এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১১ ডিসেম্বর : বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার রাজৈর এলাকার ডাঃ অনেক আচার্য্য (৩৫) নামে এক চিকিৎসক প্রেমিকা মুন্নি আহমেদকে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন । গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাত্রি প্রায় ১১টা নাগাদ রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরের শিমুলতলা এলাকার নূর জাহান কমিউনিটি সেন্টারের তৃতীয় তলার ভাড়া বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। মৃত অনিক পার্শ্ববর্তী এক নম্বর ব্রিজ এলাকার সিটি হাসপাতাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের জরুরি বিভাগের (ডিএমএফ) চিকিৎসক ছিলেন। তিনি একই উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের গ্রাম্য চিকিৎসক অঞ্জন আচার্যের একমাত্র ছেলে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ।
জানা গেছে,প্রায় ৮ বছর ধরে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হিসেবে টেকেরহাট সিটি হসপাতালে কর্মরত ছিলেন ডাঃ অনেক আচার্য্য । ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা দেওয়ার জন্য টেকেরহাট নূর জাহান কমিউনিটি সেন্টারের তৃতীয় তলায় একটি ঘরে তিনি ভাড়া থাকতেন। একই সঙ্গে পাশের ঘরে থাকতেন ওই হসপাতালের এক্স-রে অপারেটর নৃপেন। সোমবার রাতে প্রতিদিনের মতো রোগী দেখার পর ঘরে ফেরেন অনিক৷ তখন নৃপেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের গানের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন ।
এদিকে ঘরে ফেরার পর ফেসবুক মেসেঞ্জারে ভিডিও কলে প্রেমিকা মুন্নি আহমেদের সঙ্গে অনেক আচার্য্যর ঝগড়াঝাটি হয় । সেই সময় ভিডিও কল চলাকালীন সিলিং ফ্যানের সঙ্গে একটা দড়ি বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়েন তিনি। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে নৃপেন এসে চা খাওয়ার জন্য তাকে ডাকতে যান। এসময় দরজা বন্ধ দেখে ডাকাডাকি করেও কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজার ফাঁকা দিয়ে দিয়ে তিনি অনিককে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান । সঙ্গে সঙ্গে তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে খবর দেন। খবর পেয়ে রাজৈর থানার পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেহটি উদ্ধার করে। মঙ্গলবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য মাদারীপুর জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায় ।
মৃত অনিকের মা চিনু আচার্য বলেন,বিয়ে করার আগে থেকেই ওই মেয়ের (মুন্নি) সাথে সম্পর্ক হয় আমার ছেলের । ওর জন্য আমার অনিক আত্নহত্যা করেছে, ওর ফাসি চাই, আর যেনো কোন মায়ের বুক এভাবে খালি না হয়।’ সিটি হাসপাতালের মালিকপক্ষ আনিসুর রহমান বলেন,’আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৮ থেকে ১০ বছর যাবত কাজ করছিলেন অনিক। প্রেমের সম্পর্কে জড়িত ছিলেন । গতকাল রাতে ওই প্রেমিকার সঙ্গে ঝগড়ার জেরে তাকে ভিডিও কলে রেখেই আত্মহত্যা করেছেন ।’ মাদারীপুরের রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ শেখ আমিনুল ইসলাম বলেন,’দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে যে প্রেমঘটিত কারণে মোবাইলে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করেছে। তবে কেউ বলছে কথিত স্ত্রী আবার কেউ বলছে প্রেমিকা। এ ঘটনায় একটা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে ।’।

