এইদিন ওয়েব ডেস্ক,কলকাতা,১৫ নভেম্বর ঃ দীর্ঘ ৪০ দিন লড়াইয়ের পর অবশেষে নোবেল করোনা ভাইরসের কাছে হার মানলেন বাংলা চলচিত্র জগতের প্রবাদ প্রতিম অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় । রবিবার বেলা ১২.১৫ নাগাদ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয় । মৃত্যু কালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর । তাঁর প্রয়ানে সংস্কৃতি জগতে নেমে আসে শোকের ছায়া । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর শোক বার্তায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পরিবার,পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন ।
ছয় দশকের দীর্ঘ অভিনয় জীবনে ২০০ টির মত চলচিত্রে অভিনয় করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় । এছাড়া টেলিভিশন ও নাটকে অভিনয় করে তিনি বাঙালীর মনের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন ৷
গত ৬ অক্টোবর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কোভিড-১৯ টেস্টে পজিটিভ রিপোর্ট ধরা পড়ে । তারপর তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । পরে রক্ত পরীক্ষায় কোভিড নেগেটিভ হলেও তাঁর কোভিড-১৯ এনসেলোপ্যাথি সংক্রমন শুরু হয় । যার ফলে তাঁর মাল্টি অর্গান ফেলিওর হয়। শেষ পর্যন্ত তাঁর মৃত্যু হয় ।
বিশ্ববরেন্য চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের অপুর সংসারে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পেশাগত জীবনে অভিনয় প্রতিভার স্ফুরন ঘটে । এছাড়া চারুলতা,সোনার কেল্লা, দেবী, অরন্যের দিনরাত্রি কাপুরুষ,অশনি সংকেতসহ অসংখ্য চলচিত্রে বৈচিত্রময় চরিত্রে অভিনয় করে তিনি মুন্সীয়ানা দেখান । তিনি তপন সিনহা,মৃনাল সেনের মত চিত্র পরিচালকদের চলচিত্রেও অভিনয় করেছেন । তাঁর কালজয়ী চলচিত্রের মধ্যে রয়েছে তিন ভুবনের পাড়ে,আকাশ কুসুম,আতঙ্ক,ঝিন্দের বন্দী।
অনন্য প্রতিভার স্বীকৃতি স্বরূপ ৫৯ তম জাতীয় চলচিত্র পুরষ্কার এর সর্বোচ্চ পুরষ্কার দাদা সাহেব ফালকে পুরষ্কার পান সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় । এছাড়া ১৯৯১ সালে ‘অন্তর্ধান’, ২০০০ সালে ‘দেখা’ ও ২০০৭ সালে ‘পদক্ষেপ’-এ অভিনয়ের জন্য তিনি জাতীয় চলচিত্র পুরষ্কার পান। ২০০৪ সালে তিনি পদ্মভুষন সম্মানে ভুষিত হন । ১৯৯৮ সালে সঙ্গীত নাটক একাডেমি পুরষ্কার পান সৌমিত্রবাবু ৷ কিংবদন্তী এই অভিনেতাকে ফরাসি সরকার ‘অদ্রেঁ দেজ আর্টস এট দেজ লেট্রেস’ ও ‘লিজিয়ন অফ অনার সম্মানে ভুষিত করে । তাঁকে শেষ বারের মত অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল ‘সাঁঝের বাতি’ চলচিত্রে ।।