র্যাডারের নজর এড়াতে প্যারাট্রুপারে চড়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে ঢুকে আক্রমণ চালিয়েছিল আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাস । একটি সঙ্গীতানুষ্ঠানে ঢুকে মানুষ খুন করে,নারীদের ধর্ষণ-গনধর্ষন করে । এমনকি অন্তঃসত্ত্বা ইহুদি মহিলার পেট চিড়ে ভ্রণ বের করে জবাই পর্যন্ত করেছিল ওই নরপশুর দল । এই আক্রমণে প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি সাধারন মানুষ নিহত হয় । আড়াই’শ জনের অধিক পনবন্দিকে গাজায় নিয়ে যায়৷ সেখানে ইহুদি তরুনীদের লালসার শিকার বানায় হামাস সন্ত্রাসীরা । কয়েক ডজন পনবন্দীর উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয় । পালটা সামরিক অভিযান চালিয়ে অর্ধ লক্ষের অধিক মানুষকে মারে ইসরায়েল । যার সিংহভাগই হামাস সন্ত্রাসী ।
কিন্তু হামাসের এই নৃশংসতার পরেও মুসলিম সম্প্রদায় এবং ছদ্ম ধর্মনিরপেক্ষ বামপন্থীদের কাছে হামাস নাকি “স্বাধীনতাকামী” সংগঠন । কিন্তু বাস্তবে হামাস কি, তা প্রকাশ্যে এনেছেন গ্যাব্রিয়েল ফন লুৎজাউ(Gabriele von Lutzau) নামে এক নেটিজেন । তিনি তার এক্স হ্যান্ডেলে (@g_vonlutzau) লিখেছেন, আরব বিশ্বে ঝড় :
মুসলিম ব্লগার হুদা জান্নাত যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজা সম্পর্কে যা শিখেছেন তাতে তিনি হতবাক। একটি সাহসী পোস্টে, তিনি যুদ্ধের সময় যা শিখেছেন তা বর্ণনা করেছেন এবং ইসরায়েলি ছাড়ের কারণে গাজাবাসী এবং হামাস নেতারা যে আরামদায়ক এবং সমৃদ্ধ জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন তা প্রকাশ করেছেন। পোস্টটি যুদ্ধের আগে গাজার কথিত ভয়াবহ পরিস্থিতি সম্পর্কে হামাসের ভণ্ডামি প্রকাশ করে।
আর এখানে তিনি যা পোস্ট করেছেন তা হল:
১. হঠাৎ করেই আমরা জানতে পারলাম যে ২০ লক্ষ মানুষের বাসস্থান গাজা উপত্যকায় ৩৬ টি হাসপাতাল রয়েছে। ৩ কোটি জনসংখ্যার আরব দেশগুলিতে এত হাসপাতাল নেই।
২. হঠাৎ করেই আমরা জানতে পারলাম যে গাজা ইসরায়েল থেকে বিনামূল্যে জল, বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং জ্বালানি পায়। অবশ্যই, আরব বিশ্বে এমন একজনও নেই যে জল, বিদ্যুৎ এবং জ্বালানির জন্য অর্থ প্রদান করে না।
৩. হঠাৎ করেই আমরা জানতে পারলাম যে গাজা কেবল কাতার থেকে মাসে ৩০ মিলিয়ন ডলার পায়। আর ইউএনআরডব্লিউএ থেকে মাসে ১২০ মিলিয়ন ডলার। আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে মাসে ৫০ মিলিয়ন ডলার। আর আমেরিকা থেকে মাসে ৩০ মিলিয়ন ডলার। এমন আরব দেশ আছে যারা ঋণে ডুবে আছে, যাদের কেউ দশ লক্ষ ডলারও দেয় না।
৪. হঠাৎ আমরা জানতে পারলাম যে গাজার কোনও “অবরোধ” নেই—সমস্ত পণ্য আসছে, সীমান্ত খোলা। গাজার লোকেরা মিশরে যাতায়াত করে, এবং সেখান থেকে সারা বিশ্বে।
৫. হঠাৎ দেখা গেল যে আরবরা অনেক আরব দেশের তুলনায় গাজায় ভালো বসবাস করে।
৬ । হঠাৎ আমরা বুঝতে পারলাম যে মুসলিম ব্রাদারহুড মিডিয়ার মিথ্যাচার দ্বারা আমাদের মস্তিষ্ক “প্রোগ্রাম করা” হয়েছে।
