জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গলসি(পূর্ব বর্ধমান), ২৫ মে :কিছু বুঝে ওঠার আগেই চোখের নিমেষে সব শেষ। করোনা অতিমারির পর সব কিছু যখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে ঠিক তখনই বিধ্বংসী আগুন স্থায়ী,অস্থায়ী মিলে প্রায় তিনশটি পরিবারকে কার্যত পথে বসিয়ে দিয়ে গেল। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের গলসির এলাকার ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে ২ নং জাতীয় সড়কের পাশে গলসির ভাসাপুলের কাছে রয়েছে বেসরকারি ভোজ্য তেলের ওই কারখানাটি । এখানে মূলত ধানের তুষ থেকে ভোজ্য তেল উৎপন্ন হয়। কারখানার কিছু টেকনিক্যাল কাজের জন্য গত দশ পনেরো দিন ধরে উৎপাদন বন্ধ আছে। ফলে কারখানাটি কার্যত শ্রমিক শূন্য ছিল। মাত্র কয়েকজন একটু দূরে শ্রমিক আবাসনে ছিল। আবার সাময়িক উৎপাদন বন্ধ থাকার জন্য কারখানার বিশাল গুদাম ঘরটি ছিল কাঁচামালে পরিপূর্ণ ।
এই পরিস্থিতিতে গত চব্বিশে মে আনুমানিক রাত সাড়ে দশটা নাগাদ কারখানায় আগুন লাগে। গ্রামীণ এলাকা হওয়ায় আশেপাশের বাসিন্দারা তখন নিদ্রার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেউ কেউ ঘুমিয়েও পড়েছে। হঠাৎ চারপাশ আলোয় আলোকিত দেখে কিছু উৎসাহী মানুষ বাইরে বের হয়ে দেখে কারখানায় ভয়াবহ আগুন লেগেছে। তাদের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে পাশের সিংপুর, ভাষাপুর, পুরসা প্রভৃতি গ্রাম থেকে ছুটে আসেন স্থানীয় মানুষজন। কারখানায় ভিতর থেকে বিশাল আকারে কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখে হকচকিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে হাজির হয় গলসি থানার পুলিশ।
দেখুন ভিডিও :
শুরু হয় আগুন নেভানোর প্রাথমিক কাজ। প্রথমে বুদবুদ থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। পরে বর্ধমান ও পানাগড় থেকে আরও তিনটি দমকলের ইঞ্জিন আসে। অবশেষে ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ আগুন কিছুটা আয়ত্তে এলেও বেলা পর্যন্ত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি ।
দমকলের এক আধিকারিক বললেন- যেহেতু ধানের তুষে আগুন লেগেছে তাই সম্পূর্ণ নেভাতে একটু বেশি সময় লাগছে। কারণ তুষের আগুন ধিকি ধিকি করে জ্বলে এবং অনুকূল পরিবেশ পেলেই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে।
দমকল ও পুলিশের প্রাথমিক অনুমান সর্ট সার্কিটের জন্য গুদামে মজুত থাকা তুষে আগুন লেগে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কারখানার ক্ষতি হলেও কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
কারখানার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘যথেষ্ট কষ্ট করেই কারখানাটি চালু রাখা হয়েছিল। আগুন যে ক্ষতিটা করে দিয়ে গ্যালো তাতে আমরা বেশ পেছিয়ে গেলাম। ভিতরে আগুন থাকার জন্য তিনি ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমান জানাতে পারেননি। তবে তার অনুমান কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’।