প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ জানুয়ারি : গ্রাম বাংলার মানুষের মনে ক্ষোভের আগুন যে এইভাবে ধিকিধিকি জ্বলছিল তা বোধহয় ঘুনাক্ষরেও টের পান নি দিদির দূতেরা।পঞ্চায়েত ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে হওয়া দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসতেই সেই আগুনে যেন ঘৃতাহুতি পড়েছে।তার জেরে দিদির সুরক্ষা কর্মসূচীকে সামনে রেখে দিতির দূতেরা যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই তাঁদের মানুষের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে।পাহাড় থেকে সমতল বীরভূম থেকে বর্ধমান সর্বত্র এই বিক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেচলেছে। যেমনটা শনিবার পূর্ব বর্ধমানের গলসির কুরকুবা গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন এলাকার বিধায়ক নেপাল ঘড়ুই।বিক্ষোভ সীমাহীন পর্যায়ে পৌছানোয় শেষ পর্যন্ত কর্মসূচী লাটে তুলে রেখেই গ্রাম ছাড়েনপ্ তৃণমূল বিধায়ক।শাসকদলের নেতা ও বিধায়কদের প্রতি সাধারণ মানুষের এমন ক্ষোভ দেখে বেজায় উৎফুল্ল বিরোধী শিবির ।
বিধানসভা ভোটের পর এবার পঞ্চায়েত ভোটেও জয় সুনিশ্চিৎ করতে একাধীক কর্মসূচী ঘোষণা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব । তেমনই একটি কর্মসূচী হল দিদির সুরক্ষা কর্মসূচী । দিদির দূত হয়ে এদিন সেই কর্মসূচী নিয়ে গলসির জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে গিয়েছিলেন এলাকার বিধায়ক নেপাল ঘড়ুই । আর বিধায়ককে কাছে পেয়েই ক্ষোভ উগড়ে দেন গ্রামের বাসিন্দারা।গ্রামবাসী দীপক দাস ,আশা লোহার সহ আরো অনেকে বলেন,বিধানসভা ভোটের সময়ে গ্রামে এসে নেপাল ঘড়ুই গ্রামবাসী দের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে যান । কিন্তু ভোটে জিতে যাবার পর নেপাল ঘড়ুই ঠিক তার উল্টোটাই করেন। বিধায়ককে আর এলাকায় দেখা যায় নি। শুধুমাত্র ব্যানার ও পোষ্টারেই বিধায়কককে এলাকায় দেখা যায়। এমনকি বিভিন্ন সমস্যা ও অভাব অভিযোগের কথা বিধায়ককে জানানো হলেও বিধায়ক সুরাহার কোন ব্যবস্থা করেন নি। গ্রামের মানুষ আবাস যোজনায় বাড়ি পায়নি,অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্নার মান খারাপ।রাস্তাঘাট বেহাল,পানীর জলের ব্যবস্থা নেই তবুও বিধায়কের হেলদোল নেই বলে গ্রামবাীদের অভিযোগ ।
দেখুন ভিডিও :-
এই বিষয়ে দলীয় কর্মীদের একাংশ অভিযোগে বলেন ,গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য এমনকি দলীয় কর্মীদের না জানিয়েই বিধায়ক গ্রামে গিয়েছিলেন। সেটাই কাল হয়েছে । এলাকার তৃণমূল কর্মী তথা পঞ্চায়েত সদস্যা পাপিয়া লোহারের স্বামী মন্টু লোহার বলেন,’বিধায়ক এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যকে না জানিয়েই গ্রামে আসেন। ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য ও এলাকার তৃণমূল কর্মীদেরর জানিয়ে এলেই ভালো করতেন ।’
বিধায়ক নেপাল ঘড়ুই অবশ্য বিক্ষোভের বা ঝামেলা অশান্তির কথা মানতে চান নি । তিনি দাবি করেন, “গ্রামে তিনি গেলে এলাকার বাসিন্দারা জড় হন।তারা ১০০ দিনের কাজ না পাওয়া নিয়ে অভিযোগ করেন।পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী মন্টু লোহার গোষ্ঠী কোন্দলের কারণে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে দলের কেউ কেউ অভিযোগ তুললেও বিধায়ক তা মানেন নি“। একই ভাবে বিধায়কের সুরেই সুর মিলিয়ে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, খোঁজ নিয়ে জেনেছি ওই গ্রামের মানুষ তাদের সমস্যার কথা,১০০ দিনের কাজ বন্ধ থাকার কথা বিধায়ককে বলছেন। ওখানে কোন বিক্ষোভ হয় নি।যদিও জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,’দিদির রক্ষা কবচের পরিবর্তে এখন তৃণমূল নেতাদের রক্ষা কবচ প্রয়োজন।রাজ্যে এখন প্রতিদিনই তৃণমূলের নেতা , বিধায়ক ও সাংসদ দের বিক্ষোভের মুখে পড়ার ঘটনা ঘটছে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।তৃণমূল নেতারা একশো শতাংশ দুর্নীতি পরায়ণ বলেই তাদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে ।’।