এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৯ নভেম্বর : দীর্ঘদিন বাদে খোলোস থেকে বের হয়েই ধর্মান্তরিত গায়ক কবীর সুমনের মুখে শোনা গেল প্রভু শ্রীরাম-কে নিয়ে কুকথা৷ এখানেই শেষ নয়,পাশাপাশি “হিন্দুত্ববাদকে রোখার” বার্তা দিতেও শোনা গেল তাকে । রাজ্য বিজেপির যুবমোর্চার সহ-সভাপতি ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি কবীর সুমনের বক্তব্যের ওই ভিডিও ক্লিপটি এক্স-এ শেয়ার করেছেন । যেখানে কবীর সুমনকে বলতে শোনা যায়,”আমরা আগে রামের সঙ্গে রাম খচ্চর,রাম শয়তান,রাম ছাগল, এইগুলো….এবারে রাম এসে গেল,…..এবং সেটা কেউ একজন কিন্তু করছে না….গ্রামে গ্রামে হনুমান মন্দির কারা করছে ? ফ্যাসিজমকে, হিন্দুত্ববাদকে রুখতে হবে,সোউজা কথা, ওটা তো আমি বলতে পারিনি৷’
প্রতিক্রিয়ায় তরুনজ্যোতি লিখেছেন,’প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ এবং গায়ক কবীর সুমনের বক্তব্য শুনুন এবং একে ঠিক কি বলা উচিত সেটা সাধারন হিন্দুরা ঠিক করুক।’ ওই বিতর্কির গায়কের এহেন মন্তব্যের পর তার মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন নেটিজেনরা । প্রলয় মুখার্জি লিখেছেন,’মানুষটির মানসিক সুস্থতা নিয়ে যথেষ্টই সন্দিহান! “হিন্দুত্ববাদ” নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই; কারণ তার মহত্ব, ঔদার্য্য অথবা ব্যাপ্তি নিয়ে ব্যাখ্যা অপেক্ষা অপব্যখ্যা-ই অধিক প্রচারিত এবং প্রচলিত! তবে “Racism” দ্ব্যর্থহীনভাবেই ঘৃণ্য এবং পরিত্যাজ্য!’ যদিও তার সঙ্গে সহমত হননি গৌতম মিত্র । তিনি লিখেছেন, ‘সুমনের মানসিক সুস্থতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করাটাই মানসিক বিকৃতি। ও অত্যন্ত ধুরন্ধর শয়তান। ওর খেপামির মাধ্যমেই নিজের উদ্দেশ্য সফল করে।’
লোকনাথ চক্রবর্তী লিখেছেন,’শয়তানটা কি রামকৃষ্ণ, রামমোহন, রামপ্রসাদ সব ভুলে মেরে দিয়েছে?’ একজন নেটিজেন লিখেছেন,’এই মিঞাটা বেঁচে আছে জানতাম না। এদের কেন ignore কর না।’।
উল্লেখ্য,৭৬ বর্ষীয় এই গায়কের জন্ম উড়িষ্যার কটকে । তার পূর্বের নাম সুমন চট্টোপাধ্যায়৷ বাবা সুধীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ও মা উমা চট্টাপাধ্যায় ।খুব অল্প বয়সেই বাবার তত্ত্বাবধানে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নেওয়া শুরু করেন। আচার্য কালীপদ দাস ও চিন্ময় লাহিড়ী তাকে খেয়াল শিখিয়েছিলেন। তিনি কলকাতার সেন্ট লরেন্স হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন। পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্সসহ স্নাতক লাভ করেন এবং ফরাসি ভাষা ও জার্মান ভাষায় ডিপ্লোমা করেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করার সময় থেকেই বামপন্থী বিচারধারাকে আদর্শ হিসাবে গ্রহন করে কবীর সুমন ৷ তিনি ২০০৬ সালে বাংলাদেশী সঙ্গীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীনকে বিয়ে করার জন্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং পরে নিজের নাম পরিবর্তন করে ‘কবীর সুমন’ রাখেন। অন্যদিকে সাবিনা ইয়াসমিনের তিন বার বিয়ে । প্রথম বিয়ে হয় আনিসুর রহমানের সঙ্গে । তার সাথে বিচ্ছেদের পর তিনি আমীর হোসেইনকে বিয়ে করেন । কিন্তু সাবিনার দ্বিতীয় বিয়েও বেশিদিন টেকেনি । আমীর হোসেইনের সাথে বিচ্ছেদ হলে কবীর সুমনকে বিয়ে করে । তবে তাদের বিয়েতে ধর্ম প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করলে সুমনই নিজের ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলিম হয়ে যান । ২০০৯ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে দেশের পঞ্চদশ লোকসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন ও জয়লাভ করে সাংসদ নির্বাচিত হন কবীর সুমন ।।

