এইদিন ওয়েবডেস্ক,বর্ধমান,১৯ জুন : জেলা ও ব্লক কমিটি গঠন নিয়ে দলীয় নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে দলীয় কর্মীদের ‘বসে যাওয়া’র বার্তা দিয়েছেন বিজেপির বীরভূম জেলার নেতা দুধকুমার মণ্ডল । এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তাঁকে ‘বড় নেতা’ বলে কটাক্ষ করলেন । ফলে ফের একবার গেরুয়া শিবিরের আভ্যন্তরীণ কলহ সামনে এল ।
প্রসঙ্গত, রবিবার দুধকুমার মণ্ডল ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন । তাতে লিখেছেন, ‘আমার সঙ্গে আলোচনা না করেই জেলা থেকে ব্লক কমিটি কমিটি গঠন করা হয়েছে । তাই ভারতীয় জনতা পার্টির সমর্থক এবং কার্যকর্তাগণ যারা আমাকে যারা ভালোবাসেন তারা চুপচাপ বসে যান ।’ এদিকে এদিন বর্ধমান এসেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । সাংবাদিকরা তাঁকে এনিয়ে প্রশ্ন করলে সুকান্ত বলেন,’পার্টির সংবিধানে কোথাও লেখা নেই দুধকুমার মণ্ডলের সঙ্গে আলোচনা করে কমিটিগুলো তৈরি করতে হবে । কিছু মানুষ মনে করে আমরা বড় নেতা হয়ে গেছি। আদতে পার্টির বাইরে আমাদের কারো কোনো অস্তিত্ব নেই । পার্টি ছাড়া প্রত্যেকে আমরা বিগ জিরো । সেটা অনেকে ভুলে যায় ।’
এদিন পূর্ব বর্ধমান জেলা পার্টি অফিসে কর্মী বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন সুকান্ত মজুমদার । বৈঠকের ফাঁকে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন । সাংবাদিকরা তাঁকে দিলীপ ঘোষের কর্মসূচি ‘দিলীপকে বলো’ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে সুকান্ত বলেন, ‘বিজেপির রাজ্য সভাপতি হিসাবে আমি বলেছিলাম যারা টাকা দিয়ে চাকরি পাননি বা ভুয়ো চাকরি পেয়েছেন তাদের বিজেপি পার্টি অফিসে যোগাযোগ করে পুলিশে অভিযোগ জানাতে । দিলীপদা তার ইমেল আইডি দিয়ে তার কাছেও অভিযোগ জানাতে বলেছেন, এতে অসুবিধার কিছু নেই। রাজ্য সভাপতি যে কথা বলেছিলেন উনি সেই কাজই করছেন ।’ পাশাপাশি তিনি বলেন,’দিলীপদা আমাদের রাষ্ট্রীয় সহসভাপতি । সুতরাং বিজেপিতে তাঁর সম্মান আছে সম্মান থাকবেও । এরাজ্যে বিজেপিকে প্রতিষ্ঠিত করার পিছনে অনেকের সাথে সাথে দিলীপদারও ভূমিকা আছে ৷’
তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের অনুষ্ঠানে শিল্পীদের খরচ প্রসঙ্গে সৌগত রায়ের মন্তব্যর প্রেক্ষিতে এদিন সুকান্ত মজুমদার বলেন,’তৃণমূল কংগ্রেস তোলাবাজি করে চলে, এটা তো ওপেন সিক্রেট । নতুন কিছু নয় । ওনার হয়তো মনে হয়েছে বুড়ো বয়সে সত্যি কথাগুলো বলে যাই । বলছেন,ভালো । কিন্তু এখান থেকে তো তৃণমূল কংগ্রেস সরবে না । চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী ।’
পাশাপাশি ‘অগ্নিবীর প্রকল্প’ নিয়ে দেশ জুড়ে অশান্তির ঘটনা প্রসঙ্গে বিরোধীদলগুলোকে এক হাত নেন সুকান্ত । তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলগুলির উসকানিতে কিছু যুবক এই ধরনের কাজ করছে । যারা সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে ভারত মাতার সেবা করতে ইচ্ছুক, তারা ট্রেন বাস পোড়াতে পারে বলে আমার বিশ্বাস হয় না । স্বভাবতই এর পিছনে অন্য শক্তি আছে । রাজনৈতিক ইন্ধন আছে এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই কাজ করা হচ্ছে ।’ তিনি বলেন, ‘যেখানে ৪-৫ বছর ধরে এনসিসিতে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করতে পারছেন সেখানে সেনাবাহিনীতে ৪ বছর উপযুক্ত পারিশ্রমিক দিয়ে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে । পরে ওই কাজ শেষে অগ্নিবীর শংসাপত্র নিয়ে বেড়িয়ে এসে কাজ পেয়ে যাবেন । একথা বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি ঘোষণা করে দিয়েছে । আসাম জানিয়েছে অগ্নিবীর দের আসাম ব্যাটেলিয়নে সুযোগ দেওয়া হবে । কেউ বেকার থাকবেন না । বিরোধীরা মিথ্যা কথা বলে যুবকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে । আর জাতীয় সম্পত্তির ক্ষতি করা সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে ইচ্ছুক কোনো দেশপ্রেমিকের কাজ বলে আমার মনে হয় না ।’।