দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২৯ আগস্ট : কারাদণ্ড আটকানোর নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানা এলাকায় । সোমবার হাফিজউদ্দিন মিয়া নামে ওই প্রতারিত ব্যক্তি শেখ জুলফিকার ওরফে শান্ত এবং শেখ রিন্টু নামে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এনিয়ে ভাতার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন । তাঁর অভিযোগ, জামিন করে দেওয়ার নামে ওই দু’জন মিলে প্রতিনিয়ত তাঁকে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে । এমনকি টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর । অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।
জানা গেছে,ভাতার থানার আইমাপাড়ায় বাড়ি অভিযোগকারী হাফিজউদ্দিন মিয়ার । তিনি চাষবাস করেন । পাশের ঘোলদা গ্রামের বাসিন্দা অভিযুক্ত শেখ জুলফিকার ও শেখ রিন্টু । জুলফিকার নিজস্ব একটি চার চাকার গাড়ি ভাড়ায় খাটান । নিজেই চালান গাড়িটি ।
হাফিজউদ্দিন মিয়া জানিয়েছেন,পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসা থানার পানাগড় বাজারের বাসিন্দা চন্দন সিং নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর বছর খানেকের পরিচয় । চন্দন ভাঙাচোরা সামগ্রীর ব্যবসা করেন । পানাগড় বাজারে রয়েছে তার দোকান । তাঁর সঙ্গে যৌথভাবে ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে তিনি চন্দনের ব্যবসায় চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পুঁজি ঢেলেছিলেন । তারপর প্রথম চার মাসের দু’মাস ১২,০০০ টাকা ও বাকি দু’মাস ১০,০০০ হাজার টাকা করে লভ্যাংশ বাবদ দিয়েছিলেন চন্দন । টাকা আনতে শেখ জুলফিকারে গাড়িতে চড়েই পানাগড়ে যেতেন তিনি ।’ তিনি আরও বলেন,’আমার সাথে যাওয়ার সুবাদে ঘটনার বিষয়ে কথা সব জানতো জুলফিকার । শুধু তাইই নয়,সে চন্দনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাও গড়ে তুলেছিল । এদিকে মাস চারেক লভ্যাংশ দেওয়ার পর আর টাকা পয়সা দিচ্ছিল না চন্দন । তাই আমি আমার পুঁজি ফেরত চাই তাঁর কাছ থেকে । কিন্তু সে আমার টাকা ফেরতও দিচ্ছিল না । তখন জুলফিকার টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করে দেবো বলে আশ্বাস দেয় । ঘোলদা গ্রামের শেখ রিন্টু নামে একজনকে সে সঙ্গে জুটিয়ে নেয় ।’
হাফিজউদ্দিন বলেন, ‘ইতিমধ্যে ফোন মারফত খবর আসে চন্দন সিং আমার বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় আসানসোল আদালতে মামলা করেছে । আর তারপর থেকেই আদালতে জামিন না নিলে যাবজ্জীবন জেল হয়ে যাবে এই ভয় দেখিয়ে আমার কাছ থেকে তিন দফায় ৩০ হাজার টাকা আদায় করে জুলফিকার ও রিন্টু । এমনকি গত ১৬ আগস্ট জামিনের নাম করে বর্ধমান আদালতে আমাকে দিয়ে একটি হলফনামায় স্বাক্ষর করিয়ে নেয় । হলফনামাটি ইংরাজিতে লেখা থাকায় তার মানে বুঝতে পারেনি । পরে জানতে পারি তাতে নাকি লেখা আছে,আমি চন্দন সিংকে তার জরুরি প্রয়োজনে এক লাখ টাকা ধার দিয়েছিলাম । নির্ধারিত ১৬ আগস্ট ২০২২ তারিখে সে নাকি আমায় ওই টাকা পরিশোধ করে দিয়েছে । এখন বুঝতে বুঝতে পারছি চন্দন সিংয়ের কাছ থেকে টাকা আদায় করে দেওয়া ও হাজতবাস আটকানোর নামে আমার সঙ্গে শেখ জুলফিকার এবং শেখ রিন্টু মিলে কত বড় প্রতারণা করেছে ।’
হাফিজউদ্দিন মিয়ার দাবি, ওই দু’জন মিলে গত ১৫, ১৬ ও ১৭ আগস্ট তার কাছ থেকে ১০ হাজার করে মোট ৩০ হাজার টাকা আদায় করেছে । ফের শনিবার ৪০,০০০ হাজার টাকা দাবি করে রিন্টু । নিজেকে প্রভাবশালী বলে দাবি করা শেখ রিন্টু তাকে খুনের হুমকিও পর্যন্ত দিয়েছে বলে অভিযোগ হাফিজউদ্দিন মিয়ার । এদিন তিনি ভাতার থানার দ্বারস্থ হন । পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।।