এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৮ এপ্রিল : ‘কলকাতায় হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিটে গিয়ে দেখুন একটাও জায়গা খালি নেই । সব জায়গা ব্যানার্জী পরিবারের হাতে চলে গেছে । আর একতলা,দু’তলা, তিনতলা দালান কোঠা তৈরি হচ্ছে । কোঠার ভিতরে কি আছে আমি জানি না । কেউ কেউ বলছেন থাইল্যান্ড থেকে আনা সোনাও নাকি সেখানে আছে ।’ রবিবার ভাতারে নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিয়ে নাম না করে এই ভাষাতেই মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করলেন সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য তথা রাজ্য কমিটির সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ।
পাশাপাশি কেন্দ্র সরকারকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘জিনিষের দাম বাড়ছে । আয় বাড়ছে না । দেশে বেকার বেড়েছে । মোদি বলেছিলেন বছরে ২ কোটি লোককে কাজ দেবেন । ৭ বছরে ১৪ কোটি লোক কাজ পাওয়ার কথা । কাজ পাবে কি উলটে ১৫ কোটি বেকার তৈরি দিয়েছে । আমাদের হিসাব মত ২০ কোটি বেকার সৃষ্টি হবে । কাজ হারিয়ে রাজ্যের পরিযায়ী ফিরে আসতে বাধ্য হবে ৷ প্রতি পরিযায়ী শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল পরিবারের ৫ জন করে যদি সদস্য থাকে তাহলে ১০০ কোটি মানুষের সর্বনাশ হবে । ফলে ক্রয় ক্ষমতা কমবে । কলকারখানা বন্ধ হবে ৷ ইতিমধ্যে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সরকারিভাবে মন্দা ঘোষনা করে দিয়েছে ।’ মধ্যবিত্তের ৩ ভাগের একভাগ গরীবি সীমানার চলে গেছে বলে দাবি করেন সূর্যকান্ত মিশ্র ।
সূর্যকান্ত মিশ্রের কথায়, ‘তৃণমূলকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া । আবার বিজেপিকে ভোট দেওয়া মানে তৃণমূলকে ভোট দেওয়া । আপনারা যারা ভাবছেন বিজেপিকে ভোট দিয়ে তৃণমূলকে হঠাবেন তারা ভেবে দেখবেন বিজেপির অর্ধেকের বেশি প্রার্থী তৃণমূল থেকে এসেছে । যারা কাটমানি,সিন্ডিকেটে যুক্ত ছিল তারাই এখন তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছে ।’
সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওরা বুঝে গেছে আপনারা যদি এক হন তাহলে আর তৃণমূল বিজেপি থাকবে না । তাই ব্রিটিশদের মত জাতি,ধর্ম,বর্ন, ভাষা দিয়ে আমাদের ভাগ করার চেষ্টা চলছে । আপনাদের মধ্যে মোরগ লড়াই লাগিয়ে দিয়ে হাড়মাস চিবিয়ে খেতে চাইছে।’ এরপর তিনি বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বার্তা দেন, ‘আসুন এক সাথে লড়াই করি ।’
এদিন আইএসএফকে দরাজ সার্টিফিকেট দেন সূর্যকান্ত মিশ্র । তিনি বলেন, ‘প্রথম দফার ভোটে বাঁকুড়ার রায়পুর কেন্দ্রে আইএসএফের একজন প্রার্থী রয়েছেন । আসনটি আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত । আব্বাস সিদ্দিকী ওই আসনে আদিবাসীকেই প্রার্থী করেছেন । দ্বিতীয় দফার ভোটে পশ্চিম মেদিনীপুরে আই এস এফের প্রার্থী রয়েছেন একজন তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের । তৃতীয় দফার ভোটে আব্বাস সিদ্দিক মেদিনীপুরের মহিষাদলে টিকিট দিয়েছেন একজন চ্যাটার্জী ব্রাহ্মণকে। আর বলছেন এরা সাম্প্রদায়িক ? গোটা ভারতে এমন কোনও সংগঠন নেই যেখানে এসসি,এসটি,ব্রাহ্মণ একসঙ্গে ভোটে লড়ছে ।’
এদিন উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে সূর্যকান্ত মিশ্র আহ্বান জানান, ‘সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীদের স্পিকারের ডান দিকে বসার জন্য পাঠাবেন । বাম দিকে বিরোধীপক্ষে বসার জন্য নয় ।’
এদিন ভাতারের সংযুক্ত জোট সমর্থিত দলীয় প্রার্থী নজরুল হকের সমর্থনে একটি জনসভায় আয়োজন করা হয়েছিল । ওই সভায় মুখ্য বক্তা ছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র । তিনি ছাড়াও উপস্থিত কংগ্রেসের পূর্ব বর্ধমান জেলার নেতা সুজিত মজুমদারসহ সিপিএম ও কংগ্রেসের স্থানীয় নেতারা ।।