এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,২০ আগস্ট : মুসলিম রাষ্ট্রগুলিতে হিন্দুদের কি অবর্ণনীয় যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে কাটাতে হয় তা ভুক্তভোগীরাই জানেন । ধর্ষণ,খুন,সম্পদ লুট,ধর্মনিন্দার ভূয়ো অভিযোগে অযথা হয়রানি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্থানের মত মুসলিম রাষ্ট্রগুলিতে । বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় দেশের হিন্দুদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছিলেন,তাঁরা যেন নিজেদের সংখ্যালঘু না ভাবেন । কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই আশ্বাসবাণীর পরেও মেয়ের সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হচ্ছে হিন্দু বাবাকে । হিন্দু অধ্যাপককে কলেজ থেকে টেনে হেঁচড়ে বের করে পুলিশের সামনে ব্যাপক মারধর করছে নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষ । ভূমাফিয়াদের হাত থেকে নিজের জমি জায়গা বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হচ্ছে আদিবাসী হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের । আর এসব করেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে দুষ্কৃতীরা পার পেয়ে যাচ্ছে । কারন প্রশাসন নির্বিকার । পাকিস্থানপন্থী মিডিয়া নিশ্চুপ । পাকিস্থানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের কাছে বিক্রি হয়ে যাওয়া বাংলাদেশি মিডিয়া সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাকে সুপরিকল্পিতভাবে চেপে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে ।
সম্প্রতি রাজশাহী মহিলা কলেজের ফাইনাল ইয়ারের এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করে মিরাজ ওরফে ইরফান খান ও প্রিন্স নামে দুই মুসলিম যুবক । প্রতিবাদ করায় ছাত্রীর বাবা নীল মাধব সাহার উপর ছুরি,হাতুড়ি নিয়ে চড়াও হয়ে তাঁকে প্রাণে মারার চেষ্টা করে মিরাজ,প্রিন্সসহ ৩-৪ জন দুষ্কৃতী । আহত নীল মাধববাবুর অভিযোগ,’আমার স্ত্রী বন্দনা সাহার বিউটি পার্লার আছে । প্রিন্স নামে ওই যুবক প্রতি মাসে তাদের চাঁদা দিতে হবে বলে দাবি করে । নচেৎ তাঁর সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে দিতে হবে । আর এর প্রতিবাদ করাতেই আমার উপর হামলা চালায় ।’ পাশাপাশি তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে বলেছেন শেখ হাসিনা সরকার যদি কোনো ব্যবস্থা না নেয় তাহলে হয় আমাদের সপরিবারে আত্মহত্যা করতে হবে, নচেৎ ভারতে চলে যেতে হবে।
জানা গেছে,পুলিশের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা না পেয়ে নীল মাধব সাহা তাঁর দুই মেয়েকে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে ঘটনার কথা খুলে বলেন । তারপর বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হতেই ১৭ আগস্ট রাজশাহীর রেলওয়ে পুলিশ একটি এফআইআর নথিভুক্ত করে । তার ভিত্তিতে মিরাজ, ফরহাদ ও আখের আলি নামে তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ।
হিন্দু অধ্যাপককে মারধরের ঘটনাটি ঘটেছে ১৩ই আগস্ট । আক্রান্ত শিক্ষক রতন কুমার দাস মানিকগঞ্জের নুরুল ইসলাম কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান(Accountancy)-এর অধ্যাপক । অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁকে খুনের হুমকি দিচ্ছিল শাসকদল আওয়ামী লীগের নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান । সেই জন্য তিনি নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন । তাঁর নিরাপত্তায় কলেজে পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছিল । কিন্তু ওইদিন সাইদুর রহমান দলবল নিয়ে কলেজে চড়াও হয়ে রতনবাবুকে অফিস থেকে টেনে হেঁচড়ে বের করে পুলিশের সামনেই তাঁকে ব্যাপক মারধর করে । কিন্তু এদিন শনিবার পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ ।
এরপর গত বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানার অন্তর্গত ঈশ্বরপুর ইউনিয়নের কয়েকজন মুসলিম মাফিয়া মিলে স্থানীয় আদিবাসী হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের জমি দখল করতে গিয়েছিল । বাধা দিতে গেলে আদিবাসীদের মাটিতে ফেলে ব্যাপক মারধর করে দুষ্কৃতীরা । কিন্তু সব জেনেও পুলিশ হাত গুটিয়ে বসে আছে বলে অভিযোগ । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের কথায়,’শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে চান সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে । কিন্তু প্রতিটি রাজনৈতিক দল ও পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে যেভাবে মৌলবাদ জেঁকে বসেছে তাতে তিনি এঁটে উঠতে পারছেন না ।’এমতবস্থায় তাঁরা ভারতের হস্তক্ষেপের দাবি তুলেছেন ।।