কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডি জোটের উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হলেন প্রাক্তন বিচারপতি বি. সুদর্শন রেড্ডি । কিন্তু তার অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে বারবার প্রশ্নের মুখে ফেলেছে তাকে । সুদর্শন রেড্ডি শুধু নকশালদের সহানুভূতিশীল নন, বরঞ্চ ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসের প্রতিও সমান সহানুভূতিশীল । এই বিতর্কিত প্রাক্তন বিচারপতির বিষয়ে নতুন তথ্য এখন প্রকাশ্যে আসছে ।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংকে চিঠি লিখে বি. সুদর্শন রেড্ডি অনুরোধ করেছেন, “ইসরায়েল থেকে অস্ত্র কিনবেন না এবং ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি করবেন না।” আদ্যপ্রান্ত উগ্র নকশাল মানসিকতার একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব উপরাষ্ট্রপতির মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে বসলে আদপেই কি দেশের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে ? এই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে । এছাড়া বিচারপতি থাকাকালীন তার কিছু রায় নিয়েও সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছিল । তার মধ্যে অন্যতম হলো ছত্তিশগড়ে সালওয়া জুডুম এবং নকশাল হিংসা মামলা ।
প্রসঙ্গত, যখন ছত্তিশগড়ের গ্রামাঞ্চল নকশাল আক্রমণে জ্বলছিল, তখন সরকার সালওয়া জুডুম নামে একটি স্থানীয় আত্মরক্ষা দল গঠন করে, যারা গ্রামবাসীদের বন্দুক এবং অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ প্রদান করে। এই পদক্ষেপের ইতিবাচক প্রভাব পড়ে ; গ্রামবাসীরা নকশালদের প্রতিরোধ শুরু করে এবং নকশালদের নাশকতা কমতে শুরু করে। উভয় পক্ষেই হতাহতের ঘটনা ঘটে । সরকারের এই উদ্যোগ কিছুটা শান্তি ও নিরাপত্তা পুনরুদ্ধার করে।
কিন্তু নগর নকশাল সমর্থকরা এতে খুশি হননি। তারা সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন দায়ের করেন। একজন বামপন্থী বিচারক তাৎক্ষণিকভাবে সালওয়া জুডুমকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন এবং এটি নিষিদ্ধ করেন । নিষেধাজ্ঞার পর, নকশালরা ফের তাণ্ডব চালাতে শুরু করে৷ বস্তার জেলাকে রক্তাক্ত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করে । একই বিচারক পরে প্রশান্ত ভূষণের আবেদনের ভিত্তিতে রায় দেন , সশস্ত্র বাহিনী মেডিকেল কলেজে শহীদ সৈন্যদের থেকে শিশুদের ভর্তির অগ্রাধিকার বাতিল করতে হবে ।
এখানেই শেষ নয়,অবসর গ্রহণের পর এই বিচারক তেলেঙ্গানা জাতিগত আদমশুমারি কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন, মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য অনগ্রসর শ্রেণীর সুবিধার সুপারিশ করেন এবং বিড়ম্বনার মুখোমুখি হন । সেই বিচারক হলেন বিরোধী দলের উপ-রাষ্ট্রপতি প্রার্থী বি সুদর্শন রেড্ডি। এহেন একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্বকে কংগ্রেসসহ ইন্ডি জোট উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করায় তাদের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ।
প্রসঙ্গত,সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি বালকৃষ্ণ সুদর্শন রেড্ডি ১৯৪৬ সালে তেলেঙ্গানায় জন্মগ্রহণ করেন । তিনি গৌহাটি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ৷ ২০০৭-২০১১ পর্যন্ত তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ছিলেন ৷ প্রথম থেকেই তিনি মাওবাদী ও নকশালী মানসিকতার ছিলেন ৷ তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ হচ্ছে ছত্রিশগড়ে সালওয়া জুডুমকে অবৈধ ঘোষণা করে মাওবাদীদের সুবিধা করে দেওয়া । বারবার তিনি মাওবাদীদের সমর্থন করেছেন । পাশাপাশি তিনি সেনারা শহীদ হলেও তিনি কোন প্রকার সহানুভূতি দেখাননি।।