এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতাড় (পূর্ব বর্ধমান) ৭ ডিসেম্বর : বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর লাগাতার হামলা চালানো ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে মিছিল ও পথসভার আয়োজন করেছিলেন সনাতনীরা। পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারে এই মিছিলের পর পথসভা হয়। বজরংদল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ডাকা এই প্রতিবাদ মিছিলের শেষে যখন ভাতার বাজারে নাসিগ্রাম মোড়ে পথসভা হয়। পথসভার শেষের দিকে যখন বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের কুশপুত্তলিকা দাহ করার প্রক্রিয়া চলছিল তখনই প্রতিবাদীদের সঙ্গে সামিল হলেন ভাতারের এক প্রাক্তন তৃণমূল ছাত্রনেতা শেখ সাদ্দাম। আর ইউনুসের কুশপুত্তলিকাকে উদ্দেশ্য করে শেখ সাদ্দাম স্লোগান দিলেন,” ভারত মাতা কী জয়,বাংলাদেশ মুর্দাবাদ।”শনিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা রীতিমতো চাঞ্চল্য ফেলে দেয় উপস্থিত প্রতিবাদীদের এবং পথচারীদের মধ্যে। প্রতিবাদীদের মধ্যে অনেকেরই চেনা মুখ শেখ সাদ্দাম। তাঁরা হঠাৎ সাদ্দামকে দেখে সৌজন্য বিনিময় করেন। তবে শেখ সাদ্দাম স্লোগান দেওয়ার পর বেশি কথা না বলে নিজের কাজে চলে যান। আন্দোলনে শেখ সাদ্দামের এই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখে অভিভূত অনেকেই।
বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে শনিবার ভাতার বাজারে প্রতিবাদ মিছিল ও পথসভার ডাক দিয়েছিল বজরংদল,বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সহ একাধিক রাস্ট্রবাদী সংগঠন। ভাতার মহাপ্রভুতলা থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। দমকল অফিস পর্যন্ত মিছিল হয়ে নাসিগ্রাম মোড়ে শেষ হয়। তারপর হয় পথসভা। উপস্থিত ছিলেন রামকৃষ্ণ আশ্রমের মহারাজ স্বামী তদরুপানন্দ, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সোমনাথ মহারাজ, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ পিনাকী হাজরা সহ অন্যান্যরা। পথসভায় বক্তৃতা পর্ব মিটে যাওয়ার পর প্রতিবাদীরা মহম্মদ ইউনিসের কুশপুত্তলিকা দাহ করার জন্য যখন প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখনই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন ভাতারের আলিনগর গ্রামের বাসিন্দা শেখ সাদ্দাম নামে ওই যুবক। তিনি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ভাতার ব্লকের সভাপতির পদে একসময় ছিলেন। এখন যদিও রাজনীতি থেকে সরে গিয়েছেন। ব্যবসা করেন। সন্ধ্যার মুখে দেখা যায় শেখ সাদ্দাম প্রতিবাদীদের সঙ্গে গিয়ে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। ভারত মাতা কী জয়, বাংলাদেশ মুর্দাবাদ স্লোগানও দেন। কিছুক্ষণ আন্দোলনকারীদের সঙ্গ দিয়ে তিনি আবার নিজের কাজে চলে যান।
শেখ সাদ্দাম এমনিতেই মিশুকে বলে পরিচিত। যদিও কিছুদিন আগে তিনি গ্রামেরই কয়েকজনকে মারধর করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। পরিবারের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক সমস্যা রয়েছে শেখ সাদ্দামের। তবে এদিন তাঁর আচরণে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখা যায় নি। বস্তুতপক্ষে বাংলাদেশে সনাতনীদের উপর হামলার ঘটনার জেরে এদেশে মুসলিম সম্প্রদায়কে সেভাবে রাস্তায় নামতে দেখা যায় নি। এই আবহে শেখ সাদ্দামের এই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদের প্রসংশা করেছেন আন্দোলনকারীদের অনেকেই। তবে শেখ সাদ্দাম বলেন,” এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। এটা আমার মানবিক কর্তব্য।”।