন্য এই গীতাশাস্ত্র প্রকাশ করেছেন।
ভারতামৃতসর্বস্বং বিষ্ণোর্বক্ত্রাদ্বিনিঃসৃতম্ ।
গীতা-গঙ্গোদকং পীত্বা পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে ৷৷
ধর্মং চার্থঞ্চ কামঞ্চ মোক্ষঞ্চাপীচ্ছতা সদা ।
শ্রোতব্যা পঠনীয়া চ গীতা কৃষ্ণমুখোতা ৷৷
মহাভারতের সারসুধা, বিষ্ণুমুখনির্গত গীতারূপ গঙ্গাবারি পান করলে পুনর্জন্ম হয় না।
চতুর্বর্গ ফলাভিলাষী ব্যক্তির প্রত্যহই কৃষ্ণমুখবিনির্গত গীতা শ্রবণ ও পাঠ করা কর্তব্য।
যো নরঃ পঠতে নিত্যং গীতাশাস্ত্রং দিনে দিনে।
বিমুক্তঃ সর্বপাপেভ্যো যাতি বিষ্ণোঃ পরং পদম্ ৷৷
যিনি নিত্যই গীতা পাঠ করেন, তিনি সব রকমের পাপ থেকে মুক্ত হয়ে শ্রীবিষ্ণুর পরম ধামে গমন করেন।।
★ ভক্তিবেদান্ত বুক ট্রাস্ট কর্তৃক মুদ্রিত ‘শ্রীমদ্ভগবদগীতা মাহাত্ম্য’ খন্ড থেকে নেওয়া ।