🌼 “সমং সর্বেষু ভূতেষু তিষ্ঠন্তং পরমেশ্বরম্ । বিনশ্বৎস্ববিনশ্যন্তং যঃ পশ্যতি স পশ্যতি ॥
সমং পশ্যন হি সর্বত্র সমবস্থিতমীশ্বরম্ ।
ন হিনস্ত্যাত্মনাত্মানং ততো যাতি পরাং গতিম্ ॥” (গীতা, ১৩/২৮-২৯)
‘বিনাশশীল সর্বভূতের মধ্যে অবিনাশী পরমেশ্বরকে যিনি সমভাবে অবস্থিত দেখেন, তিনিই যথার্থ দর্শন করেন ; কারণ, ঈশ্বরকে সর্ব সমভাবে অবস্থিত দেখিয়া তিনি নিজেকে হিংসা করেন না, সুতরাং পরমগতি প্রাপ্ত হন ।’
( বাণী ও রচনা, ৫ম সংস্করণ, ৫ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৮২-৮৩)
গীতায় ‘হৃষীকেশ’ অর্থাৎ ইন্দ্রিয় বা (ইন্দ্রিয়যুক্ত ) জীবাত্মাগণের ঈশ্বর কৃষ্ণ—‘গুড়াকেশ’কে অর্থাৎ নিদ্রার অধীশ্বর ( অর্থাৎ নিদ্রাজয়ী ) অর্জুনকে উপদেশ দিচ্ছেন। এই সংসারই ‘ধর্মক্ষেত্র’ কুরুক্ষেত্র। পঞ্চপাণ্ডব ( অর্থাৎ ধর্ম ) শত কৌরবের (আমরা যে সকল বিষয়ে আসক্ত এবং যাদের সঙ্গে আমাদের সতত বিরোধ তাদের) সঙ্গে যুদ্ধ করছেন। পঞ্চপাণ্ডবের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বীর অর্জুন ( অর্থাৎ প্রবুদ্ধ জীবাত্মা ) সেনাপতি । আমাদের সবচেয়ে আসক্তির বস্তু — সমুদয় ইন্দ্রিয়সুখের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে, তাদের মেরে ফেলতে হবে । আমাদের নিঃসঙ্গ হয়ে দাড়িয়ে থাকতে হবে। আমরা ব্রহ্মস্বরূপ, আমাদের আর সমস্ত ভাবকে এই ভাবে ডুবিয়ে দিতে হবে।
শ্রীকৃষ্ণ সব কাজই করেছিলেন, কিন্তু আসক্তিবর্জিত হয়ে। তিনি সংসারে ছিলেন বটে, কিন্তু কখনই সংসারের হয়ে যাননি। সকল কাজ কর, কিন্তু অনাসক্ত হয়ে কর ; কাজের জন্যই কাজ কর, কখনও নিজের জন্য করো না।
( বাণী ও রচনা, ৫ম সংস্করণ, ৪র্থ খণ্ড,পৃষ্ঠা ২১৭)