এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৩ নভেম্বর : গত ৪ নভেম্বর থেকে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর জন্য গননা ফর্ম বিতরণের কাজ শুরু হয়েছে । বুথ লেভেল অফিসাররা(বিএলও) বাড়ি বাড়ি ঘুরে গননা ফর্ম বিতরণের পর ফের সংগ্রহ করছেন । পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৪৫০৬ জন বিএলও বুধবার(১২ নভেম্বর) মধ্যরাত পর্যন্ত মোট ৯৮.৮৭% গননা ফর্ম বিতরণের কাজ সম্পূর্ণ করেছেন এবং আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৪.০০ টা পর্যন্ত জেলার বিএলওরা ৪১,৩৮,৯২০ (৯৯.০৫%) গণনার ফর্মের কিউমুলেটিভ বিতরণের রিপোর্ট করেছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন । কিন্তু এখানেই শেষ নয় বিএলও-দের কাজ । কারন স্বল্প সময়ের মধ্যেই এলাকার সমস্ত ভোটারদের তথ্য ডিজিটাইজেশনের কাজ পর্যন্ত বর্তেছে বিএলও-দের উপর । আর তাতেই ভেঙে পড়েছেন জেলার কাটোয়া এলাকার বিডিও-রা । আজ ডিজিটাইজেশনের প্রশিক্ষণের জন্য বিডিও অফিসে এসে কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েন । কেউ অতিরিক্ত চাপ দেওয়ার জন্য আত্মহত্যার হুমকি পর্যন্ত দেন ।
জানা গিয়েছে, কাটোয়া বিধানসভা এলাকায় মোট ১৫১ জন বি এল ও রয়েছেন। গননা ফর্ম বিলি এবং সংগ্রহ করার কাজ মোটামুটি শেষ করে ফেলেছেন তারা । এবারে তাদেরই ভোটারদের তথ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট অ্যাপে আপলোড করতে হবে ৷ তার আগে অ্যাপে আপলোড কিভাবে করতে হবে মূলত তার প্রশিক্ষণ দিতেই আজ কাটোয়া-১ বিডিও অফিসে বিএলও-দের ডাকা হয়েছিল। কিন্তু মিটিং হলের মধ্যেই তারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন ।
তাদের মধ্যে কাটোয়া শহরের ৭৯ নম্বর বুথের বি এল ও দেবাশীষ দাস বলেন,’আমার বুথে মোট ১০৯৩ জন ভোটার রয়েছেন। ফর্ম বিতরণ করে ফেলেছি । যথাসময়ে ফর্মগুলি জমা নেওয়ার কাজও করে ফেলব । কিন্তু এর মধ্যে যদি ডিজিটাইজশের কাজও আমাকেই করতে হয়, সেটা কি করে সম্ভব ? এতেই আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এর উপর ডিজিটাইজশের চাপ পড়লে আমাকে আত্মহত্যা করতে হবে।’ একথা বলেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন । ডিজিটাইজশের জন্য ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি ।
গোয়াই গ্রামের ৩ নম্বর বুথের বি এল ও পঙ্কজ কোনার জাজিগ্রামের ৯ নম্বর বুথের বি এল ও অমিত দাসরাও ডিজিটাইজশের দায়িত্ব বিএলও-দের উপরে পড়লে মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হবে বলে জানান। তারা বলেন,’আমাদের অনেকেই কম্পিউটারে তেমন অভ্যস্ত নই । এছাড়া,আমাদের এলাকায় ইন্টারনেট সবসময় কাজ করে না। এই পরিস্থিতিতে এত অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যক ভোটারের তথ্য আপলোড আমরা কিভাবে করব ?’ পঙ্কজ বাবু জানিয়েছেন যেমন তাঁর বুথেই ১৩১৩ ভোটার রয়েছেন । কাজের চাপে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারাও ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের ব্যবস্থা করার দাবি জানান।
এদিন কাটোয়া-১ বিডিও অফিসে বিএলও-দের প্রশিক্ষণে উপস্থিত ছিলেন কাটোয়া মহকুমাশাসক অনির্বাণ বসু সহ নির্বাচন কমিশনের অন্যান্য প্রতিনিধিরা । মহকুমাশাসক বলেন,’বিএলও-রা তাঁদের অসুবিধার কথা জানিয়েছেন। আমি তাঁদের কথা শুনেছি। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের যা নির্দেশ আছে সেই নির্দেশের বিষয়টিও বিএলও-দের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও জানান যে কাজের চাপে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি তথ্য প্রমাণ জমা দিলে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হবে । এরপর স্বাস্থ্য বিভাগ যাচাই করে প্রশাসনকে রিপোর্ট দেওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।।
The report was written by Dibyendu Roy. He has been a journalist for more than two decades, previously in a newspaper and currently in the “Eidin” news portal.

