এইদিন ওয়েবডেস্ক,বেঙ্গালুরু,২৩ এপ্রিল : কলেজের প্রাক্তন মুসলিম সহপাঠীর প্রেমের প্রস্তাব স্বীকার না করায় নির্মমভাবে খুন হতে হয়েছিল কর্ণাটকের হুবলির একটি কলেজের ছাত্রী নেহা হিরেমাথকে । ফায়াজ নামে ওই জিহাদি মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে নেহাকে ১৭ বার ছুরি দিয়ে কুপিয়েছিল বলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে বলে জানা গেছে । মেয়ে লাভ জিহাদের শিকার হয়েছে বলে বারবার দাবি করছেন নেহার বাবা কর্ণাটকের হুবলিতে কংগ্রেস কাউন্সিলর নিরঞ্জন হিরেমাথ । যদিও তার দল কংগ্রেস ঘটনাটি লাভ জিহাদের সাথে সম্পর্কযুক্ত বলে মানতে রাজি হচ্ছে না । এবারে নিরঞ্জন হিরেমাথ আরও চাঞ্চল্যকর দাবি করে জানিয়েছেন যে হিন্দি সিনেমা ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ স্টাইলে তার মেয়েকে খুন করা হয়েছিল এবং রাজ্যের -‘হিন্দু মেয়েদের ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র চলছে । ইংরাজি খবরের চ্যানেল টাইমস নাউ-এর সাথে কথা বলার সময় তিনি এই দাবি করেছেন ।
নিরঞ্জন হিরেমাথ বলেছেন,’আমার কাছে একটি অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট রয়েছে, আর সেই রিপোর্ট অনুযায়ী আমার মেয়েকে কেরল স্টোরি স্টাইলে খুন করা হয়েছে। হিন্দু মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলার বিশাল ষড়যন্ত্র চলছে রাজ্যে ।’ কি সেই ষড়যন্ত্র ? উপস্থাপক পদ্মা যোশীর এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘এটা এক ধরনের মাফিওসির কাজ, যারা হিন্দু মেয়েদের কোমল মনকে কাজে লাগাচ্ছে এবং তাদের প্রেমের ফাঁদে ফেলছে । এটা একদিনের ব্যাপার নয়। এটা বছরের পর বছর ধরে হয়ে আসছে।’ কেরালায় লাভ জিহাদের ক্রমবর্ধমান ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন যে এই ধরনের ঘটনা আগে অন্যান্য রাজ্যে ঘটত এখন কর্ণাটকে ঘটছে। সেখান থেকে মানুষ এখানে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এখানের(কর্ণাটকের) মানুষকে উসকানি দিয়েই এসব করা হচ্ছে ।’
তিনি বলেন,’এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কোনো ব্যক্তি জড়িত ছিল না। তিনি (ফায়াজ) একজন প্রাক্তন ছাত্র ছিলেন। ভিতর থেকে তাকে আমার মেয়ে সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হচ্ছিল । আমার মেয়ে কোথায় ছিল, সে কোন ক্লাসে পড়ছিল, কখ সে গাড়ি নিতে যাচ্ছিল, এই সব খবর তাকে দেওয়া হয়েছিল ।’ তিনি বলেছেন যে তিনি বিগত ১০ দিনের কলেজ ক্যাম্পাসের ফুটেজ দেখে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করছেন এবং সিবিআইকে এই ফুটেজটি দেখতে বলেছেন । এতে সমস্ত বিবরণ থাকবে । তিনি বলেন,’আমার মেয়েকে খুন করা হয়েছে, এতে আমি শোকাহত, আমার পরিবার শোকাহত, পুরো সমাজ শোকাহত… কেরালা স্টোরি সিনেমাটি আমার মেয়ের হত্যার মতোই হত্যা সংঘটিত হয়েছে। এটি একটি অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন যা আমি আমার মেয়েকে হত্যার পর জানতে পেরেছি।’
তিনি বলেছিলেন যে তার মেয়ে জানতে পেরেছিল যে তারা তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে, তাই সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল, তবুও তার উপর চাপ দেওয়া হয়েছিল। এতে ফায়াজের বাবা-মা এবং তার সম্প্রদায়ের লোকজনও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তিনি বলেন, তার মেয়েও ফায়াজকে ভয় পেত কিন্তু সে কখনো বাড়িতে জানায়নি। শুধু আমার মাকে বলেছিলাম যে একটি কলেজের ছেলে আছে যে তাকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে এবং তাকে ক্রমাগত প্রস্তাব দিচ্ছে । সে তার মাকে এসে তাকে কলেজে নিয়ে যেতে বলেছিল।
কংগ্রেস কাউন্সিলর বলেছেন যে তার মেয়েকে হত্যা করার পরে তার স্ত্রী তাকে এই সমস্ত কিছু জানিয়েছিলেন, তারপরে তিনি জানতে পারলেন যে লোকেরা তার মেয়েকে ধর্মান্তরিত করার জন্য তার পিছনে লেগেছিল এবং তাতে ব্যর্থ হয়েই তাকে হত্যা করা হয়েছে, তার কলেজের ছবিগুলি শেয়ার করা হচ্ছে। নিরঞ্জন হিরেমঠ বলেন, অভ্যন্তরীণ রিপোর্টের ভিত্তিতে তিনি প্রতিটি দাবি করছেন। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে তার উদ্দেশ্য কখনই কোনও জাতি বা ধর্মকে লক্ষ্য করে নয়, তবে এটি সত্য যে হিন্দু মেয়েদের ফাঁদে ফেলার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে কর্ণাটকে।’ এদিকে হুবলির কংগ্রেস কাউন্সিলর নিরঞ্জন হিরেমাথের এই দাবি যদি সত্যি হয় তাহলে নেহাকে হত্যার পরের দিন ঘাতক লাভ জিহাদি ফায়াজের বাবার সংবাদমাধ্যমের সামনে কাঁদতে কাঁদতে রাজ্যবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকে নিছক অভিনয় বলে মনে করছেন কর্ণাটকের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ।।