এইদিন ওয়েবডেস্ক,প্যারিস,২৮ ফেব্রুয়ারী : স্কুলের ইতিহাসে শিক্ষককে হত্যার হুমকি দেওয়া ইসলামী স্টেট (আইএসআইএস) অনুগত ১১ বছরের পাকিস্তানি মুসলিম কিশোরকে গ্রেফতার করেছে ফরাসি পুলিশ । রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ ফ্রান্সের ভ্যাল ডি’ওইস (৯৫)-এর গৌসেনভিল থেকে ওই কিশোরকে গ্রেফতার করা হয় । তথ্য অনুযায়ী,ওই কিশোর তার টিকটক অ্যাকাউন্টে, তার ইতিহাস এবং ভূগোল শিক্ষককে শিরচ্ছেদের হুমকি সহ সন্ত্রাসী প্রকৃতির বেশ কয়েকটি ভিডিও পোস্ট করেছিল । এই ভিডিওগুলির একটিতে, একটি ছুরি এবং একটি কালাশনিকভ হাতে নিয়ে সশস্ত্র একজন জিহাদিকে হুমকিমূলক অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা গেছে । তোর ওই অ্যাকাউন্টে ১,০০০ জন্য বেশি ফলোয়ার্স রয়েছে । যদিও বিষয়টি নিয়ে বিতর্কে সৃষ্টি হলে ওই সমস্ত পোস্টগুলোকে মুছে ফেলা হয়।
জানা গেছে,কয়েক বছর আগে পাকিস্তান থেকে ফ্রান্সে গিয়েছিল কিশোরের বাবা-মা । তারা ফরাসি ভাষা জানে না । তবে কিশোরের বাবা মার মধ্যে কট্টর ইসলামী মানসিকতা দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে ফরাসি পুলিশ । সম্প্রতি গোয়েন্দাদের নজরে পড়ে কিশোর তার টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকে ইসলামী সন্ত্রাসবাদের প্রচার চালাচ্ছে । ওই একাউন্ট থেকেই সে স্কুলের ভূগোলের শিক্ষককে শিরচ্ছেদ করে হত্যার হুমকি দেয় । এরপর ঘটনা তদন্তে নামে ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থা । তারা ছাত্রটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সিদ্ধান্ত নেয় । কিশোরের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তার মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয় । তার ফোন হাতরাতেই কার্যত চোখ কপালে উঠে যায় পোড় খাওয়া গোয়েন্দা আধিকারিকদের । গোয়েন্দারা কিশোরের ফোনের ভিতরে, ইসলামিক স্টেটের সাথে যুক্ত অসংখ্য ফাইল দেখতে পায় । ওয়ালপেপার হিসাবে ব্যবহৃত ইসলামিক স্টেটের পতাকা এবং এমনকি একটি কালাশনিকভ হাতে আল কায়দার কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী বিন লাদেনের ছবিও পাওয়া যায় । গোয়েন্দারা বুঝতে পারি যে স্পষ্টতই ইসলামিক স্টেট দ্বারা মুগ্ধ হয়ে জিহাদি কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়েছিল ওই কিশোর । সে জানায় মিডিয়া ইসলামি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সম্পর্কীয় পোস্ট দেখার পর জিহাদি কর্মকান্ডে আকৃষ্ট হয়েছে । কিশোর জেরায় পুলিশকে জানায় যে তার স্কুলের ভূগোলের শিক্ষক মোহাম্মদের নাম ভুল ভাবে উচ্চারণ করার জন্য তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল।
পরে ধৃত কিশোরকে পন্টোইস আদালতে (৯৫) রেফার করা হয়েছিল । আইনজীবীর মাধ্যমে ওই কিশোর ক্ষমা চাইলে তাকে বিচারিক তত্ত্বাবধানে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। বিচারক কিশোরকে একটি শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানোর পরামর্শ নির্দেশ ।।