এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,০৩ সেপ্টেম্বর : অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর পদক্ষেপ নিতে চলেছে মোদী সরকার । কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে তাদের নিজ নিজ এলাকায় অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশীদের জন্য আটক কেন্দ্র বা ডিটেনশন সেন্টার স্থাপন করতে বলেছে। যাদের নাগরিকত্ব সন্দেহজনক বা যারা বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ভারতে বসবাস করছেন তাদের এই কেন্দ্রগুলিতে রাখা হবে। নিজ দেশে নির্বাসন না দেওয়া পর্যন্ত তাদের এই আটক কেন্দ্রগুলিতে থাকতে হবে। তবে ধর্মীয় নিপিড়নের কারনে ভারতে পালিয়ে আসা , শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ছাড় দেওয়া হয়েছে ।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার(২ সেপ্টেম্বর), গেজেট বিজ্ঞপ্তির আওতায় রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে এই আদেশ জারি করেছে। গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, যদি কোনও ব্যক্তির নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহ থাকে, তাহলে সরকার বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টি বিদেশী ট্রাইব্যুনালে পাঠাতে পারেন। এই ট্রাইব্যুনালে বিচারিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ৩ জন সদস্য থাকবেন। এটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বিদেশী কিনা তাও নির্ধারণ করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, যদি কোনও ব্যক্তি তার বিদেশী না হওয়ার দাবির সমর্থনে কোনও প্রমাণ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হন এবং জামিন না পান, তাহলে তাকে হেফাজতে নেওয়া হবে। এরপর তাকে একটি আটক কেন্দ্রে রাখা হবে। এছাড়াও, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, যদি কোনও বিদেশী গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তাকে ভারতে প্রবেশ করতে বা থাকতে দেওয়া হবে না। এছাড়াও, কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনও বিদেশী ভারতের কোনও পর্বতের চূড়ায় আরোহণ করতে পারবে না।
এছাড়াও, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, যদি কোনও বিদেশী গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তাকে ভারতে প্রবেশ করতে বা থাকতে দেওয়া হবে না। আর একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে নেপাল বা ভুটানের নাগরিকদের স্থল বা আকাশপথে ভারতে প্রবেশের জন্য পাসপোর্ট এবং ভিসা দেখাতে হবে না। তবে এই সুবিধা চীন, ম্যাকাও, হংকং বা পাকিস্তান থেকে আসা এবং যাওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। এই বিধানটি তিব্বতিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে যারা ১৯৫৯ সালের পরে কিন্তু ৩০ মে ২০০৩ তারিখের আগে ভারতে এসেছেন।
একই সাথে, ধর্মীয় নিপীড়নের সম্মুখীন সংখ্যালঘুদেরও ছাড় দেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান সংখ্যালঘুদের এই ছাড় দেওয়া হয়েছে। যারা ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে ভারতে আশ্রয় নিতে এসেছেন এবং ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত ভারতে প্রবেশ করেছেন তাদের বৈধ বা অবৈধ নথিপত্রের ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নতুন গেজেট নোটিফিকেশন অনুযায়ী —
৩১শে ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত যারা বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন এবং যাদের পাসপোর্ট বা ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনও আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।তারা নিরাপদে ভারতে থাকতে পারবেন । এমনকি ভবিষ্যতে CAA (Citizenship Amendment Act) এর মাধ্যমে নাগরিকত্বের আবেদন করার সুযোগও তাদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।।