এইদিন ওয়েবডেস্ক,খান্ডওয়া,৩০ মার্চ : বেকারত্বের জ্বালায় কাজের খোঁজে ঘর থেকে বের হওয়া হিন্দু যুবককে ‘দোজাখ কি আগ’-এর ভয় দেখিয়ে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ উঠেছে এক আলেমের বিরুদ্ধে । নিজের ভুল বুঝতে পেরে স্বধর্মে ফিরে এলে ওই আলেম ও তার দলবলের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ । যার জেরে একবার তিনি আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন । অবশেষে পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি । ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের খান্ডওয়া জেলার মোঘাট রোড থানা এলাকার ।
সংবাদ মাধ্যম অর্গানাইজ উইকলিতে অক্ষয় গৌর ওরফে ফাহিম খান নামে ওই যুবকের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে । প্রতিবেদন অনুসারে ওই যুবক থানায় দায়ের করা এফআইআরে জানিয়েছেন, ২০২২ সালের জুনে যখন তিনি তার ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তিত ছিলেন তখন তিনি বাড়ি ছেড়ে খান্ডওয়া থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে নাগচুন নামে একটি জায়গায় চলে যান । সেখানে একজন ব্যক্তির সাথে তার দেখা হয়,যেনিজেকে আমিনউদ্দিন কাদরী বলে পরিচয় দেয় । আমিনউদ্দিন জানায়, তিনি খান্ডওয়ার নূরানী মসজিদের একজন ‘আলিম’ । যুবকের অভিযোগ, তাকে ‘জাহান্নুম’ (জাহান্নামের) এর ভয় দেখিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করিয়েছিল আমিনউদ্দিন কাদরী । কাদরী তাকে ইসলামের দাওয়াত দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে তিনি এখন একজন মুসলিম হয়েছেন এবং এক ঈশ্বর ‘আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করতে হবে। প্রার্থনা করলে সে ‘জান্নাতে’ স্থান পাবে অন্যথায় সে ‘জাহান্নুমে’ যাবে এবং ‘দোজাখ কি আগ’ (জাহান্নামের আগুনে) পুড়বে । ধর্মান্তরিত যুবকের আরও অভিযোগ, ধর্মান্তরিত করার পর আমিনউদ্দিন তার কাছে ইসলামের গুণগান হিন্দু ধর্মের নেতিবাচক দিক তুলে ধরতে শুরু করে । আলেম তালে বলে,সনাতন ধর্ম খুব খারাপ, মূর্তি পূজা অন্যায় ।’ এছাড়া সনাতনকে ‘মূর্খদের ধর্ম’ বলেও অবিহিত করে আমিনউদ্দিন কাদরী । এমনকি ওই আলেম অক্ষয়কে আরও বলেন যে ‘নবি’কে গালিগালাজকারীদের শিরোচ্ছেদ করা উচিত কারণ তারা ধর্মনিন্দার অপরাধে অপরাধী ।
প্রতিবেদনে জানা যায়,গত বছর ১০ আগস্ট অক্ষয় আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং নাম পরিবর্তন করে ফাহিম খান হন । পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে ওই বছর নভেম্বরে শুদ্ধিকরণের পর ফের তিনি হিন্দু ধর্মে ফিরে আসেন । অক্ষয় গৌর ওরফে ফাহিম খানের অভিযোগ, তাকে ভুল বুঝিয়ে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগে থানায় আলেম আমিনুদ্দিন কাদরির বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করার পর থেকে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে । অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য তার উপর চাপ সৃষ্টি করছে আলেম ও তার দলবল । এছাড়া মুসলমান হওয়ার পর কাদরী এক মুসলিম মেয়ের সাথে তার বিয়ে ঠিক করেন। এখন সেই মেয়েটি অক্ষয়কে মিথ্যা ধর্ষণ মামলার হুমকি দিচ্ছে এবং কাদরির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে । একের পর এক হুমকির জেরে গত ১৯ মার্চ আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে অর্গানাইজ উইকলিকে জানান অক্ষয় নামে ওই যুবক ।
প্রতিবেদনে জানা যায়,আলীম কাদরির ভয়ে অক্ষয় গৌর প্রায় দুই মাস ইন্দোরে তার মামার বাড়িতে থাকেন । পরে বাড়ি ফিরে তিনি কাদরির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন । কিন্তু ঘটনার প্রায় চার মাস হয়ে গেলেও অভিযুক্ত আলিমকে গ্রেফতার করতে পারেনি খান্ডোয়া পুলিশ ।।
ছবি ও তথ্য : অর্গানাইজ উইকলি