এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাঠমান্ডু,১৩ জুলাই : পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ওরফে প্রচন্ড। শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্টে আস্থাভোটে পরাজিত হন তিনি। যেকোনো সময় তিনি পদত্যাগের কথা ঘোষণা করবেন । তবে নতুন প্রধানমন্ত্রী না আসা পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রচন্ড।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই দফায় মাত্র ১৯ মাস ক্ষমতায় থাকতে পারলেন প্রাক্তন মাওবাদী নেতা প্রচন্ড। তিন দফায় প্রধানমন্ত্রী থাকা প্রচন্ড শুক্রবার পার্লামেন্টের নিন্মকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে আস্থা ভোটে হেরে যান । নেপালি পার্লামেন্টের নিন্মকক্ষের আসন হচ্ছে ২৭৫টি। আস্থা ভোটে জিততে হলে প্রচন্ডকে পেতে হতো ১৩৮ ভোট। পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে উপস্থিত ছিলেন ২৫৮ জন এমপি।
ভোটাভুটির পর নেপালের পার্লামেন্টের স্পিকার দেবরাজ ঘিমির জানান, প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল মাত্র ৬৩ ভোট পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন ১৯৪ এমপি। না ভোট দিয়েছেন একজন।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী প্রচন্ডের নেতৃত্বাধীন নেপালি কমিউনিস্ট পার্টির জোট সরকার থেকে বেরিয়ে যায় জোটের শরীক দল কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (ইউএমএল)। দলটি হাত মেলায় বিরোধীদল নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে। জোট সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করাতেই সংবিধান অনুযায়ী আস্থা ভোটের মুখোমুখি হন প্রধানমন্ত্রী প্রচন্ড। তাতে হেরে বাধ্যতামূলক পদত্যাগ করতে হচ্ছে প্রচন্ডকে।
এদিকে প্রচন্ডের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে ইউএমএল নেতারা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে চুক্তি করেছে। চুক্তি অনুযায়ী নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন ইউএমএল নেতা ও আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি।সিপিএন-ইউএমএল চেয়ারম্যান কেশি শর্মা অলি প্রধানমন্ত্রীর জন্য দাবি জমা দিয়েছেন। নেপালি কংগ্রেস নেতা শের বাহাদুরের সাথে শুক্রবার রাতে রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছান ওলি, সংবিধানের ৭৬(২) অনুচ্ছেদ অনুসারে নতুন প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটি দাবি জমা দেন। প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহল প্রচন্ড প্রতিনিধি পরিষদে আস্থা ভোট না পেয়ে, রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাউডেল দলগুলিকে একটি নতুন সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি ওলি শুক্রবার রাষ্ট্রপতি ভবন শীতল নিবাসে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সংবিধানের ৭৬(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দুই বা ততোধিক দলের সরকার গঠনের দাবি পেশ করেন। কংগ্রেসের প্রথম দল থেকে ৮৮ জন এবং দ্বিতীয় দল ইউএমএল-এর ৭৭ জন সহ ১৬৫ জন সাংসদের সমর্থন নিয়ে অলি প্রধানমন্ত্রীত্বের দাবি জমা দিয়েছেন। কংগ্রেস পার্লামেন্টারি পার্টির চিফ হুইপ, রমেশ আখতার বলেছেন যে জাসপা, জনমত, জাসপা নেপাল, লোস্পা এবং সিটিজেন লিবারেশন পার্টি কংগ্রেস-ইউএমএল জোটে থাকলেও, অলি শুধুমাত্র কংগ্রেস এবং ইউএমএল-এর স্বাক্ষর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীত্বের দাবি জমা দিয়েছেন।।