প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৪ জুন : ’স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখিয়ে রোগীকে ভর্তি করার পরেও ৪৩ হাজার টাকা মেটানোর জন্যে চাপসৃষ্টি করা হচ্ছিল রোগী পরিবারকে । তা নিয়ে পুলিশ নড়েচড়ে বসতেই ভোল বদলায় বর্ধমানের নবাবহাট এলাকার একটি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ । শেষ পর্যন্ত ৫ হাজার টাকায় রফা করে নিয়ে তারা রোগীকে মেমারির বাড়িতে যাওয়ার ছাড়পত্র দেয় । এদিকে রোগী পরিবারের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে বেজায় চটেছেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা। গোটা ঘটনার তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে তিনি জানিয়েছেন । যদিও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে রোগী পরিবার কারও উস্কানিতে মিথ্যা অভিযোগ করেছে ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,মেমারির রাধাকান্তপুরে বাসিন্দা বছর ৫২ বয়সী তরু ক্ষেত্রপাল গত মঙ্গলবায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে জখম হন ।পরিবারের লোকজন তাঁকে মেমারি হাসপাতালে নিয়ে যান । চিকিৎসকরা তাঁকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স চালক রোগীকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে বর্ধমানের নবাবহাট এলাকার নার্সিংহোমে ভর্তি করেদিয়ে চলেযায়।সেখানে রোগীর চিকিৎসা হলেও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ মোটা টাকার দাবি কারায় অশান্তি তৈরি হয় ।
রোগী তরু ক্ষেত্রপালের মেয়ে অরুন্ধতী দাসের অভিযোগ ,“স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড দেখে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাঁর বাবাকে ভর্তি নিয়েছিল।অথচ এদিন রোগীকে ছাড়ার সময় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাঁদের কাছে ৪৩ হাজারের বেশি টাকার দাবি করে । অরুন্ধুতী বলেন ,তাঁদের দরিদ্র পরিবার ।গতরে খেটে কোনও রকমে তাঁদের দিন চলে । অত টাকা তাঁরা যাবেন কোথায় ? সেই কথা তাঁরা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে বলেও তারা কোন কিছু মানতে চান না।চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হলে বর্ধমান থানার পুলিশ আসে। তারপরেই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ৪৩ হাজার টাকার দাবি থেকে ৫ হাজার টাকায় নেমে আসে । অরুন্ধতী জানান ওই টাকা তাঁদের কাছ থেকে আদায় করার পর নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাঁর বাবাকে ছাড়ে ।রোগীর ছেলে বসন ক্ষেত্রপাল বলেন,
’স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডে তাঁর বাবাকে ভর্তি করার পরেও যে ভাবে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাঁদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা আদায় করলো সেটা অন্যায় । তাই তাঁরা জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন ।
এই অভিযোগ প্রসঙ্গে নার্সিংহোমের অংশীদার, চিকিৎসক কৌশিক দাস বলেন, “ওই রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাঁর ৪৩ হাজার টাকা বিল হয়। ৫ হাজার টাকা দিয়েছে রোগীর পরিজনরা। একই সঙ্গে কৌশিক বাবু জানান ,তাঁদের নার্সিংহোম স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা করার অনুমতি পায়নি। কেউ উস্কানি দিয়ে এইসব মিথ্যা অভিযোগ করাচ্ছে।” সিএমওএইচ প্রণব রায় বলেন ,“আমার কাছে এখনও অভিযোগ আসে নি । অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।’।