প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২১ সেপ্টেম্বর : আজ মহালয়ার দিন একের পর এক অঘটন। তাতেই মৃত্যু হল এক শিশু সহ চারজনের।ঘটনাগুলি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা ও মেমারিতে। মৃতরা হলেন সোমা হেমব্রম তাঁর পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে সোহিনী হেমব্রম এবং সাবির আলি প্রধান ও জনৈক সামু। পুলিশ এই মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গলায় ফাঁস দিয়ে নিজের পাঁচ বছর বয়সী শিশু কন্যা সোহিনী হেমব্রমকে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন মা সোমা হেমব্রম।রবিবার সকলে ঘটনাটি ঘটেছে কালনা থানার সিমলনের গুপ্তিপুর এলাকায়। কি কারণে বধূ সোমা হেমব্রম এমন ঘটনা ঘটালেন তার কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না পরিবারের লোকজন । সোমা হেমব্রমের শাশুড়ি বলেন,এদিন বৌমার বাপের বাড়ি যাবার কথা ছিল । সকালে বৌমা আমার হাতে লোনের কিস্তির টাকা এবং বাড়ির ইলেইট্রিক বিলের টাকা দেয়। তারপর আমি কাজে চলে যাই ।পরে বাড়ি ফিরে এসে এই অঘটনের কথা জানতে পারি।কারুর সাথে কোন ঝগড়াঝাঁটি নেই। আমার ছেলে ভিন রাজ্যে কাজ করে। কি কারনে বৌমা এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটালো তা বুঝে উঠতে পারছেন না বলে মৃত বধূর শাশুড়ি জানিয়েছেন। মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে কালনা থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
অপর মৃত্যুর ঘটনাটি এদিন সকালে ঘটেছে মেমারি ১ ব্লকের কৈলাশপুর গ্রামে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,এক গৃহস্থের বাড়িতে থাকা বুজে যাওয়া সেপটিক ট্যাঙ্ক’ চওড়া ও গভীর করতে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাসে অচৈতন্য হয়ে পড়েন দু’জন শ্রমিক। মেমারি থানার পুলিশ,দমকল (মেমারি) এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (মেমারি) মিলে প্রায় সাত ঘন্টা বাদে সেখান থেকে তাঁদের নিথর দেহ উদ্ধার করে।মৃতদের মধ্যে সাবির আলির বাড়ি কালনার ধাত্রীগ্রামের কালীনগর পূর্ব পাড়ায়। একই ঘটনায় অপর মৃত জনৈক সামুর বাড়ি হুগলির পাণ্ডুয়ার পটলডাঙায়। পুলিশ মৃতদেহ দু’টিকে বর্ধমান মেডিক্যালে ময়না তদন্তের জন্যে পাঠিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বিষাক্ত গ্যাসের দাপটে আরও তিন শ্রমিক ও গৃহকর্তার ছেলেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।তাঁরা এখন সুস্থ রয়েছেন।
বিডিও (মেমারি ১) শতরূপা দাস বলেন,’পুলিশের কাছ থেকে বেলা ১১টা নাগাদ দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ব্লকের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। অচৈতন্য অবস্থায় পৌনে তিনটে নাগাদ দেহ দু’টিকে উদ্ধার করে মেমারি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। মেমারি- ১ ব্লকের বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের আধিকারিক ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় জানান ‘অবৈজ্ঞানিক ও অপরিকল্পিত ভাবে সেপটিক ট্যাঙ্ক চওড়া করা হচ্ছিল। সে কারণেই পাশের সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে গ্যাস বের হয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে।’।