এইদিন ওয়েবডেস্ক,লাহোর,০১ ফেব্রুয়ারী : পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু ও খ্রিস্টানরা প্রতিনিয়ত বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করতে হয় । সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলিমদের দ্বারা খুন,অপহরণ,ধর্ষণ, ঘরবাড়ি,দোকান ভাঙচুর ও লুটপাটের আশঙ্কায় দিনযাপন করতে হয় তাদের । অত্যাচারিত হয়েও ন্যায় বিচার পায়না ওই দুই কট্টর ইসলামি রাষ্ট্রের সংখ্যালঘুরা । দিন কয়েক আগে বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার বারোয়ারি বটতলা এলাকায় একটি হিন্দু পরিবারের তিন সদস্যকে নির্মমভাবে জবাই করে খুনের ঘটনা ঘটেছে । এখনো ঘাতকদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ ।
অন্যদিকে পাকিস্তানে মুসলিম সহকর্মীর নির্মমভাবে মারধরের কারনে এক অন্তঃসত্ত্বা খ্রিস্টান বধূর গর্ভেই মৃত্যু হল ভ্রুণের । বধূর স্বামী থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে পুলিশ কোনো অভিযোগই দায়ের করেনি,উলটে ওই দরিদ্র অসহায় পরিবারটিকে পুলিশের হয়রানির শিকার হতে হয় । পাঞ্জাব প্রদেশের কাসুর জেলার ক্লারাকাবাদ গ্রামের ঘটনা । গ্রামের কাছে একটি ইটের ভাটায় শ্রমিকের কাজ করতেন ওই খ্রিস্টান বধূ ও তার স্বামী । ভাটার পাশেই একটা ঘরে তারা পরিবার নিয়ে থাকতেন । রাখিল নাদিম মসিহ নামে ওই মহিলা আট মাসের গর্ভবতী ছিলেন ।
ঘটনা প্রসঙ্গে মহিলার স্বামী নাদিম মসিহ জানান, ঘটনার দিন তার স্ত্রী কোয়ার্টার থেকে কিছু আবর্জনা ফেলার জন্য বের হয়েছিলেন । সেই সময় তিনি দেখতে পান যে সহকর্মী চাঁদ মহম্মদ তার ফোন দিয়ে রাখিলের ছবি তুলছে । রাখিল নাদিম চাঁদকে ধমক দিয়ে তার কোয়ার্টারে ফিরে যান । কিন্তু চাঁদও তার পিছু পিছু ভিতরে ঢুকে তার ওপর হামলা চালায় ।
ক্রিশ্চিয়ান ডেইলি ইন্টারন্যাশনাল-মর্নিং স্টার নিউজকে মসিহ বলেন,’রাখিল তাকে এবং তার অনাগত সন্তানকে বাঁচানোর জন্য বারবার চাঁদ মহম্মদকে তাকে ছেড়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল, কিন্তু সে শোনেনি। আমি তখন ভাটায় কাজ করছিলাম যখন আমি আমার স্ত্রী ও সন্তানদের চিৎকার শুনতে পেলাম। আমি আমার কোয়ার্টারের দিকে দৌড়ে গেলাম,ঘরে গিয়ে আমি দেখলাম চাঁদ ঘুষি ও লাথি মারছে রাখিলকে, আমার স্ত্রী মেঝেতে পড়ে আছে এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে তার । সেই অবস্থাতেই চাঁদ মহম্মদ আমার স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করছিল । কিন্তু আমায় দেখতে পেয়ে সে পালিয়ে যায় ।’
প্রতিবেদন অনুযায়ী,মাসিহ তার স্ত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় । তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন যে মারধরের কারণে গর্ভস্থ শিশুর মৃত্যু হয়েছে । কিন্তু হাসপাতালে যাওয়ার আগেই ইট ভাটার মুসলিম মালিক চৌধুরী আব্দুল রেহমান চিকিৎসককে ফোন করে মেডিকেল রিপোর্টে স্বাক্ষর করতে নিষেধ করে দেয়৷ সেই কারনে ওই চিকিৎসক মেডিকেল রিপোর্টে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেন । এমনকি ভাটা মালিক পুলিশকে পর্যন্ত প্রভাবিত করে । যেকারণে পুলিশ কোনো অভিযোগই নেয়নি ।
অধিকার কর্মী নেপোলিয়ান কাইয়ুম খ্রিস্টান ডেইলি ইন্টারন্যাশনাল/মর্নিং স্টার নিউজকে বলেছেন যে এই মামলাটি আরও একটি উদাহরণ ছিল যে কিভাবে প্রভাবশালী মুসলিমরা আইনকে লঙ্ঘন করে । গত বছররের ৬ নভেম্বর ওই ঘটনার পর আজ পর্যন্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ ।।