প্রদীপ চট্টোপাধ্যার,বর্ধমান,২৪ ফেব্রুয়ারী : শিক্ষকের আদর্শকে জলাঞ্জলী দিয়ে “সুরা’ ভক্ত বনে গিয়েছেন শিক্ষক জয়রাম কুমার সিং। তবে
তিনি বোধহর মামুলি ’সুরা’ ভক্ত হতে চান নি।তাঁর স্বপ্ন বোধহয় ছিল একজন প্রসিদ্ধ সুরাভক্ত হিসাবেই নিজেকে ছাত্র সমাজের কাছে তুলে ধরা।
সেই কাজে জয়রাম বাবু যে একশো শতাংশ সফল হতে পেরেছেন তার নিদর্শন শনিবারের বারবেলায় তিনি নিজেই দেখালেন তাঁরই স্কুলের ছাত্রদের।যা দেখে কার্যত চোখ ছানাবড়া অবস্থা হয়েযায় শহর বর্ধমানে শিবকুমার হরিজন বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়াদের।আর একেবারে স্কুলের গেটের সামনে মাতাল সহ-শিক্ষকের মাতলামি দেখে লজ্জায় মুখ লুকোলেন অন্য শিক্ষক শিক্ষিকারা।এক স্কুল শিক্ষকের এমন কীর্তিতে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
বর্ধমানে জেলাশাসকের অফিস ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ অফিস থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে অবস্থিত শিবকুমার হরিজন বিদ্যালয় প্রাথমিক স্তর থেকে শুরুকরে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পঠন পাঠনের ব্যবস্থা রয়েছে এই স্কুলে। জয়রাম কুমার সিং এই স্কুলেরই প্রাথমিক বিভাগের শিক্ষক।স্কুলের পড়ুয়াদের হিন্দি বিষয়ে পাঠ দানের দায়িত্ব তাঁরই।সেই শিক্ষকই এদিন মদ্যপ অবস্থায় গড়াগড়ি খেলেন স্কুলের গেটের সামনে।তা দেখে স্তম্ভিত হয়ে যায় পড়ুয়ারা।আর ক্ষোভে ফেটে পড়লেন অভিভাবকরা।
বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার মালিক বলেন,“আমাদের স্কুলের হিন্দি সাবজেক্টের শিক্ষক জয়রাম কুমার সিং দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন।
এই প্রথম অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় তিনি স্কুলে এমেন এমনটা নয়। উনি কয়েক বছর ধরেই এমন অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় স্কুলে আসছেন। উনাকে নিয়ে আমরা অন্য সকল শিক্ষকরাও খুব অসন্মানিত হচ্ছি। এমন বিষটি নিয়ে আগেও প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দাখিল হয়েছিল। সেবার জয়রাম ভুল স্বীকার করে ক্ষামা চেয়ে নেওয়ায় চেয়ারম্যান মার্জনা করেছিলেন। তার পরেও জয়রাম শোধরায় নি। এদিন তিনি আরো জঘন্য কাণ্ড ঘটালেন। তাই এদিনের ঘটনা সবিস্তারও আমি লিখিত ভাবে চেয়ারম্যাকে জানাচ্ছি। পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ ও স্কুলের মর্যাদার কথা ভবে চেয়ারম্যান এ বিষয়ে যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবেন“। এ নিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মধুসূদন ভট্টাচার্য্যকে ফোন করা হলে তিনি বলেন,’যা শুনছি তা কখনই কাম্য নয়।তবে সবিস্তার এখনও জানতে পারি নি। খোঁজ নিয়ে দেখছি ।’
বিদ্যালয়ের অপর শিক্ষক দেবলীনা চট্টোপাধ্যায় সহ বাকিরাও বলেন,’জয়রাম সিং এর কীর্তি কলাপে আমাদের মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।উনার কীর্তিকলাপের জন্যে শিক্ষক হিসাবে আমরাও লজ্জিত বোধ করছি। আমাদের শিক্ষকতা পেশাটাও অসন্মানিত হচ্ছে’। শিক্ষক জয়রাম সিং কে এদিন স্কুলের গেটের সামনে মাতলামি করতে দেখে পড়ুয়াদের অভিভাবক ও অভিভাবিকারও ক্ষোভে ফেটে পড়েন।তারাশঙ্কর রায়,সোমনাথ মণ্ডল সহ আরো অনেক অভিভাবক এদিন স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে শিক্ষক জয়রাম সিং এর শাস্তি দাবি করেন ।অভিভাবকরা সকলেই দাবি করেন,’জয়রাম সিং এর মত শিক্ষক এই স্কুলে থাকলে তার কু-প্রভাব স্কুলের পড়ুয়াদের উপরে পড়বে। জয়রাম বাবু শিক্ষকতার মত মহান পেশাকে কলঙ্কিত করছেন বলে অভিভাবকরা মন্তব্য করেন ।।