এইদিন ওয়েবডেস্ক,কায়রো(মিশর),১৫ নভেম্বর :
মিশরের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আসওয়ানে(Aswan) ঝড়-ঝঞ্ঝার সময় আচমকা বেড়ে গেছে বিভিন্ন ধরনের বিছের উৎপাত । ঝাঁকের পর ঝাঁক বিছের দল হানা দিচ্ছে জনবহুল এলাকায় । বিছের দংশনে এযাবৎ ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে । আহত হয়েছে ৫০০ জনের অধিক নাগরিক । হতাহতদের মধ্যে কেউ কেউ রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বিছের দংশনের শিকার হয় । আবার অনেক ক্ষেত্রে বিছের দল বাড়ির ভিতরে ঢুকে মানুষের উপর হামলা চালায় বলে জানা গেছে । ঘটনাটি ঘটেছে মূলত আসওয়ানের পার্বত্য এলাকায় ।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সুত্রে জানা গেছে,গত শুক্রবার থেকে মিশরের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আসওয়ানে তুমুল ঝড়বৃষ্টির পাশাপাশি বজ্রপাত শুরু হয়েছে । তারপর থেকেই আসওয়ানের গভর্নরেটরের পাহাড়ি এলাকায় বেড়ে গেছে বিছের উৎপাত ।
আসওয়ানের কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যাপক আহমেদ রিজক জানিয়েছেন,ভারী বর্ষণের কারনে পার্বত্য এলাকায় সাপ ও বিচ্ছুর গর্তে জল ঢুকে গেছে । ফলে তারা এখন বাসা ছেড়ে বেড়িয়ে নিরাপদ জায়গার সন্ধান করছে । যার ফলে আচমকা বিভিন্ন ধরের বিছের ও সাপের উৎপাত আচমকা বেড়ে গেছে পর্বত সংলগ্ন জনবসতি এলাকায় । স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে তাঁর পরামর্শ, ‘বৃষ্টিপাতের সময় আপনারা পাহাড়ি এলাকা এড়িয়ে চলুন । পার্বত্য এলাকা থেকে দূরে সরে যান । এছাড়া শরীরের কোথাও বিছে দংশন করলে প্রাথমিকভাবে ওই জায়গায় শক্তভাবে একটি কাপড়ের টুকরো বেঁধে রাখুন যাতে হৃৎপিণ্ডে বিষ পৌঁছাতে না পারে । তারপর চিকিৎসার জন্য দ্রুত হাসপাতালে যান ।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিনিধি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন,বিছের দংশনের কারনে ৮৯ জনকে আসওয়ান বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । এছাড়া স্থানীয় হাসপাতালে শতাধিক অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা চলছে । তিনি বলেন, ‘বিছের দংশনে অসুস্থদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের ছুটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে । প্রত্যন্ত অঞ্চলের চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতে অ্যান্টি-ভেনমের অতিরিক্ত ডোজ বরাদ্দ করা হয়েছে ।
এদিকে আসওয়ানের গভর্নর আশরাফ আতিয়া অস্থায়ীভাবে নীল নদ এবং নাসের হ্রদে জাহাজগুলিকে শহরের খুব কাছাকাছি ভ্রমণ করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিয়েছিলেন । ঝড়বৃষ্টির কারনে দৃশ্যমানতা কম থাকায় কিছু রাস্তা সাময়িকভাবে বন্ধের নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি । শেষে শনিবার থেকে সড়ক ও নৌযান চলাচল শুরু হয় ।
সরকারি তরফ থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে দূরে থাকার এবং অনেক গাছ আছে এমন জায়গা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে । ভারী বৃষ্টিপাত, ধূলিঝড় এবং তার সঙ্গে তুষারপাতের কারনে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে মিশরের একাংশে । আসওয়ানের স্কুলগুলোও শিক্ষার্থীদের জন্য বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মিশরের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে,আগামী কয়েক দিন ভারী বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বজ্রপাত জারি থাকবে ।।