দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০৬ এপ্রিল : ‘ফ্রি ফায়ার গেম’ গেম খেলায় নেশা ভাইয়ের । তাই খেলতে নিষেধ করেছিল দাদা । এমনকি ভাইয়ের কাছ থেকে সে স্মার্টফোনটা কেড়েও নিয়েছিল । এনিয়ে দাদা ও ভাইয়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটিও । তারপর দাদার উপর অভিমান করে বাড়ির সকলের নজর এড়িয়ে ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে পড়েছিল পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া ২ ব্লকের নসিপুর গ্রামের বাসিন্দা দশম শ্রেণীর পড়ুয়া গোপাল মণ্ডল । শেষে মঙ্গলবার রাতে তাকে উদ্ধার করল দাঁইহাট ফাঁড়ির পুলিশ । বুধবার খবর পেয়ে ওই কিশোরকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন । তবে বাড়ি ফেরার আগে পুলিশ কিশোরের কাছে প্রতিজ্ঞা করিয়ে নেয়,পড়াশোনায় ফাঁকি দিয়ে সে আর মোবাইলে গেম খেলবে না ।
জানা গেছে,গোপাল মণ্ডলরা দু’ভাই ও তিন বোন । সকলের ছোট গোপাল দাঁইহাট উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে । দাদা কৌশিক মণ্ডল এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে । তাদের বাবা কালু মণ্ডল দূর্ঘটনার কারণে পঙ্গু হয়ে গেছেন। কাজকর্ম করতে পারেন না । সাবিত্রীদেবী বিড়ি বেঁধে অতিকষ্টে সংসারের ও ছেলেদের পড়াশোনার খরচ খরচার চালান ।
সাবিত্রীদেবী জানিয়েছেন,বাড়িতে একটাই স্মার্টফোন রয়েছে । তাঁর ছোট ছেলে মোবাইলে অধিকাংশ সময় গেম খেলতো । তাই বড়ছেলে তাকে নিষেধ করেছিল । মঙ্গলবার রাতে দাদা-ভাইয়ের মধ্যে এনিয়ে ঝগড়াঝাটিও হয়েছিল । তারপর ছোট ছেলে কখন যে বাড়ি থেকে পালিয়েছিল কিছু জানতেও পারেননি তাঁরা ।
জানা গেছে,দীর্ঘক্ষণ গোপালকে দেখতে না পেয়ে বাড়ির লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে । কিন্তু তার কোনও হদিশ করতে পারেনি । এদিকে গোপাল তখন পায়ে হেঁটে দাঁইহাটে চলে আসে । হাওড়া কাটোয়া শাখার রেললাইন ধরে সে উদ্দ্যেশ্যহীন ভাবে হাঁটতে থাকে । সেই সময় ওই জায়গায় ডিউটি করছিলেন দাঁইহাট ফাঁড়ির কয়েকজম সিভিক ভলেন্টিয়ার । তাঁরা ওই কিশোরের মতিগতি অনুমান করে তাকে ধরে দাঁইহাট ফাঁড়িতে আনে । থানা থেকে তার খাওয়া দাওয়া ও ঘুমনোর ব্যবস্থা করা হয় । রাতে মুখ না খুললেও এদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর নিজের নাম ঠিকানা ও ঘটনার কথা সে পুলিশের কাছে বলে । এরপর দাঁইহাট ফাঁড়ি থেকে ফোনে খবর পেয়ে গোপালকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় তার পরিবারের লোকজন ।।