এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৮ আগস্ট : গতকাল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানকে ২-১ গোলে পরাজিত করে ডার্বি জয় করেছে ইস্টবেঙ্গল । রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতে ডুরান্ডের সেমিফাইনালে চলে গেছে ইস্টবেঙ্গল । বহু দিন পর ডার্বি জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে লাল-হলুদ সমর্থকেরা । অন্যদিকে তখন মুষড়ে পড়তে দেখা গেছে মোহনবাগান গ্যালারি । তবে ফলাফল যাই হোক না কেন কলকাতার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ফুটবল দলের সমর্থকদের মধ্যে একটা ইস্যুতে ছিল একই সুর । আর তা হল “হিন্দু শরণার্থী” ইস্যু । ইস্টবেঙ্গলের গ্যালারিতে যখন “যাদের জন্য ছাড়লাম দেশ, তারাই পরেছে বাঙালির বেশ” লেখা বিশাল আকারের একটি ব্যানার দেখা যায়, তখন মোহনবাগানের গ্যালারিতে সমর্থকদের হাতে ছিল “প্রতিটি হিন্দু শরণার্থী আমার ভাই, অনুপ্রবেশকারীর এদেশে ঠাঁই নাই” লেখা পোস্টার । বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন যে পুলিশ ঐ সমস্ত ব্যানার দ্রুত সরিয়ে ফেলে । যা নিয়ে তিনি সমালোচনায় সরব হয়েছেন ।
ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান গ্যালারির ওই দুই স্লোগান লেখা ব্যানার দুটি এক্স-এ পোস্ট করেছেন বিরোধী দলনেতা । তিনি লিখেছেন,’গতকাল স্বামী বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ডুরান্ড কাপ টুর্নামেন্টে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের লড়াই শুধু মাঠের মধ্যে আবদ্ধ না থেকে গ্যালারিতেও এক বৃহত্তর লড়াইয়ের আকার ধারণ করলো। না ফুটবলপ্রেমী বা সমর্থকদের মধ্যে বাকযুদ্ধ বা হাতাহাতি নয়, গ্যালারিতে যৌথভাবে হিন্দু শরণার্থীদের প্রতি সমর্থনের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠলো অভিনব প্রতিবাদের মঞ্চ। “যাদের জন্য ছাড়লাম দেশ, তারাই পরেছে বাঙালির বেশ” এবং
“প্রতিটি হিন্দু শরণার্থী আমার ভাই, অনুপ্রবেশকারীর এদেশে ঠাঁই নাই।”
তাঁর কথায়,’এই স্লোগানগুলো যুবভারতীর গ্যালারিতে মুখরিত হয়েছে। হিন্দু শরণার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা। তবে এই আবেগের প্রকাশকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে পুলিশ ও প্রশাসন। সকাল থেকে টাঙানো সমর্থকদের বড় বড় TIFO ব্যানার কেড়ে নিয়েছে মমতা পুলিশ। এটা স্পষ্ট কণ্ঠ রোধ করার প্রয়াস, কিন্তু বাঙালিদের ঐক্য ও আবেগ কেউ দমাতে পারবে না, কোনোদিন পারেও নি।’
শুভেন্দু অধিকারী আরও লিখেছেন,’ইস্টবেঙ্গল গতকাল দুর্দান্ত জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। আশা করবো টুর্নামেন্ট জিতে ট্রফি ঘরে তুলবে ক্লাব। অভিনন্দন লাল হলুদ ব্রিগেড কে, আরো বেশী অভিনন্দন গ্যালারিতে হিন্দু শরণার্থীদের প্রতি সমর্থনের মশাল জ্বালানোর জন্য। মোহনবাগান ভালো লড়াই করেছে, ম্যাচের ফলাফল যাই হোক না কেন, গ্যালারিতে হিন্দু শরণার্থীদের প্রতি সংহতির প্রদর্শন, সমর্থকদের উৎসাহের আবেগের পালে হাওয়া লাগিয়েছে, ভবিষ্যতে এই আবেগ মাঠে খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করবে। মাঠের লড়াই মাঠে থাকবে, কিন্তু ‘হিন্দু হিন্দু ভাই ভাই’, এই ঐক্য কেউ ভাঙতে পারবে না। জয় ইস্টবেঙ্গল ! জয় মোহনবাগান ! জয় ফুটবল !’
প্রসঙ্গত,রবিবার যুবভারতীতে খেলার শুরু থেকেই প্রাধান্য ছিল ইস্টবেঙ্গলের দখলে । ইস্টবেঙ্গলের ডিমানটাকোসের জোড়া গোল দেন । তার মধ্যে প্রথমার্থে একটি গোল ও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে একটি। মোহনবাগানের হয়ে একমাত্র গোলটি করেছেন অনিরুধ থাপা। লাল হলুদের পরের ম্যাচ ২০ অগস্ট। প্রতিপক্ষ ডায়মন্ড হারবার এফসি।।