এইদিন ওয়েবডেস্ক,জয়সলমীর,১৪ অক্টোবর : রাজস্থানের জয়পুরের এসএমএস হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আটজন নিহত হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহ পর, এবারে জয়সলমীর থেকে যোধপুরগামী একটি বেসরকারি যাত্রীবাহী বাসে আগুন লেগে জীবন্ত দগ্ধ হয়ে অন্তত ২০ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে । তাদের মধ্যে ৪ নারী ও ৩ শিশু রয়েছে । ১৬ জন যাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক ।
মঙ্গলবার বিকেলে জয়সলমীর থেকে যোধপুরগামী একটি বাসে থাইয়াত গ্রামের কাছে আগুন লেগে যায়। বাসটিতে ৫৭ জন যাত্রী ছিল । তার মধ্যে ৩ শিশু এবং ৪ মহিলা সহ ২০ জন যাত্রী দগ্ধ হয়ে মারা যায় । আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি,তবে মনে করা হচ্ছে গাড়ির ভেতরে শর্ট সার্কিটের কারণে আগুন লেগেছে। প্রশাসনের কর্মকর্তারা এবং একটি কারিগরি দল বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছেন।
পোখরানের বিজেপি বিধায়ক প্রতাপ পুরী পিটিআইকে ২০ জন যাত্রীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বাসের মধ্যেই ১৯ জন যাত্রী জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন এবং যোধপুর যাওয়ার পথে একজন মারা গেছেন।
যেহেতু ঘটনাটি একটি সেনা এলাকার কাছে ঘটেছিল, তাই সেনা সদস্যরা প্রথমে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন । আহতদের প্রথমে সেনা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং পরে জয়সলমীরে স্থানান্তরিত করা হয়। গুরুতর অবস্থায় থাকা ব্যক্তিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য যোধপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে জয়সলমীরের জওহর হাসপাতালের বাইরে বিশাল ভিড় জমে যায় এবং জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
ঘটনার খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা যোধপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের সাথে দেখা করেন এবং তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন। তিনি আহতদের যথাযথ চিকিৎসা প্রদানের জন্য চিকিৎসকদের নির্দেশ দেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন।মুখ্যমন্ত্রী শর্মা বলেছেন,’জয়সলমীরে বাসে আগুন লাগার ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি আমি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের যথাযথ চিকিৎসা এবং নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ।’
নগর পরিষদের সহকারী দমকল কর্মকর্তা কৃষ্ণপাল সিং রাঠোর বলেন, দমকল বাহিনী যখন পৌঁছায়, ততক্ষণে বাসটি সম্পূর্ণরূপে আগুনে পুড়ে যায়।জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রতাপ সিং জানিয়েছেন যে ষোলজন আহত যাত্রীকে যোধপুরে পাঠানো হয়েছে। নিহতদের মৃতদেহ এখনও বাসের ভেতরেই রয়েছে এবং তীব্র উত্তাপের কারণে তাদের উদ্ধারের প্রচেষ্টা বিলম্বিত হচ্ছে। তদন্তে সহায়তা করার জন্য যোধপুর থেকে একটি ফরেনসিক দলকে ডাকা হয়েছে।
জয়সলমীর বাস অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন। রাজস্থানের জয়সলমীরে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়েছে। তিনি এক্স-এ লিখেছেন, ‘এই কঠিন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এবং তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা। তিনি বলেছেন যে তিনি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল (PMNRF) থেকে নিহতদের প্রত্যেকের নিকটাত্মীয়কে ২ লক্ষ টাকা এবং দগ্ধদের ৫০,০০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।।

