এইদিন ওয়েবডেস্ক,মেঘালয়,১০ আগস্ট : শুক্রবার রাতে মেঘালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম খাসি হিলস জেলার খনজয় গ্রামে অনুপ্রবেশ করে লুটপাট ও হামলা চালানো সশস্ত্র বাংলাদেশি পুলিশকর্মীসহ ৫ জন ধরা পরে পড়েছে । ধৃতদের মধ্যে ৪ জনের নাম হল : মাহফুজ রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, মেরুফুর রহমান ও সেম হুসেন। তাদের মধ্যে মেরুফুর রহমানের কাছে বাংলাদেশ পুলিশের পরিচয় পত্র পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, হামলার রাতে খনজয়ের কাছে নিরাপত্তা বাহিনী দুই সন্দেহভাজনকে, রানিকোরে তৃতীয়জন, মাওপিল্লুনে চতুর্থজন এবং পাইরদিওয়ার কাছে সীমান্তবর্তী বনাঞ্চল থেকে পঞ্চমজনকে গ্রেপ্তার করেছে।গ্রেপ্তারের সময়, নিরাপত্তা বাহিনী পিস্তল, চাপাতি, হাতকড়া, বাংলাদেশি মুদ্রা, তার কাটার যন্ত্র, মুখোশ, রেডিও, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, ব্যাগ, পোশাক এবং মারুফুর রহমানের একটি পরিচয়পত্র জব্দ করেছে, যিনি একজন বাংলাদেশ পুলিশ কর্মকর্তা বলে জানা গেছে।
জানা গেছে,শনিবার( ৯ আগস্ট), বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে মেঘালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম খাসি পাহাড় জেলায় নংজরি-নংহিল্লাম সেক্টরে অবস্থিত খনজয় গ্রামে রাতের অন্ধকারের সুযোগে প্রায় নয়জন সশস্ত্র বাংলাদেশি অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে।অনুপ্রবেশকারীদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র সহ বিভিন্ন ধারাল অস্ত্র ছিল। ওই দলটিকে বাধা দিলে বালসরাং এ. মারাককে (Balsrang A. Marak) নামে স্থানীয় এক বাসিন্দাকে ছুরিকাঘাত করে । হামলার পর, দলটি পালিয়ে যায় কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশে ফিরে যায়নি।দক্ষিণ-পশ্চিম খাসি পাহাড়ের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট বানরাপ্লাং জিরওয়া বলেন, ‘সশস্ত্র ব্যক্তিরা স্থানীয় এক গ্রামবাসীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে এবং বেড়াবিহীন সীমান্তের দিকে পালিয়ে যায়। গ্রামবাসীরা নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছিল। তারা কেবল সতর্ক করেই নয়, আক্রমণকারীদের একজনকে শারীরিকভাবে আটকও করেছে ।’
মেঘালয় সীমান্তের তত্ত্বাবধানকারী বিএসএফের ইন্সপেক্টর জেনারেল ও.পি. উপাধ্যায় জানিয়েছেন, সীমান্তবর্তী ঘন বনাঞ্চলে চলমান চিরুনি অভিযানের সময় নিরাপত্তা বাহিনী সর্বশেষ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আমাদের অভিযান বিএসএফ, স্থানীয় পুলিশ এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে দৃঢ় সমন্বয়ের প্রতিফলন ঘটায়। সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের সৈন্যরা বনাঞ্চলে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে । আমরা টহল বৃদ্ধি করেছি, তবে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিরক্ষার প্রথম সারিতে রয়েছে।’
খনজয়ের একজন বাসিন্দা সীমান্তে অনুপ্রবেশকারীদের অপরাধের বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন,’এই ঘটনার পর আমরা ভীত সন্ত্রস্ত রয়েছি। সরকারকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’ মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কে. সাংমা সম্প্রতি বলেছিলেন যে মেঘালয়ের বাংলাদেশের সাথে সীমান্তের প্রায় ৪০-৪৫ কিলোমিটার এখনও বেড়াবিহীন, যার ফলে এই ধরনের অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে ।।