এইদিন ওয়েবডেস্ক,বেঙ্গালুরু,: লোকসভার বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী এবং তার মা,কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি সোনিয়া সম্পর্কে মিথ্যা খবর এবং ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে বেঙ্গালুরু পুলিশ একজন বাংলাদেশি সাংবাদিক এবং একটি ভারতীয় নিউজ পোর্টাল ব্লিজের(BLiTZ) একজন মহিলা স্টাফ সদস্যের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করেছে।
ব্লিটেজের সম্পাদক সালাহ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী এবং অদিতির বিরুদ্ধে হাইগ্রাউন্ডস থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে । এদিকে এফআইআর দায়েরের পরেও নিজের দাবিতে অনড় আছেন সালাহ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী । তিনি বলেছেন, ‘ভয় দেখিয়ে ব্লিটজের মুখ বন্ধ করা যাবে না ।’ পাশাপাশি তিনি চ্যালেঞ্জ করেছেন,’এফআইআর দায়ের করে আপনি নিজেই প্যান্ডোরা বক্স খুলেছেন ।’
জানা গেছে, কর্ণাটক প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির (কেপিসিসি) সাথে যুক্ত শ্রীনিবাস জি, একজন বাংলাদেশী সাংবাদিক তার এক্স হ্যান্ডেলে সোনিয়া গান্ধীকে পাকিস্তান গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সাথে সম্পর্ক নিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গান্ধী পরিবারের সম্মান ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে চৌধুরী এই কাজ করেছেন এবং দুই ধর্মের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য সাংবাদিক এই ধরনের পোস্ট শেয়ার করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি । মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী বেঙ্গালুরুর হাইগ্রাউন্ডস থানার একজন সিনিয়র পুলিশ অফিসার বলেছেন,’আমরা যে অভিযোগ পেয়েছি তার ভিত্তিতে, আমরা গান্ধী পরিবার সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে দুজনের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছি। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৯৬ ধারায় একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে (ধর্ম, বর্ণের ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা প্রচার করা) ।’
এদিকে এফ আই আর দায়েরের পর ব্লিটিজের সম্পাদক সালাহ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী টুইট করেছেন,
‘হ্যালো রাউল ভিঞ্চি এবং শ্রদ্ধেয় হেডভিজ আন্তোনিয়া আলবিনা মাইনো! আপনি সম্ভবত সাপ্তাহিক ব্লিটজ-এর সততা এবং পেশাদারিত্বকে ব্যাপকভাবে ক্ষুন্ন করেছেন। আপনার সদয় তথ্যের জন্য, এটি একটি খাম বা অনুগ্রহ-সন্ধানী সংবাদপত্র নয়। এটি একটি ২১ বছরের পুরনো সংবাদপত্র যার সুনাম রয়েছে ।বেঙ্গালুরু পুলিশের কাছে দায়ের করা “এফআইআর”-এ, আপনার দলের প্রতিনিধি শ্রীনিবাস জি দাবি করেছেন, আমরা আপনার অন্য নাম ব্যবহার করে বলেছি আপনি আইএসআইয়ের সম্পদ। এখানে আমরা আবারও সাহস করে বলতে চাই- হেডভিজ আন্তোনিয়া আলবিনা মাইনো পাকিস্তানি আইএসআই-এর সম্পদ । শ্রীনিবাস আরও বলেন, আন্তঃধর্মীয় বিয়ে হওয়া সত্ত্বেও আপনি “এখনও” খ্রিস্টান ধর্মকে অনুসরণ করেন। এর মানে কি, দয়া করে বলবেন ? আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, আপনার বিয়ে হয়েছে আন্তঃধর্মীয় বিবাহ আইনের অধীনে এবং আপনি এখনও একজন ক্যাথলিক খ্রিস্টান। আমরা এখনও দৃঢ়ভাবে বলি – আপনি আপনার আসল নাম ব্যবহার করে ভারতীয় নাগরিকত্ব নিয়েছেন – আন্তোনিয়া আলবিনা মাইনো । মিস্টার শ্রীনিবাস আরও দাবি করেছেন, আমাদের প্রতিবেদনে আমরা বলেছি, রাউল ভিঞ্চি তার বিদেশী বন্ধুদের সাথে এক মহিলা [সুকন্যা দেবী]কে যৌন হয়রানি করেছেন। মিঃ শ্রীনিবাস আপনার জৈবিক পিতার পরিচয়, যুক্তরাজ্যে আপনার কাজের ইতিহাস, আপনার শিক্ষার মিথ্যা দাবি, ফ্রাঙ্কো লুইসনের সাথে আপনার রোমান্টিক সম্পর্ক, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাউল ভিঞ্চির প্রশ্নবিদ্ধ একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড, তার অনথিভুক্ত স্ত্রী এবং দুইজন সন্তান, প্রিন্সেস নোয়াল জাহের ইত্যাদির সাথে তার রোমান্টিক সম্পর্ক সম্পর্কে কিছু বলেননি ।
যদি আপনার সাহস থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে পুরো বিষয়টি নিয়ে আসুন – শুধুমাত্র এটির অংশ নয় এবং সবকিছুর আগে, অনুগ্রহ করে স্বীকার করুন – আপনি প্রকৃতপক্ষে হেডভিগে আন্তোনিয়া আলবিনা মাইনো।
আমি সেই সাংবাদিক নই বা ব্লিটিজ সেই সংবাদপত্র নয় যাকে কোনো ভয়ঙ্কর ভয়ভীতিমূলক কৌশলের মাধ্যমে চুপ করা যায়। পরিবর্তে, “এফআইআর” দায়ের করে আপনি নিজেই প্যান্ডোরা বক্স খুলেছেন ।’
অন্য আর একটা টুইটে তিনি লিখেছেন,’ আমি এখন কোথায় আছি ? ভারতীয় মিডিয়ার একাংশের দাবি, বেঙ্গালুরু পুলিশ আমাকে ‘বুক’ করেছে। মানে আমি তাদের হেফাজতে আছি। তারা আমাকে এখনো আদালতে পেশ করেনি কেন ? নাকি, তারা শেষ পর্যন্ত বলবেন- সালাহ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী নামে কেউ নেই, যেমনটি সুকন্যা দেবীকে নিয়ে অতীতে রাজনৈতিক দল বলেছে? দয়া করে আমাকে ভয় দেখানোর ভুল কৌশল ব্যবহার করা বন্ধ করুন। সত্য প্রকাশের “অপরাধের” জন্য আমি আমার নিজের দেশে অনেক কঠোর আইনি লড়াইয়ের মুখোমুখি হয়েছি । শুধু স্বীকার করুন – অ্যান্টোনিয়া আলবিনা মাইনো সেই একই ব্যক্তি যাকে আপনি একটি রাজনৈতিক দলের নেতা হিসাবে উল্লেখ করছেন। এর পরে, প্রমাণ প্রকাশ করা আমার কাজ হবে।’।