প্রদীপ চট্টৌপাধ্যায়,বর্ধমান,১২ নভেম্বর : ট্যাব কেলেঙ্কারির সামনে আসতেই তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্য জুড়ে। নবান্নের নির্দেশে এই কেলেঙ্কারির পর্দা ফাঁস করতে আসরে নামে পুলিশ। জেলার জেলায় শুরু হয় ধরপাকড়।পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশও ট্যাব কেলেঙ্কারিতে যুক্ত এই অভিযুক্তকে জালে পুড়েছে। পুলিশ জানিয়েছে,ধৃতের নাম হাসেম আলি। তার বাড়ি মালদা জেলার বৈষ্ণব নগরে। মঙ্গলবার ধৃতকে ধর্ধমান আদালতে পেশ করে পুলিশ । হাসেমের সঙ্গে জড়িত বাকিদের নাগাল পেতে তদন্তকারী অফিসার এদিন ধৃতকে সাত দিন পুলিশি হেপাজতে নেওয়ার আবেদন আদালতে জানিয়েছেন।
জেলার পুলিশ সুপার সায়ক দাস জানিয়েছেন, ট্যাব কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে গত জুলাই মাসে হাসেম আলি একটি মোবাইল ফোন মাধ্যমে ’বাংলার শিক্ষা’ পোর্টাল অ্যাকসেস করে। সাথে সাথে হাসেম নিজেও একটি অ্যাকাউন্ট মোডিফাই করেছিল।এই কাজে হাসেম যে মোবাইলটি ব্যবহার করতো সেটিও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে।এই ঘটনায় হাসেমের সঙ্গে আরও কিছু জন জড়িত থাকতে পারে ,এমন সম্ভাবনার কথাও পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
ট্যাবের টাকা না পাওয়াদের তালিকায় পূর্ব বর্ধমান জেলার ৮৫ জন স্কুল পড়ুয়া ছিল। বিষয়টি নিয়ে তারা জেলা স্কুল দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে । এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের পর টাকা না পাওয়া জেলার ওইসব স্কুল পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ট্যাব কেনার টাকা দেওয়া হয় ।এ নিয়ে জেলা শাসক আয়েশা রানী জানান, জেলার ২৮ টি স্কুলের ৮৫ জন পড়ুয়া ট্যাবের টাকা পায় নি। তাদের মধ্যে ৮৪ জন পড়ুয়ার টাকা ইতিমধ্যেই তাদের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে।যে সব পড়ুয়ার ট্যাব কেনার টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছিল সেই সব পড়ুয়ারাই মূলত ট্যাবের টাকা পেয়েছে বলে জেলাশাসক জানিয়েছেন!
এখানে উল্লেখ্য রাজ্য সরকারের ’তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের দশ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় । বর্ধমান সিএমএস স্কুলের পড়ুয়াদের এক অ্যাকাউন্টের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে ঢোকে। বিষয়টি নজরে আসতেই শিক্ষা দপ্তরের পাশাপাশি সাঁইবার থানার দ্বারস্থ হয় প্রতারিত স্কুল কর্তৃপক্ষ। বর্ধমান শহরের সিএমএস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মিন্টু রায় জানান, এবছর তাঁদের স্কুলের ৪১২ জন পড়ুয়ার জন্য ট্যাবের আবেদন করা হয়। কিন্তু স্কুলের ৪১২ জনের মধ্যে ২৮ জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢোকে নি। তারপর স্কুলের পক্ষ থেকে গোটা বিষয়টি জানানো হয় ডিআই,অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা), ডিপিওকে।পাশাপাশি পুলিশের সাইবার থানাতে অভিযোগ দায়ের করা হয়।।