আমি পাঞ্চালি, পাণ্ডব ঘরণী।
স্বয়ংবর সভায় বিজয়ী ফাল্গুনীর কন্ঠে দিয়াছি বরমাল্য।
বীর যোদ্ধা তুমি, ফাল্গুনী।
কিন্তু, কী দিয়াছো মোরে !
পঞ্চ ভ্রাতা সহ আনিলে আমায় বনানীর কুটিরিতে,
মাতা কুন্তীর কাছে।
না দেখিয়া মাতা কহিল,
“যাহা আনিয়াছো ভাগ করিয়া লও”।
করো নাই প্রতিবাদ তুমি,
মায়ের কথা রাখিতে নিজের স্ত্রীকে
বানাইলে ভোগ্য পণ্য।
ভরা রাজসভায় কৌরবদের সঙ্গে পাশা খালায়,
কেন জ্যেষ্ঠ পাণ্ডব বাজী ধরলেন আমায়?
কী দোষ ছিল আমার ?
বাধা তো দিতে পারোনি,
কাপুরুষ তুমি।
রাজসভাতে দুর্যোধন যখন অশ্লীল কদর্য ইঙ্গিতে
তার জঙ্ঘা প্রদর্শন করে,
বসার আহ্বান জানালো,
তখনও তুমি ছিলে অবনত।
কিংবা, দুঃশাসন যখন জ্যেষ্ঠ ও গুণীজনদের মাঝে
রাজসভায় করেছিল বস্ত্রহরণ,
কোথায় ছিল তখন তোমার ক্ষত্রিয় ধর্ম ?
দুঃশাসনের লেলিহান কামনার আগুনে
আমার ঝলসে যাওয়া তুমি নির্বাক হয়ে দেখেছিলে।
ধন্য, ফাল্গুনী !
মধুসূদনের অপার করুণায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল দুঃশাসন !
সতী আমি !
যা কিছু আস্ফালন সবই মধ্যমপাণ্ডবের।
খুলিয়া অলকদাম,করিনু শপথ—–
“আজি হতে না বাঁধিব কেশদাম,
যতদিন না পান করিব দুঃশাসনের রক্ত।”
অঞ্জলি ভরে এনে দিয়েছিল মধ্যম পাণ্ডব,
তৃষ্ঞার্ত বক্ষ মাঝে শীতল রুধির ধারা !
আহা ! কি প্রশান্তি ।
যে জঙ্ঘা মাঝে বসাতে চেয়েছিল আমাকে কৌরব দুর্যোধন,
গদা যুদ্ধে তাহারে করিল ভূপতিত মধ্যম পাণ্ডব।
তুমি গাণ্ডীব ধন্য , ফাল্গুনী—–
কিন্তু পাঞ্চালি ধন্য নও।।