ওঁ পার্থায় প্রতিবোধিতাং ভগবতা নারায়ণেন স্বয়ং
ব্যাসেন গ্রথিভাং পুরাণমুনিনা মধ্যেমহাভারতম্ ।
অদ্বৈতামৃতবর্ষিণীং ভগবতীমষ্টাদশাধ্যায়িনীম্
অস্ব ত্বামনুসদধামি ভগবদ্গীতে ভবদ্বেষিণীম্ ॥
নমোঽস্তু তে ব্যাস বিশালবুদ্ধে ফুল্লারবিদায়তপত্রনেত্র
যেন ত্বয়া ভারততৈলপূর্ণঃ প্ৰজ্বালিতে ৷ জ্ঞানময়ঃ প্রদীপঃ ॥
হে জননী ভগবদ্গীতা, আপনি স্বয়ং ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণ-
কর্তৃক অর্জুনকে কথিতা, প্রাচীন মহর্ষি ব্যাসদেবকর্তৃক মহাভারতের মধ্যে ভীষ্মপর্বে (২৫ হইতে ৪২ পর্যন্ত আঠার অধ্যায়ে) গ্রথিতা, অষ্টাদশ অধ্যায়রূপিণী, অদ্বৈততত্ত্বরূপ-অমৃতবর্ষিণী ও সংসারনাশিনী ভগবতী, আমি আপনার ধ্যান
করি।
হে মহামতি ব্যাসদেব, আপনার নয়নযুগল প্রস্ফুটিত-
পদ্মপত্রসদৃশ বিশাল, আপনি মহাভারতরূপ তৈলপূর্ণ জ্ঞানময় প্রদীপ প্রজ্বালিত করিয়াছেন, আপনাকে প্রণাম করি ।
প্রপন্নপারিজাতায় তোত্ৰবেত্রৈকপাণয়ে।
জ্ঞানমুদ্রায় কৃষ্ণায় গীতামৃতদুহে নমঃ ॥
সর্বোপনিষদো গাবো দোগ্ধা গোপালনন্দনঃ।
পার্থো বৎসঃ সুধীর্ভোক্তা দুগ্ধং গীতামৃতং মহৎ ॥
বসুদেবসুতং দেবং কংসচাণূরমর্দনম্ ।
দেবকীপরমানন্দং কৃষ্ণং বন্দে জগদগুরুম্ ॥
শরণাগতের কল্পবৃক্ষতুল্য, অশ্বচালনহেতু এক হস্তে চাবুকও লাগামধারী, গীতারূপ অমৃতদোহনকারী ও জ্ঞানমুদ্রা-যুক্ত ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণকে প্রণাম করি।
উপনিষদাবলী গাভীসমূহ, সেই-সকল গাভীর দোগ্ধা
শ্রীকৃষ্ণ, বৎস অর্জুন, মহাদুগ্ধ অমৃতময়ী গীতা এবং বিবেকিগণইএই দুগ্ধের পানকর্তা।
কংস ও চাণুর নামক দৈত্যদ্বয়-বিনাশী, জননী দেবকীর পরমানন্দদায়ক, বসুদেবপুত্র জগদ্ গুরু ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণকে বন্দনা করি।
ভীষ্মদ্রোণতটা জয়দ্রথজলা গান্ধারনীলোপলা,
শল্যগ্রাহবতী কৃপেণ বহনী কর্ণেন বেলাকুলা।
অশ্বত্থামবিকর্ণঘোরমকরা দুর্যোধনাবর্তিনী,
সোত্তীর্ণা খলু পাণ্ডবৈ রণনদী কৈবর্তকে কেশবে ॥
কুরুক্ষেত্রযুদ্ধরূপ যে নদীতে ভীষ্মদ্রোণরূপ তীরদ্বয়,
জয়দ্রথরূপ জল, গান্ধাররাজরূপ (পিচ্ছিল) নীল প্রস্তর,শল্যরূপ কুম্ভীর, কৃপরূপ খরস্রোত, কর্ণরূপ উত্তাল তরঙ্গ,অশ্বত্থামা ও বিকর্ণরূপ ভয়ঙ্কর মকরদ্বয় এবং দুর্যোধনরূপ আবর্ত ছিল, ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণ কর্ণধার হওয়ায় পাণ্ডবগণ সেই রণনদী নিশ্চিতরূপে উত্তীর্ণ হইয়াছিলেন ।
পারাশর্যবচঃসরোজমমলং গীতার্থগন্ধোৎকটং
নানাখ্যানককেশরং হরিকথাসম্বোধনাবোধিতম্।
লোকে সজ্জনষটুপদৈরহরহঃ পেপীয়মানং মুদ্রা
ভুয়াদভারতপঙ্কজং কলিমলপ্ৰধ্বংসি নঃ শ্রেয়সে।
মুকং করোতি বাচালং পঙ্গুং লঙ্ঘয়ভে গিরিম্।
যৎকৃপা তমহং বন্দে পরমানন্দমাধবম্ ॥
পরাশরপুত্র ব্যাসদেবের বাক্যরূপ সরোবরজাত, হরি-কথা-প্রসঙ্গ দ্বারা প্রস্ফুটিত, নানা আখ্যানরূপ কেশরযুক্ত, যে পদ্মের মধু এই জগতের সজ্জনরূপ ভ্রমরগণ নিত্য পান করেন,কলিকলুষনাশক, গীতারূপ তীব্রসুগন্ধযুক্ত অমল মহাভারতরূপ সেই পদ্ম আমাদের কল্যাণের কারণ হউক।
যাঁহার কৃপায় বাকশক্তিহীন বাগ্মী হয় এবং পঙ্গু গিরি
লঙ্ঘন করে, আমি সেই পরমানন্দস্বরূপ মাধবকে বন্দনা করি।
ষং ব্রহ্মাবরুণেন্দ্ররুভ্রমরুত: স্তুন্বন্তি দিব্যৈ: স্তবৈ-
বেদৈ: সাঙ্গপদক্রমোপনিষদৈর্গায়ন্তি যং সামগাঃ।
ধ্যানাবস্থিততদ্গতেন মনসা পশ্যন্তি যং যোগিনো
যস্যান্তং ন বিদুঃ সুরাসুরগণা দেবায় তস্মৈ নমঃ ॥
ব্রহ্মা,বরুণ,ইন্দ্র, রুদ্র ও মরুৎগণ দিব্য স্তব দ্বারা
যাঁহার স্তব করেন, সামগায়কগণ অঙ্গ, পদক্রম ও উপনিষৎ সহিত বেদ দ্বারা যাঁহার মহিমা গান করেন, যোগিগণ ধ্যানে তগতচিত্ত হইয়া যাঁহাকে দর্শন করেন এবং দেবাসুরগণও যাঁহার চরম তত্ত্ব অবগত নহেন, সেই পরম দেবতাকে প্রণাম করি ।