এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,২৬ জুন : অবশেষে রাষ্ট্রীয়ভাবে ভেঙে দেওয়া হল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দির । বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগের ডেপুটি কমিশনার ও বিভাগীয় এস্টেট অফিসার মোঃ নাসির উদ্দিন মাহমুদের দ্বারা বুধবার(২৪ জুন ২০২৫) জারি করা নির্দেশের ভিত্তিতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ভেঙে দেওয়া হল ঢাকার দূর্গা মন্দিরটি । সেই সময় অসহায় সংখ্যালঘু হিন্দু মহিলা ও পুরুষদের কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় । সকালেই ঢাকার পূর্বাচল আর্মিক্যাম্প থেকে বিশাল সেনা ও পুলিশ বুলডোজার নিয়ে উপস্থিত হয়েছিল খিলক্ষেত সার্বজনীন দূর্গা মন্দির প্রাঙ্গনে । মহিলা ও পুরুষরা মন্দিরের সামনে বসে পড়ে তাদের প্রতিবাদ জানান । কিন্তু সেনাকর্মীরা তাদের তুলে দিয়ে মন্দিরে বুলডোজার চালায় । সেই সময় ভিডিও করতে গিয়ে হিন্দুদের বাধার মুখে পড়তে হয় । দেখুন ভিডিও 👇
ঢাকার খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দিরটি ছিল করগেট দিয়ে নির্মিত । দীর্ঘ অর্ধ শতাব্দীর অধিক সময় ধরে সেখানে প্রতি বছর শারদ্যোৎসব পালন হয়ে আসছিল । ছিল দেবী কালির স্বায়ী প্রতিমাও । নিয়মিত দেবীর নিত্যসেবা হয়ে আসছে । স্থানীয় হিন্দুদের আবেগের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এই জরাজীর্ণ মন্দিরটি । কিন্তু গত ২৪ জুন রাতে খিলক্ষেত বাজারের ইসলামিয়া সুইট এন্ড লাইভ বেকারির কর্ণধার মুফতি মাহমুদুল হাসান ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন খিলখেত থানার সভাপতি আব্দুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে মন্দিরে হামলা চালায় মুসলিম জনতা । ভাঙচুরের চেষ্টার পাশাপাশি তারা মন্দির ভেঙে ফেলার জন্য পরের দিন দুপুর ১২ টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়ে যায় । মন্দিরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করার চেষ্টা করে এবং উপস্থিত ভক্তদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দেয়।
মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র দাস বলেন, “তারা কোনো কথা শোনার আগেই মন্দিরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। তারা চিৎকার করে বলছিল, এই মন্দির এখানে থাকতে পারবে না এবং কাল ১২টার মধ্যে আমরা নিজেরাই এটা ভেঙে ফেলব। আমরা এই ঘটনায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
এদিকে হামলার পরের দিন খিলক্ষেত সার্বজনীন দূর্গা মন্দির প্রাঙ্গনে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন হিন্দু মহাজোটসহ অন্যান্য সনাতনী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ হিন্দু সম্পদায়ের লোকজন । তারা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার অনুরোধ করেন। কিন্তু আজ রাষ্ট্রীয়ভাবে মন্দিরটি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয় ।
মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের রেলবিভাগের তরফে বলা হয়েছে,১৯৭০ সনের ২৪ নং অধ্যাদেশের ৫(১) ও ৫(২) নং অনুচ্ছেদের প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রেলওয়ে ভূমি হতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের জন্য কুড়িল বিশ্বরোড মোড় হইতে ফিলক্ষেত বাজার এলাকায় বাংলাদেশ রেলওয়ের ভূমি থেকে অবৈধ স্থাপনা ও দখলদার উচ্ছেদ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হয়েছে ।।