জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,পশ্চিম বর্ধমান,১৫ জানুয়ারী : ডিভিসির জায়গা জবরদখল করে ব্যবসা করছিল বেশ কিছু হকার । জায়গা খালি করে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের তরফে নোটিশ করে দু’দিন সময় দেওয়া হয়েছিল । এদিকে উচ্ছেদ না করার আবেদন জানাতে কর্তৃপক্ষের অফিসের সামনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিল হকাররা । আর তখনই কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী (সিআইএসএফ) ও হকারদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বেধে গেল পশ্চিম বর্ধমানের মাইথনে । সংঘর্ষের জেরে সিআইএসএফ জওয়ানসহ বেশ কয়েকজন হকার গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা গেছে । হকারদের অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় তাদের উপর লাঠিচার্জ করেছে সিআইএসএফ । ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পালটা পাথরবাজির অভিযোগ তুলেছে হকাররা ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডিভিসির মাইথন প্রশাসনিক ভবনের সামনে দীর্ঘদিন ধরে কিছু স্থানীয় মানুষ দোকানপাট চালাচ্ছিলেন । মূলত সেই উপার্জনেই তাদের সংসার চলে । সম্প্রতি জবরদখল উচ্ছেদে সচেষ্ট হয় ডিভিসি কর্তৃপক্ষ । জায়গা খালি করে দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের নোটিশ করে দু’দিন সময় দেওয়া হয় । এদিকে বিষয়টি মানবিকভাবে দেখার জন্য ডিভিসির কাছে আবেদন জানান ব্যবসায়ীরা । কিন্তু কর্তৃপক্ষের তরফে কোনো সদুত্তর মেলেনি বলে অভিযোগ ।
জানা গেছে,আজ বৃহস্পতিবার সকালে নিরসা বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক অরূপ চ্যাটার্জ্জীর নেতৃত্বে ব্যবসায়ীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে এনিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিল । সেই সময় সিআইএসএফ জওয়ানদের সাথে তাদের বচসা বাধে । আর তার মাঝেই দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল বেধে যায় । সিআইএসএফ ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করতে এলোপাথাড়ি লাঠিচার্জ করে । পালটা সিআইএসএফকে লক্ষ্য করে পাথরবাজি শুরু করে হকাররা । এই ঘটনায় কার্যত রণক্ষেত্রের চেহেরা নেয় গোটা এলাকা ।
জানা গেছে,সিআইএসএফ-এর লাঠির আঘাতে গুরুতর আহত হন ৬ বিক্ষোভকারী । অন্যদিকে হকারদের ছোড়া পাথরে জখম হন কয়েকজন জওয়ান । আহতদের মধ্যে কয়েকজনের মাথা ফেটে যায় বলে জানা গেছে । তাদের প্রত্যেককে চিকিৎসার জন্য ডিভিসির বিপি নিয়োগি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অরূপবাবু বলেন,’দীর্ঘদিন ধরে এইসব গরীব মানুষগুলো এখানে দোকান করে আসছে। এখন তাদের উচ্ছেদ করে দিলে ওরা যাবে কোথায়, খাবেই বা কী ? সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা ডিভিসি কর্তৃপক্ষের কাছে গত একমাস ধরে আবেদন করে চলেছি। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার জন্য বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হলে আমাদের উপর অমানবিক ভাবে লাঠি চার্জ করা হয়।’ অন্যদিকে সিসিআইএসএফ এর পক্ষ থেকে বিনয় কাজিলা বলেন,’কোনোরকম প্ররোচনা ছাড়াই বিক্ষোভকারীরা আমাদের জওয়ানদের উপর পাথর ছুড়তে শুরু করলে তারা লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয় ।’।