এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০২ এপ্রিল : গত মঙ্গলবার ফ্রান্সে পুলিশের গুলিতে এক মুসলিম কিশোরের মৃত্যুর পর থেকে সেদেশে হিংসা শুরু হয়েছে । জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বহু ঘরবাড়ি ও গাড়ি । কিন্তু কিছুতেই সেদেশের মুসলিম শরনার্থীদের হিংসা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না পুলিশ । এদিকে ফ্রান্সের হিংসার মুহুর্তের একটা ভিডিও নিজের ফেসবুক পেজে শেয়ার করে এরাজ্যে সিএএ লাগু করার দাবি তুললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ ।
ওই ভিডিওর সাথে দিলীপবাবু লিখেছেন,’ফ্রান্স তার উদার নীতির জন্য মধ্যপ্রাচের মুসলিম দেশগুলো থেকে শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল। আজ সেই শরণার্থীরাই ফ্রান্সের গলার কাঁটা। এই কুর্দিশ মুসলিমরাই বিশ্বকাপের সময় ভাঙচুর চালিয়েছিল। আবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। শুধু ফ্রান্সই নয় ইউরোপের বাকি দেশগুলির একই অবস্থা। এর থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। সিএএ কেন জরুরি তা বোঝা উচিত।’
গত মঙ্গলবার(২৭ জুন ২০২৩) রুটিন ট্রাফিক কন্ট্রোল চলাকালীন এক ১৭ বছরের মুসলিম কিশোরকে পোলান্ডের নম্বর প্লেট লাগানো গাড়ি চালাতে দেখে ফ্রান্সের নান্টেরের পুলিশ । ভুল ট্রাক দিয়ে গাড়ি চালানো কিশোরকে গাড়ি দাঁড় করাতে বললেও সে রাজি হয়নি । শেষে সম্ভাব্য বিপদের আশঙ্কায় পুলিশ তাকে গুলি করে । পুলিশের দাবি মৃত কিশোরের কাছে কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স পর্যন্ত ছিল না । এদিকে গুলি চালানোর ভিডিও করে কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে নান্টেরসহ প্যারিস জুড়ে হিংসার আগুন ছড়িয়ে পড়ে । পঞ্চম দিনেও হিংসার আগুন কমার নামই নিচ্ছে না । শনিবার রাতে প্যারিসের ল’হে-লেস-রোজেস শহরের মেয়র ভিনসেন্ট জিনব্রুনের বাড়িতে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে দাঙ্গাকারীরা । ঘটনার কথা জানিয়ে মেয়র টুইট করেছেন যে তার পরিবার যখন ঘুমাচ্ছিল, তখন বিক্ষোভকারীরা তাদের আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল এবং একটি গাড়ি তাদের বাড়িতে ঢুকিয়ে দেয় । তাতে তার স্ত্রী ও এক সন্তান আহত হয়েছে ।
এদিকে ফ্রান্সের বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবেশী দেশ সুইজারল্যান্ডের লুসানে । সেখানে কিছু দোকানে পাথর ছোড়ার পর ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই কিশোর। রবিবার এই তথ্য জানিয়েছে লুসানের পুলিশ । পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে যে শনিবার সন্ধ্যায় পশ্চিম সুইজারল্যান্ডের ফরাসিভাষী লুসানের কেন্দ্রীয় এলাকায় ১০০ জনেরও বেশি লোক জড়ো হয়েছিল। ফ্রান্সে হিংসার বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদনের পর তারা জড়ো হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ ।
পুলিশ জানিয়েছে,দাঙ্গাকারীদের ছোড়া পাথর এবং পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের কারণে বেশ কয়েকটি দোকানের জানালার কাঁচ ভেঙে গেছে এবং একটি দোকানের দরজা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । পুলিশ বলেছে যে ধৃতরা পর্তুগাল, সোমালিয়া, বসনিয়া, সুইজারল্যান্ড, জর্জিয়া এবং সার্বিয়ার নাগরিক । ধৃতদের মধ্যে ১৫ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে ৬ জন কিশোর, তিনজন মেয়ে এবং তিনজন যুবক রয়েছে । পুলিশ জানিয়েছে, তারা ২৪ বছর বয়সী এক সুইস নাগরিককেও আটক করেছে । এ ঘটনায় কোনো পুলিশ কর্মকর্তা আহত হননি ।।