এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৬ ফেব্রুয়ারী : বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে বুধবার থেকে হামলা চালাচ্ছে ইসলামি কট্টরপন্থীরা । বাড়ির অর্ধেকের বেশি গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার থেকে বাড়িতে থাকা বই, বিভিন্ন আসবাবপত্র, লোহা, ভাঙা গ্রিল, কাঠ- যে যার মতো যা পারছে লুটপাট চালায় । বাংলাদেশের এই ঘটনাকে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের জন্য সতর্কবার্তা হিসাবে দেখছেন বিজেপির দিলীপ ঘোষ ও অগ্নিমিত্রা পালেরা । দিলীপবাবু বাংলাদেশের মৌলবাদী আর তৃণমূলকে একই তালিকায় রেখে মমতা ব্যানার্জি পশ্চিমবঙ্গকে ‘বাংলাদেশ বানাতে চাইছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন । অন্যদিকে এপার বাংলার হিন্দুদের একজোট হওয়ার বার্তা দিয়েছেন অগ্নিমিত্রা পাল ।
রাজ্যের এই দুই বরিষ্ঠ বিজেপি নেতা বাংলাদেশের চলতি ঘটনাক্রম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন । দিলীপ ঘোষ লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের মৌলবাদী আর তৃণমূলের মধ্যে কোনও তফাৎ নেই । বাংলাদেশে জেসিবি দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত বাসভবন। এই রাজ্যেও বারবার বিরোধী দল করার অপরাধে আমাদের বিজেপি কার্যকর্তদের বাড়ি এভাবেই দুরমুশ করেছে তৃণমূল । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্রয়ে বাংলাদেশিরা পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ বানাতে চাইছে, জামাত এবং তৃণমূল একই পথের পথিক। তৃণমূল ইসলামিক মৌলবাদী মানসিকতাকে ববি হাকিমের মত লোকদের মাধ্যমে শক্তিশালী করছে।’
পাশাপাশি অগ্নিমিত্রা পাল লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে ধ্বংসলীলা চলছে।ইউনুস সরকারের নির্দেশেই এই নিন্দনীয় ঘটনা ঘটছে।বাংলাদেশের পরিস্থিতি দেখে স্পষ্ট সেখানে বর্তমান ইউনুস সরকারের অধীনে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর নির্যাতন কতটা উদ্বেগজনক।উগ্র মৌলবাদীদের আক্রান্তের মুখে হিন্দুরা।মৌলবাদীরা জোর করে হিন্দুদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করছে।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের মতন পরিস্থিতি পশ্চিমবঙ্গেও।এখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির শাসনে হিন্দুদের দূর্গা পুজো থেকে শুরু করে সরস্বতী পুজোয় বাঁধা দেওয়া হচ্ছে।একের পর এক হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি ভাঙা হচ্ছে।মমতার দলদাস পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।মমতা ব্যানার্জীর সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতির কারণেই বাংলার হিন্দুদের এই অবস্থা।বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে সকল সনাতনী হিন্দুদের একজোট হয়ে আন্দোলন আরও তীব্র করতে হবে।’
প্রসঙ্গত,শেখ হাসিনার অনলাইন ভাষণের পর ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ‘বুলডোজার মিছিল’ কর্মসূচি কেবল সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। হাসিনার ৩২ নম্বরের পৈতৃক বাড়িও গুড়িয়ে দেওয়ার মধ্যেই বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে আগুন দেওয়া হয় মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ধানমন্ডি ৫-এ বাসভবন সুধা সদনে। বুধবার রাতে দেওয়া আগুন বৃহস্পতিবার সকালেও ভবনটির কোথাও কোথাও জ্বলতে দেখা গেছে। দুপুরে বাড়িটির ভেতরে প্রচণ্ড তাপের মধ্যেই সেখান থেকেও যে যার মতো রড, সোফা, চেয়ার, টেবিলসহ আধপোড়া বিভিন্ন আসবাব, এসি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন জিনিসপত্রের ভাঙা অংশ, তার লুটপাট চালাতে দেখা গেছে লোকজনকে । বর্তমানে চুড়ান্ত নৈরাজ্য পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কোনো ভূমিকাই লক্ষ্য করা যাচ্ছে না তদারকি সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুসের মধ্যে । তার নির্দেশ না পেয়ে নিরাপত্তা বাহিনী হাত গুটিয়ে বসে আছে । ফলে বিনা বাধায় চলছে লুটপাট ও নাশকতা ।।