এইদিন ওয়েবডেস্ক,ওয়াশিংটন,২৭ ফেব্রুয়ারী : আমেরিকায় শ্বেতাঙ্গদের দ্বারা কৃষ্ণাঙ্গদের হামলার শিকার হওয়ার ঘটনা আকছার ঘটে থাকে । দিন কয়েক আগেই এক ভারতীয় তরুনীকে গাড়িতে পিষে মেরে দিয়েছে আমেরিকার এক পুলিশকর্মী । তরুনীর মৃত্যুর পর ঘাতক স্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মীকে মৃত তরুণীর উদ্দেশ্যে বিদ্রুপ করতেও শোনা যায় । বহু বছর ধরেই আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গরা শ্বেতাঙ্গদের হামলার শিকার হয়ে আসছে । যদিও ভয় দেখিয়ে অন্যান্য দেশের মুখ বন্ধ করে রেখে দিয়েছে আমেরিকা । ভারতে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার আসার পর থেকে ভারতে মুসলিমদের উপর কথিত অত্যাচার নিয়ে অপপ্রচার করতে দেখা গেছে মার্কিন মিডিয়াদের । ফের একবার “ইন্ডিয়া হটল্যাব” নামে একটি ওয়াশিংটন-ভিত্তিক তথাকথিত গবেষণা দল বলছে যে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্য ৬২ শতাংশ বেড়েছে।
সোমবার, এই দলটি একটি প্রতিবেদনে লিখেছে যে ভারতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্যের ৬৬৮ টি ঘটনা ঘটেছে। এই প্রতিবেদন অনুসারে,২৩৯ টি ঘটনার মধ্যে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সরাসরি আমন্ত্রণ রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বে মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশ এই তিন রাজ্যে ৭৫ শতাংশ এই মামলাগুলি ঘটেছে। কথিত গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, এই তিন রাজ্যের সরকারি কর্মকর্তাদের দ্বারা ১১ শতাংশ ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে। বিজেপির নিয়ন্ত্রণের বাইরের রাজ্যগুলিতে এই সংখ্যা বেড়ে ২৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে গত বছরের সাত অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ । হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধের শুরু থেকে গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্যের ১৯৩টি ঘটনা ঘটেছে।
অন্যদিকে যদি আমেরিকার জাতিবিদ্বেষের ঘটনা লক্ষ্য করা যায় তাহলে দেখা যাবে যে ৯/১১-এর ঘটনার পর আমেরিকায় ব্যাপক মুসলিম-বিদ্বেষী মানসিকতার সৃষ্টি হয় শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে । রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘মুসলিম অভিবাসন নিষিদ্ধ’ করার যে আহ্বান দিয়েছিলেন, তার ফলে এই বিদ্বেষ আরও বেড়ে যায় । ২০১৪ সালে নিউইয়র্কে একটি বাংলাদেশিদের পরিচালিত মসজিদের ইমাম ও তাঁর সহকারীকে নির্মমভাবে হত্যা করে মার্কিন শ্বেতাঙ্গরা । এছাড়া ৬০ বছরের এক প্রবীণ বাংলাদেশি বৃদ্ধাকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় । একই বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনে একটি অভিজাত পোশাকের দোকানে এক মুসলিম নারীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় । ম্যানহাটনের ফিফথ এভিনিউতে এই মুসলিম নারীর গায়ে অগ্নিসংযোগ করে এক শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি । জানা যায়, ৩৬ বছর বয়সী ওই নারীর কাছাকাছি লাইটার হাতে দাঁড়িয়ে ছিল ওই শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তিটি । ওই নারীর সঙ্গে কোন বাক্যালাপ ছাড়াই সে বোরখা পরা মুসলিম নারীর কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় । ২০১৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে ওয়ালমার্ট স্টোরের ভিতরে ঢুকে হামলা চালায় এক।শ্বেতাঙ্গ বন্দুকবাজ । তাতে প্রাণ হারায় ২০ জন। গুরুতর জখম হয় প্রায় ৩০ জন, যাঁদের মধ্যে ছিল দু’বছরের শিশু থেকে ৮১ বছরের প্রবীণ ব্যক্তিও। জীবিত অবস্থায় ওই হামলাকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা পুলিশ জানতে পারি যে বিদ্বেষ থেকেই ওই ব্যক্তি হামলা চালিয়েছিল ।।