এইদিন ওয়েবডেস্ক,মুর্শিদাবাদ,২৬ এপ্রিল : গত ১১ ও ১২ এপ্রিল মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুরের ধুলিয়ান ও সামশেরগঞ্জে ওয়াকফ সংশোধিত আইন প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভের নামে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানো হয়েছিল ৷ সেই হিংসায় সামশেরগঞ্জের জাফরাবাদে পিতা হরগোবিন্দ দাস ও পুত্র চন্দন দাসকে বাড়ি থেকে টেনে বের করে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করে ওয়াকফ সংশোধিত আইন বিরোধী সশস্ত্র জনতা । কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি পেয়ে আজ শনিবার নিহত পিতা পুত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি নিহত হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের স্ত্রীকে সান্ত্বনা দেওয়ার পাশাপাশি দু’জনের হাতে ১০ লক্ষ ১ হাজার টাকা করে চেক তুলে দিয়ে আসেন । উল্লেখ্য,এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি পরিবারটিকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন । কিন্তু নিহতদের পরিবার সেই টাকা নিতে অস্বীকার করেন । অথচ আজ তারাই শুভেন্দু অধিকারীর হাত থেকে চেক নেন তারা । এজন্য পরিবারটিকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিরোধী দলনেতা বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করা ক্ষতিপূরণ নিতে অস্বীকার করেও আমার হাত থেকে সেই অর্থ নেওয়ায় আমি কৃতজ্ঞ ।’
শুভেন্দু অধিকারী এক্স-এ এই বিষয়ে লিখেছেন,’আজ আমি মুর্শিদাবাদ জেলার সামশেরগঞ্জের জাফরাবাদে হিন্দু-বিরোধী হিংসায় মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারানো পিতা -পুত্র হরগোবিন্দ দাস এবং চন্দন দাসের বাসভবনে গিয়েছিলাম। তাদের শোকাহত পরিবারের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই। গভীর শোক তাদের মনে গেঁথে আছে, তাই তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য শব্দগুলি অপ্রতুল বলে মনে হচ্ছে। সেই ভয়াবহ দিনের তাদের হৃদয় বিদারক বর্ণনা শুনে আমি গভীরভাবে অস্থির হয়ে উঠেছিলাম। হরগোবিন্দ দাস এবং চন্দন দাসের একমাত্র দোষ ছিল যে তারা হিন্দু ছিলেন।’ তিনি আরও লিখেছেন,’আমি কিছু আর্থিক সহায়তা দিয়েছি, তাদের সন্তানদের শিক্ষার খরচ বহন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি এবং তাদের অব্যাহত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছি। পরিবারটি এর আগে হিন্দু-বিরোধী রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রত্যাখ্যান করেছিল, যা তাদের মনে হয়েছিল যে তাদের মূল্যবোধের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। আজ, এটা স্পষ্ট যে হিন্দু সম্প্রদায় সংহতির সাথে একসাথে দাঁড়িয়ে আছে। কঠিন সময়ে, আমরা, হিন্দু হিসেবে, অটল ঐক্যের সাথে একে অপরকে সমর্থন করার অঙ্গীকার করি। হিন্দু হিন্দু ভাই ভাই ।’
প্রসঙ্গত,এর আগে জাফরাবাদে নিহিত পিতা হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের বাড়িতে গিয়েছিলেন সিপিএমের মহম্মদ সেলিম ও মীনাক্ষী মুখার্জিরা । কিন্তু তাদের আগমনে তেমন সন্তুষ্ট দেখা যায়নি নিহতের পরিবারকে । যদিও নিহতরা তাদের দলেরই সমর্থক ছিলেন বলেও দাবি করেছিল সিপিএম । এরপর তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়ক ও নেতারাও যান নিহতের বাড়িতে । তবে তাদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় । কিন্তু৷ আজ শুভেন্দু অধিকারী আসার পর ভিন্ন চিত্র লক্ষ্য করা যায় । নিহতদের স্ত্রীরা শুভেন্দুর হাত ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন । বিরোধী দলনেতা তাদের সান্ত্বনা দেন । পাশাপাশি এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বিরোধী দলনেতাকে দেখে ভিড় জমান । শুভেন্দু অধিকারী নিহতদের পরিবারকে দেওয়া চেকের ছবিও পোস্ট করেছেন । তাতে দেখা গেছে যে ওই অর্থ তিনি নিজেদের পারিবারিক পেট্রোল পাম্পের(কনটাই ওয়েল স্টেশন) তরফ থেকে দিয়েছেন নিহতদের পরিবারকে ।।