৭. হঠাৎ আমরা জানতে পারলাম যে গাজার শিশুরা সাধারণ শিশু নয়, যেমনটি আমরা আগে ভাবতাম, বরং মেশিনগান এবং আত্মঘাতী বেল্টধারী শিশু যোদ্ধা, যাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে হামাস দ্বারা। ৮. হঠাৎ করেই জানা গেল যে গাজার স্কুল, হাসপাতাল এবং মসজিদগুলি হল সন্ত্রাসীদের সদর দপ্তর এবং ভূগর্ভস্থ হামাস টানেল সহ অস্ত্রের গুদাম।
৯. হঠাৎ করে আমরা জানতে পারলাম যে গাজার একটি “মেট্রো” রয়েছে – ৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ হামাসের ভূগর্ভস্থ নেটওয়ার্ক যা ইসরাইল কেবল ঈর্ষা করতে পারে।
১০. হঠাৎ করে জানা গেল যে গাজার ডাক্তার এবং শিক্ষকরা আসলে সক্রিয় হামাস জঙ্গি।
১১. হঠাৎ করেই আমরা জানতে পারলাম যে গাজার বাড়িতে শিশুদের ঘরে রকেট এবং মর্টার রাখা হয়।
১২. হঠাৎ করেই আমরা জানতে পারলাম যে হিটলার এবং তার “মেইন ক্যাম্প” বইটি গাজায় খুবই জনপ্রিয় ছিল এবং প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই এর আরবি অনুবাদ ছিল, লেখকের একটি প্রতিকৃতি সহ।
১৩. হঠাৎ করেই আমরা জানতে পারলাম যে গাজার বাসিন্দারা বিলাসবহুল বাসস্থানে বাস করে – সুইমিং পুল এবং প্রিমিয়াম জার্মান গাড়ি সহ বহুতল প্রাসাদ।
১৪. হঠাৎ করেই আমরা জানতে পারলাম যে গাজার উপর কোনও ইসরায়েলি অবরোধ নেই, কারণ এটি তার মুসলিম “বোন” – মিশরের সাথে সীমানা বেঁধেছে।
১৫. হঠাৎ করেই, দেখা গেল যে গাজার বেশিরভাগ “বেসামরিক” হামাস এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সমর্থন করে, গণতান্ত্রিকভাবে হামাসকে ভোট দেয় এবং ৭ অক্টোবরের গণহত্যা উদযাপন করে।
১৬. হঠাৎ করে, আমরা জানতে পারলাম যে গাজার তথাকথিত সংবাদদাতা এবং সাংবাদিকরা যারা পশ্চিমা মিডিয়া – সিএনএন, এপি, রয়টার্স এবং অন্যান্যদের জন্য কাজ করে – তারা ৭ অক্টোবরের গণহত্যায় অংশগ্রহণকারী হামাস জঙ্গি।
১৭. হঠাৎ করেই দেখা গেল যে তথাকথিত “শান্তি কর্মী” এবং “আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলির কর্মীরা” – জাতিসংঘ, রেড ক্রস এবং WHO – হামাসের সন্ত্রাসী এবং দুর্নীতিগ্রস্ত সদস্য হয়ে উঠেছে।
১৮. হঠাৎ করেই আমরা জানতে পারলাম যে হামাসের প্রতিটি নেতা একজন বিলিয়নিয়ার, রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের চেয়েও ধনী, যাদের প্রত্যেকের মোট সম্পদের পরিমাণ ৪-৫ বিলিয়ন ডলার।
উপসংহারে: একজন মুসলিম ব্লগার গাজায় হামাসের ভণ্ডামির মুখোশ ছিঁড়ে ফেলেছেন ধারাবাহিক টুইটের মাধ্যমে যা আরব বিশ্বকে হতবাক করে দিয়েছে।
তার এই দাবি যে নিছক অমূলক নয়,তার প্রমান মিলছে এবার । মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সোমবার মিশরে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ বিরতি চুক্তির পরেও সেই চুক্তি লঙ্ঘন করে ফের হামলা চালিয়েছে হামাস । হামলায় দুই ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়৷ যেকারণে পালটা হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল । এখন প্রশ্ন যে আদপেই কি গাজায় শান্তি চায় হামাস ? কাতার,ইরান, তুর্কির মদতপুষ্ট এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি গাজায় যুদ্ধ লাগিয়ে রাখতে চাইছে, কারন এতেই তাদের ফায়দা ৷ যদিও হামাসের দাবি যে তারা ইসরায়েলি সেনাদের হত্যা করেনি,হত্যা করেছে তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া কোনো বিদ্রোহী গোষ্ঠী ।।