এইদিন বিনোদন ডেস্ক,২১ ফেব্রুয়ারী : বর্তমানে বক্স অফিসে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে হিন্দি চলচিত্র “রাভা”৷ সম্পূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে এই ছবি । ছবিতে মুঘল হানাদার আওরঙ্গজেবকে খলনায়ক হিসাবে চিত্রিত করা হয়েছে । কিন্তু চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং লেখক আব্বাস টায়ারওয়ালা মনে করছেন যে বর্তমান সময়ে মুসলিমদের খলনায়ক হিসাবে দেখানোর প্রবণতা বেড়ে গেছে ৷ এই বিষয়ে তিনি একটি বিবৃতি দিয়েছেন । আব্বাস টায়েরওয়ালা বলেন, এখন চলচ্চিত্রের এই মনোভাব দেখে তিনি লজ্জিত বোধ করছেন।
আব্বাস ‘জানে তু ইয়া জানে না’-এর মতো হিট ছবি পরিচালনা করেছেন এবং ‘ওয়ার’, ‘২.০’ এবং ‘পাঠান’-এর মতো ছবির সংলাপ লিখেছেন। হিন্দি মিডিয়া আউটলেট লালানটপের সাথে কথা বলার সময় তিনি বলেছেন, আগের সিনেমাগুলো স্বতন্ত্র চলচ্চিত্র নির্মাতারা তৈরি করতেন এবং তাদের সাথে কাজ করার সময়, সিনেমার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বা খলনায়কের চরিত্র তাকে বিরক্ত করত না। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে তিনি একজন ভারতীয় মুসলিম বলে নয়, বরং একজন লেখকের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি বলছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে বারবার মুসলিম খলনায়ক দেখানো এখন পুরনো এবং বিরক্তিকর হয়ে উঠেছে।
প্রসঙ্গত,এর আগে বলিউডের ছবিতে ভিলেনের ভুমিকায় কোনো সাধুসন্ত বা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হিন্দু ব্যক্তিদের ভিলেন হিসাবে দেখানো হত বলে অভিযোগ ওঠে৷ কিন্তু এই প্রবণতা বন্ধ হয়ে যায় কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসার পর থেকেই । “দ্য কেরালা স্টোরি” এবং “কাশ্মীর ফাইলস”-এর মত সত্য ঘটনা অবলম্বনে রচিত যে সিনেমা তৈরি করার সাহস পরিচালকরা কংগ্রেসের শাসনকালে দেখাতে পারত না,নরেন্দ্র মোদী আসার পর সেই সমস্ত ছবি নির্মিত হয়েছে এবং বক্স অফিসে ব্যাপক সফলও হয়েছে । তবে এই সমস্ত ছবি বলিউড ও রাজনৈতিক মহলের অনেকের আঁতে ঘা দিয়েছে । আব্বাস টায়ারওয়ালা কি এই প্রবণতাকেই ‘জীর্ণ ধারণা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন ?
আব্বাস বর্তমানে পবন কল্যাণের তেলেগু পিরিয়ড ড্রামা ‘হরি হারা ভিরা মাল্লু’-এর হিন্দি সংলাপগুলিতে কাজ করছেন। এই ছবিতেও মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবকে খলনায়ক হিসেবে দেখানো হয়েছে। সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত হিন্দি ছবি ‘ছাভা’-তেও আওরঙ্গজেব খলনায়ক ছিলেন। আব্বাস বলেন, আওরঙ্গজেবকে খলনায়ক হিসেবে দেখানোর একটা গুরুত্ব আছে কারণ ইতিহাসে তার সত্যতা অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু চলচ্চিত্রের জন্য এই সত্য অতিরঞ্জিত। তিনি বলেন, যা ঘটেছে,তা ঘটে গেছে, তা অস্বীকার করা যাবে না।
আব্বাস ২০০১ সালে ‘লাভ কে লিয়ে কুছ ভি করেগা’ গানের মাধ্যমে একজন গীতিকার হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর ‘দম’ এবং ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’-এর মতো ছবিতে তার গানগুলি হিট হয়। ২০০৮ সালে, তিনি ‘জানে তু ইয়া জানে না’ দিয়ে পরিচালনায় প্রবেশ করেন, যা সুপারহিট হয়েছিল। এর পর তিনি ‘ঝুঠা হি সহি’ পরিচালনা করেন। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, তিনি একজন চিত্রনাট্যকার হয়ে ওঠেন এবং ‘ব্যাং ব্যাং’, ‘ওয়ার’, ‘২.০’ এবং ‘পাঠান’-এর মতো বড় বড় ছবির সংলাপ লিখেছিলেন।।