এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২২ মে : পাসপোর্ট জালিয়াতি-কাণ্ডে ধৃত পাকিস্তানি চর আজাদ মল্লিকের স্ত্রী সুচন্দ্রা বিশ্বাসের রহস্যজনক ভাবে মৃত্যুর ঘটনায় উঠছে একাধিক প্রশ্ন । বিয়ের ঠিক ২ বছরের মাথায় ২০২২ সালে বিরাটির ভাড়া বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল সুচন্দ্রা বিশ্বাসের অগ্নিদগ্ধ দেহ ৷ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের(ইডি) সন্দেহ আজাদের পাকিস্তানি পরিচয় জানতে পারার কারনেই স্ত্রীকে সে পুড়িয়ে মেরে ফেলেছিল। কিন্তু সুচন্দ্রা বিশ্বাসের রহস্যজনক ভাবে মৃত্যুর পরেও কেন তার পরিবার মুখ বন্ধ করে আছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে । আজাদ তাদের হুমকি দেখিয়ে মুখ বন্ধ করে দিয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে ইডি ।
উত্তর ২৪ পরগনার বিরাটির বাকড়া মোড়ে ভাড়া বাড়ি থেকে জাল পাসপোর্ট চক্র চালাচ্ছিল পাকিস্তানি আজাদ মল্লিক । চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ইডি তাকে গ্রেফতার করার পর উঠে আসে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য । ইডি জানতে পারে যে সে আদপে পাকিস্তানি নাগরিক ৷ তার আসল নাম আজাদ হোসেন। প্রায় ১২-১৩ বছর আগে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ হয়ে ভারতে ঢুকেছিল আজাদ । বাংলাদেশে তার এক স্ত্রী রয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে এসে সে ২০২০ সালে সুচন্দ্রা বিশ্বাসকে বিয়ে করে । হিন্দু শাস্ত্রমতে মন্দিরে গিয়েই ওই মহিলাকে বিয়ে করে সে ৷ তদন্তে ইডি জানতে পারে যে স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির পরিচয়পত্র ব্যবহার করে আজাদ মল্লিক নামে সে ভোটার কার্ড তৈরি করেছিল । দু’বার ভোটও দিয়েছে সে । প্রথমবার ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন এবং দ্বিতীয়বার ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সে ভোট দিয়েছে ।
শুধু জাল পাসপোর্ট তৈরি বা হাওয়ালা কারবার নয়,ভারতের বিরুদ্ধে আরও কোনও গভীর ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকতে পারে আজাদ । তদন্তকারী দলের অনুমান, ভারতে সে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই -এর চর হিসাবে কাজ করছিল ।আজাদের গতিবিধি জানতে ইতিমধ্যে তাকে বেশ কয়েকবার জেরা করেছে এনআইএ । তদন্তে একাধিক প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যাচ্ছেন আজাদ । তদন্ত সহযোগিতা করছেন না সে । তদন্তকারীরা বলছেন, এই ধরনের প্রশিক্ষণ, অর্থাৎ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে কায়দা করে এড়িয়ে যাওয়ার দক্ষতা, তা সাধারণত গুপ্তচর কিংবা এজেন্টদের দেওয়া হয়ে থাকে । তাই আজাদ মল্লিক বা আজাদ হোসেনের আইএসআই-এর চর হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলের আধিকারিকরা । তবে সে ভারতের বিরুদ্ধে ঠিক কি ধরনের ষড়যন্ত্র চালাচ্ছিল তা এখনো স্পষ্ট নয় ।।

