প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৭ সেপ্টেম্বর : কিডনির অসুখে ভুগে কয়েকদিন আগেই প্রিয় বোন শান্তনা মারা গিয়েছে। বোন চিকিৎসাধীন থাকা কালে রক্ত দানের প্রয়োজনীয়তা মর্মেমর্মে উপলব্ধি করে ছিলেন দাদা কাজল নাথ। সেই উপলব্ধি থেকেই বোনের সৎকার্য সম্পন্ন করা দাদা শনিবার কাছা কাপড় পড়েই ক্লাবের রক্তদান শিবিরে পৌছে গিয়ে রক্তদান করলেন।বোনকে চিরতরে হারানো এক দাদার এই উপলব্ধি শিবিরে উপস্থিত সবাইকেই হতবাক করে দিয়েছে। তবে কাজল নাথের সাফ জবাব রক্তদানের মহতি ব্রত তিনি আগামী দিনেও সমান ভাবে পালন করে যাবেন।
কাজল নাথ পূর্ব বর্ধমানের কালনা শহরের বড়মিত্রপাড়ার বাসিন্দা।৪৮ বছর বয়সী কাজল বাবুর বোন শান্তনা নাথ কিডনির অসুখে ভুগছিলেন। তার রক্তক্ষরণ ও হচ্ছিল। তার জেরে শান্তনা নাথের মৃত্যু হয়।গত শনিবার বোনের মুখাগ্নি করেন কাজল বাবু। পরলৌকিক কৃয়াকর্ম সম্পাদনের দিন বাকি থাকায় দাদা কাজল নাথ এখন কাছা পরেই যাবতীয় আচার পালন করে যাচ্ছেন।
তারই মধ্যে এদিন স্থানীয় একটি ক্লাব কালনা হাসপাতালে রক্ত সংকট কাটাতে হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে। সেকথা কানে যেতেই রক্তদান করার জন্য কাছা পড়েই সেই শিবিরে পৌছে যান কাজল নাথ । কাছা পরিহিত অবস্থায় কাজল বাবু রক্তদান করতে চাইলে শিবিরে উপস্থিত সবাই হতবাক হয়ে যান । অনেকে তাকে নিষেধ করেন । কিন্তু নাছোড় মনোভাব দেখিয়ে চলেন কাজল বাবু। তিনি বলেন,আমি চাইনা আমার বোনের মত অবস্থার শিকার আর কেউ হোক । তাই প্রিয় বোনের আত্মার শান্তি কামনাতেই আমি রক্তদান করতে চাই । শেষে তার এই আর্জি আর না মেনে পারেন নি ব্লাড ব্যাঙ্ক ও ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
কাজল নাথ এদিন চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন,আমার বোন চিকিৎসাধীন থাকা কালে মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছি হাসপাতালে রক্তের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি। সেই উপলব্ধি থেকেই এদিন আমার বোনের আত্মার শান্তি কামনায় রক্তদান করলাম । আগামী দিনেই রক্তদানের
মহতি ব্রত থেকে পিছু হঠবেন না বলে কাজল নাথ জানান ।।