এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,২৪ আগস্ট : বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুগামীদের জীবন কার্যত নরকে পরিনত করে দিয়েছে জামাত ও বিএনপির জঙ্গিরা । বিশেষ করে হিন্দুদের বেছে বেছে নিশানা করা হচ্ছে । তবে বাদ যাচ্ছে না আওয়ামী লীগের সাংসদ,নেতা থেকে শুরু করে পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে আদালতের বিচারকরাও । এবারে করুন পরিনতির মুখোমুখি হলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক । বেচারি মানিক পরিবার নিয়ে ভারতে পালিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন । কিন্তু ভারত এখন বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় দালালকে টাকা দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করার পরিকল্পনা করেন শামসুদ্দিন । তবে শেষ মুহুর্তে ধরা পড়ে গেলেন বিজিবির হাতে ।শুক্রবার (২৩ আগস্ট ২০২৪) রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি তাকে আটক করে। কিন্তু তার আগেই তাকে মারধর করে সঙ্গে থাকা ৬০-৭০ লাখ টাকা এবং মোবাইল ছিনিয়ে নেয় জামাতের জঙ্গিরা ।
বাংলাদেশের বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক আটকের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ভিডিও থেকে বোঝা যাচ্ছে, তিনি ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন। একটি ভিডিওতে যে কথোপকথন হয়েছে তা থেকে জানা যায়,বিচারপতি মানিক সিলেটের স্থানীয় দালাল সাদ্দামের সহায়তায় ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন। শুক্রবার দুপুরে তিনি সাদ্দামসহ অন্যদেরকে টাকার বিনিময়ে তাকে সীমান্ত পার করিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা চান। বিকালের দিকে তিনি দনা সীমান্ত এলাকা পাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। একটি ভিডিওতে সাবেক বিচারপতি মানিককে একটি স্থানে কলাগাছের পাতার ওপর শুয়ে থাকতে দেখা যায়। পরে স্থানীয় কিছু লোকজন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সে সময় তিনি তার নাম শামসুদ্দিন মানিক বলে পরিচয় দেন। সেখানে তিনি স্থানীয় লোকদেরও টাকা দেওয়ার কথা জানান। বলেন,’আরও টাকা লাগলে তিনি দেবেন। প্রয়োজনে তার ভাই-বোনও টাকা দেবেন। আমি এ দেশে এত কষ্ট করে এসেছি কি বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার জন্য?’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে,বাংলাদেশের এই বিচারপতি দাঁড়িয়ে আছেন। কেউ একজন তাকে জেরা করছে। এক ব্যক্তি তার গলায় গামছার মতো কিছু একটা দিয়ে পেচিয়ে ধরে আছেন। এ সময় তিনি কেউ তার নাম জিজ্ঞাসা করলে তিনি তার পুরো নাম বলেন এবং তার বাড়ি মুন্সীগঞ্জ বলে জানান। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে এই বিচারপতি জানান, তার কাছে ব্রিটিশ ও বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছিল। কয়েকটি ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডও ছিল। ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি দুই যুবকের সঙ্গে সীমান্ত পার করিয়ে দেওয়ার চুক্তি করেছিলেন। পরে তারা তাকে মারধর করে সঙ্গে থাকা ৬০-৭০ লাখ টাকা এবং মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। সেই সময় মানিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কলাপাতার ওপর শুইয়ে রেখে তারা পালিয়ে যায়।
একজন তাকে জিজ্ঞাসা করে, তাকে কোথায় মারধর করা হয়েছে। তখন তিনি জানান, সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকার পরই তাকে মারধর করে সব ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়া এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রশাসনের ভয়েই তিনি দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। এ ব্যাপারে সিলেটের কানাইঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরীন বলেন, প্রাক্তন বিচারপতি মানিক ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। পরে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি আটক করে হেফাজতে নিয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন বলেন, দনা পাতিছড়া গ্রামের রফিকুল হোসেনের ছেলে সাদ্দামের সাহায্যে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। পরে দনা বিজিবির সদস্যরা তাকে আটক করে হেফাজতে নিয়ে যায় ।।