এইদিন ওয়েবডেস্ক,শিলিগুড়ি,১৫ ডিসেম্বর : ‘আল্লাহর মেহেরবানিতে ভারতে মুসলিম একদিন সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে’…কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের এই মন্তব্যের জের এখনো চলছে । বিষয়টি নিয়ে সিপিএম এবং কংগ্রেস মুখে কুলুপ এঁটে থাকলেও বিজেপি ক্রমাগত হিন্দুদেরকে সতর্ক করে যাচ্ছে। আজ রবিবার শিলিগুড়িতে এই বিষয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার মন্তব্য করেছেন, ‘ফিরহাদ হাকিম-সিদ্দিকুল্লা-হুমায়ূন কবিরের লক্ষ্য গজবায়ে হিন্দ, আর তা হলে আগে ব্যানার্জি পরিবারকে লাথি মেরে সিংহাসন থেকে তাড়াবে ।’
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ শিলিগুড়ির কাওয়াখালি ময়দানে “লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ” অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন ভারত সরকারের উত্তর-পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন ও শিক্ষা মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি ডঃ সুকান্ত মজুমদার,সাংসদ রাজু বিস্তসহ অন্যান্য বিজেপি সাংসদ ও বিধায়কগণ । অনুষ্ঠান শেষে ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন,’ফিরহাদ হাকিম সাহেব অত্যন্ত স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন যে এই বাংলায় বাঙালি হিন্দুর ভবিষ্যৎ কি । সুতরাং এ রাজ্যের বাঙালি অবাঙালি হিন্দুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে হবে । ফিরহাদ হাকিম সাহেব যা বক্তব্য রেখেছেন তাতে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম সমাজের নেতৃত্ব…তা ফিরহাদ হাকিম সাহেব হোক, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী হোক বা মুর্শিদাবাদের বাবরি মসজিদ তৈরি করতে যাওয়া হুমায়ুন কবির হোক, সবার লক্ষ্যই যে এক সেটা পরিষ্কার হয়ে গেছে৷ এবার হিন্দুদেরকে ঠিক করতে হবে যে তারা বাংলাদেশের মতো মার খাবেন, মন্দির জ্বালাতে দেবেন, মেয়েদের ইজ্জত লুটতে দেবেন নাকি লড়াই করবেন এবং সেই সরকারকে পরাস্ত করবেন যে সরকার পরোক্ষভাবে ফিরহাদ হাকিম, হুমায়ুন কোবির বা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর এজেন্ডাকে চালাতে দিচ্ছে ।’
তিনি বলেন,’এদের এজেন্টা পরিষ্কার। সিপিএমের সময়ে সিপিএমকে ব্যবহার করেছে । তৃণমূলের সময়ে তৃণমূলকে ব্যবহার করছে । অন্য যেকোনো তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ পার্টি হলে তাদের ব্যবহার করবে এবং যেমন করে হোক গজবায়ে হিন্দ করবে । গজবায়ে হিন্দ মানে হচ্ছে গোটা ভারতবর্ষকে ইসলামের রূপান্তরিত করা । এতদিন পর্যন্ত সেটা পারেনি । আগামী দিনেও যে পারবে না সেটা আমার বিশ্বাস । হিন্দু সময় লড়াই করে ঠিক লড়ে নেবে । কিন্তু হিন্দুদেরকে একত্রিত হতে হবে এবং রাজনৈতিকভাবে একত্রিত হতে হবে । লক্ষীর ভান্ডারে মোহে আমরা যদি আজ মমতা ব্যানার্জিকে ক্ষমতায় রাখি তাহলে আগামী দিনে বাংলাদেশের মতোই ধর্ষণ হরে হবে এই জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো কাছে ।’
আবাস যোজনায় অনিয়মের অভিযোগে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা মতামত জানতে চাইলে সুকান্ত মজুমদার বলেন,’আবাস যোজনার ঘর নিয়ে কি হবে ? বাংলাদেশের মতো দুদিন পর যদি পুড়িয়ে দেয় ? সেটা সবার আগে ভাবুন । নিরাপত্তাটা আগে জরুরী । আমাদেরও তো বাংলাদেশে জমি ছিল৷ কারোর পুকুর ছিল, তালগাছ ছিল বাংলাদেশে । এখন জামও খেতে পারেন না তালও খেতে পারেন না । তার কারণ ওখান থেকে পালিয়ে আসতে হয়েছে । কালকে বেলডাঙায় যে ঘটনা ঘটেছে সেই ঘটনা যদি আপনার সঙ্গে ঘটে তাহলে আমার চারতলা বাড়ি থেকেই বা কি হবে ?’
তিনি বলেন, ‘ফিরহাদ হাকিমরা লক্ষ্য রেখেছেন যে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হবেন,আর তা সত্যি হলে ব্যানার্জি পরিবারকেই লাথি মেরে পশ্চিমবঙ্গের সিংহাসন থেকে নামিয়ে দেবে । তখন আর মমতা ব্যানার্জি মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবেন না । তখন অভিষেক ব্যানার্জি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারবেন না । তখন জনাব ফিরহাদ হাকিম সাহেব , জনাব সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, জনাব হুমায়ুন কবিরের মধ্যে কেউ সিংহাসনে বসবে ।’ বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন নিয়ে নয়াদিল্লি কি পদক্ষেপ নিচ্ছে তা জানতে চাইলে সুকান্ত মজুমদার জানান যে কেন্দ্র সরকার যা পদক্ষেপ নেওয়ার তা তলায় তলায় ঠিকই নিচ্ছে । জোয়ার ভাটার সময় সূর্য চন্দ্র ঠিক কতটা পরিমাণ জলকে আকর্ষণ করে তা যেমন দেখা যায় না এক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে বলে জানান তিনি । পাশাপাশি তিনি আশ্বস্ত করেন,’অপেক্ষা করুন জোয়ার ভাটা ঠিক হবে।’।