এইদিন ওয়েবডেস্ক,পুরুলিয়া,২০ সেপ্টেম্বর : জাতিসত্তার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে কুড়মী সমাজ । গত শুক্রবার থেকে রেল ও পথ অবরোধ শুরু করেছে তারা । কিন্তু শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট এই অবরোধকে বেআইনি ঘোষণা করেছে। সেই নির্দেশ অমান্য করে আজ, শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল ও পথ অবরোধে নামল আদিবাসী কুড়মি সমাজ। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশার প্রায় ১০০টি পয়েন্টে অবরোধ চলছে। পুরুলিয়ার সব স্টেশনেই কুড়মিদের অবরোধ কর্মসূচি।
এদিকে পুরুলিয়ার সুরেশ মাহাতো(ট্যাঙ্গো) নামে এক খেলোয়াড় অভিযোগ করেছে যে কোটশিলা থানা এলাকায় কুড়মী সমাজের বাড়ি বাড়ি ঢুকে পুলিশ হুমকি দিচ্ছে ৷ তিনি নিজের পরিচয় দিয়ে প্রোফাইলে লিখেছেন : “ম্যানেজার = ট্যাঙ্গো টাইগার একাডেমি, ক্রীড়াবিদ, কেন্দ্রীয় রিজার্ভ ফোর্স, কঠোর পরিশ্রমই সাফল্যের চাবিকাঠি।”
সুরেশ মাহাতো কিছু ভিডিও পোস্ট করেছেন নিজের ফেসবুক পেজে । যাতে একটি গ্রামে পুলিশবাহিনী গিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলতে দেখা যায়৷ ভিডিও গ্রহণকারী ব্যক্তি পুলিশের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেখানোর অভিযোগ তুলেছেন । সুরেশ মাহাতো লিখেছেন,’মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে সুপ্রিয় কোর্টের রায় মানেন না কিন্তু কুড়মী সমাজকে হাইকোর্টের রায় মানতে আজকে গ্রামে গ্রামে পুলিশ পাঠিয়ে বাধ্য করানো হচ্ছে ! এরপরও যদি কোনো কুড়মী তৃনমূল কে ভোট দেয় তাহলে সে কুড়মী বটে কিনা সন্দেহ রইলো….।’
আন্দোলনকে সফল বলে দাবি করে তিনি লিখেছেন, ‘পুরুলিয়ার কুড়মিদের কে ঘরে আটকাই দিয়েও রেল টেকা ও ডহর ছ্যাঁকা আজকে সফল ! যত কুড়মি এখন এই ভাদরা রোদে মাড় ভাত আলু সিঝা খাঁয়ে ঘরে ঘুমাছে !! আর পুলিশ এই রোদে ঝৈলসে আর ভখে পড়া হনুর মতন হছে !’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘আজ পর্যন্ত প্রায় ৮০%কুড়মি জানথোই নাই যে কুড়মি জাতি তার হক অধিকারের জন্য আন্দোলন করছে !! পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ গাঁয়ে গাঁয়ে রুটমার্চ করে কুড়মি ভাইদের কুড়মি আন্দোলন সম্পর্কে সচেতন করে দিলো এবং কুড়মিদের মনের ভিতরে আরো ভালো করে নিজেদের জাতিসত্তার আগুনটা জ্বালে দিয়ে আলো !! যেটা কুড়মি নেতারা আগামী ১০ বছরেও বধোয় পারথোনাই !! তাই কুড়মি দের সচেতন করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের সমস্ত সচেতন কর্মীদের যথা যোগ্যস্থানে আমার প্রণাম ও ভালোবাসা থাকলো !! জয় গরাম জোহার !! বারে পুলিশ রে !! পারিস ও বঠে !!’
এদিকে কলকাতা হাইকোর্ট কুড়মীদের এই অবরোধকে বেআইনি ঘোষণা করার পরেও দক্ষিণ-পূর্ব রেল একগুচ্ছ ট্রেন বাতিল ও নিয়ন্ত্রণ করেছে। বাতিল করা হয়েছে : হাতিয়া-বর্ধমান মেমু এবং টাটানগর-গয়া মেমু দুই জোড়া ট্রেন । ঘুরপথে চলছে: আদ্রা-বোকারো স্টিল সিটি এক্সপ্রেস । রাঁচি- দুমকা এক্সপ্রেসের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে । নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে : রাঁচি-বারাণসী বন্দে ভারত, টাটানগর-পাটনা বন্দে ভারত, হাতিয়া-পূর্ণিয়া কোর্ট এক্সপ্রেস এবং আলাপ্পুজা-ধানবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনগুলিকে । যেকারণে পুজোর আগে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে । এদিকে কুড়মীদের এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদও হচ্ছে । রেল ও রাস্তা অপরাধের প্রতিবাদে গতকাল পুরুলিয়া সচেতন নাগরিক মঞ্চের বিক্ষোভ মিছিল করা হয় ।।