এইদিন ওয়েবডেস্ক,বার্লিন,২৩ মার্চ : যুগ যুগ ধরে নেশাখোরদের কাছে গাঁজার আলাদা একটা আকর্ষণ আছে । এশিয়ার দেশে গাঁজার উপর কড়াকড়ি থাকলেও ইউরোপের দেশগুলিতে গাঁজার চাহিদা ক্রমবর্ধমান । বিশেষ করে জার্মানিতে গাঁজা সেবন ও চাষকে বৈধতা দেওয়ার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে দাবি উঠছিল । অবশেষে গাঁজাখোরদের সেই দাবি মেনে গাঁজা চাষ ও সেবনকে বৈধতা দিল জার্মান সরকার ।
শুক্রবার রাতে এক যুগান্তকারী ভোটাভুটিতে ব্যক্তিগত ব্যবহারে গাঁজার বৈধতা অনুমোদন দিয়েছে জার্মানির পার্লামেন্ট। যদিও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ।কারন উদার অভিবাসন নীতির কারনে এমনিতে ইসলামি শরণার্থীদের অপরাধ প্রবনতায় ব্যতিব্যস্ত জার্মানি,তার উপর গাঁজা সেবকদের সংখ্যা দ্রুত হারে বেড়ে গেলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বলে মনে করা হচ্ছে ।
জার্মান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ বুন্দেসরাতে গাঁজাকে বৈধতা দেওয়ার আইনটি শুক্রবার পাস হয়। কিন্তু পার্লামেন্টের নিন্মকক্ষ বুন্দেস্টাগে বিলটি পাস হয়েছে গত ফেব্রুয়ারিতেই। এর মধ্যে দিয়ে আগামী ১ এপ্রিল থেকে দেশটিতে ধূমপানের মতোই প্রকাশ্যে করা যাবে গাঁজাসেবন।নতুন আইন অনুযায়ী, ব্যক্তিগত বা বিনোদনমূলক ব্যবহারের জন্য প্রতিদিন ২৫ গ্রাম (০.৮৮ আউন্স) পর্যন্ত গাঁজা সঙ্গে রাখা বৈধ। তবে ১৮ বছরের কম বয়সী যে কারো জন্য গাঁজা সেবন বা সঙ্গে রাখা এখনো নিষিদ্ধ।
এছাড়া গাঁজা চাষ অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে জমিতে যেমন চাষ করা যাবে, তেমনি ব্যক্তিগতভাবে কেউ নিজস্ব বাড়ির আঙিনায় সর্বোচ্চ তিনটি গাঁজা গাছ লাগাতে পারবেন। গাঁজার বৈধতা দিয়ে জার্মানি ইউরোপের সবচেয়ে উদার গাঁজা আইনের দেশের তালিকায় যুক্ত হলো। এর আগে ২০২১ সালে মাল্টা এবং ২০২৩ সালে লুক্সেমবার্গ মাদকটির বিনোদনমূলক ব্যবহার বৈধ ঘোষণা করেছে।
যদিও উদার গাঁজা আইনের জন্য পরিচিত নেদারল্যান্ডস সম্প্রতি পর্যটক ও অনাবাসীদের কাছে গাঁজা বিক্রিতে কিছুটা কড়াকড়ি আরোপ করেছে।গাঁজা বৈধতার প্রশ্নে জার্মানিতে বেশ কয়েক বছর ধরেই তর্ক-বিতর্ক চলছিল। গাঁজার বৈধতা দেওয়ার পক্ষে ছিল চ্যান্সেলর ওলাফ শ্যুলজের জোট সরকারের তিন শরীকদল সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস, গ্রিনস ও এফডিপি।তবে সরকারের বিরোধীদল সিডিইউ পার্টির সিমোন বোরচার্ড বলেন, নতুন আইন তরুণদের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে তুলবে। মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনগুলোও এ আইনের তীব্র বিরোধী।নতুন গাঁজা আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে দেশটির উদ্দেশ্য হচ্ছে, কালোবাজারি দমন, ভেজাল গাঁজাসেবন থেকে ধূমপায়ীদের রক্ষা করা এবং সংঘবদ্ধ মাদকচক্রের আয়ের উৎস বন্ধ করা।জার্মান ক্যানাবিস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, কালোবাজারিরা গাঁজার মধ্যে বালি, ট্যালকম পাউডার, মশলার গুঁড়া, এমনকি কাচ ও সীসা পর্যন্ত মিশিয়ে দেয়। তাছাড়া গাঁজার মধ্যে হেরোইনও মেশানো হতে পারে, তাতে প্রাকৃতিক গাঁজার চেয়ে সেগুলো শরীরের জন্য শতগুণ ভয়ানক ।।