প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ জুলাই : হোটেল থেকে মদ কিনে খেয়ে আট জনের মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে বর্ধমানে তদন্তে এল ফরেনসিক টিম । দুই সদস্যের ফরেন্সিক টিম বৃহস্পতিবার শহর বর্ধমানের লক্ষ্মীপুর মাঠ ও বড়বাজারের একটি ভাতের হোটেলে তদন্তে যান।লক্ষ্মীপুর মাঠ এলাকার হোটেল মালিক গণেশ পাশোয়ান পুলিশি হেপাজতে থাকলেও বড়বাজারের হোটেলের মালিক ভাতৃদ্বয় চিন্ময় দে ও গৌতম দে নিজেদের হেটেলে বিক্রি করা মদ খেয়ে মারা গিয়েছেন । ফরেনসিক টিমের সঙ্গে ছিলেন বর্ধমান থানার আইসি সুখময় চক্রবর্তী। দুটি হোটেল থেকেই তাঁরা বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন। হোটেলে নমুনা সংগ্রহ করার সময় সেখানে ডিএসপি হেডকোয়ার্টার অতনু ঘোষালও উপস্থিত থাকেন।লক্ষ্মীপুর মাঠ এলাকায় থাকা হোটেলের মালিক গনেশ পাশোয়ানের বাড়িতেও এদিন যান ফরেন্সিক দলের সদস্যরা ।বাড়িতে কেউ না থাকায় তদন্তের প্রয়োজনে তাঁরা দরজার তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে অনুসন্ধান চালান ।
ফরেনসিক টিমের সদস্য ডঃ দেবাশীষ সাহা বলেন,নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষাগারে নমুনা পাঠানো হবে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু এর বেশী কিছু বলতে তিনি অস্বীকার করেন। গণেশ পাশোয়ানের বাড়ির ভিতর থেকে পুলিশ দু’বস্তা মদের বোতল উদ্ধার করে। পাশাপাশি হোটেলের ভিতর থেকেও পুলিশ সিল করা এক প্যাটি সরকারি(ক্যাপ্টেন) মদের বোতল উদ্ধার করেছে । পুলিশ দাবি করেছে,ধৃত গনেশ পাশোয়ান সরকারি দেশি মদে ভেজাল মেশানোর কথা কবুল করেছে। ভেজাল রাসায়নিক উদ্ধারের জন্য এবং ঘটনার বিষয়ে বিশদে জানতে ধৃতকে ৪ দিনের পুলিশি হেপাজতে নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছেন তদন্তকারী অফিসার।
বর্ধমান শহরের বাহিরসর্বমঙ্গলা পাড়ার মৃত হালিম শেখের দাদা হবিবর শেখ বর্ধমান থানায় গনেশ পাশোয়ানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশকে তিনি জানান, গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তাঁর ভাই সহ আরও কয়েকজন গণেশের হোটেলে গিয়ে সরকারি ব্র্যাণ্ডের দেশি মদ খায়। পরেরদিন সন্ধ্যায় সকলেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ও কয়েকটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। রাত ৯টা নাগাদ হালিম মারা যায়। নেশা বাড়ানোর জন্য মদে বিষাক্ত কিছু মেশানো হয়েছিল বলে অভিযোগে জানিয়েছেন হবিবর। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ৩২৮, ২৭২ ও ১২০(বি) ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ গনেশকে গ্রেপ্তার করে।।