প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৬ জুন : পঞ্চায়েত প্রধান হওয়া সত্ত্বেও লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে উপার্জন করতেন বলে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ঝর্ণা রায়ের প্রশংসা করেছিলেন। কিন্তু তাতে আর কি যায় আসে । সেই ঝর্ণাই ব্রাত্য রয়ে গেলেন এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে । তাঁকে আর তৃণমূলের হয়ে পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিদ্বন্দিতা করার অনুমোদন তাঁকে দিল না দল । আর সেই রাগে দুঃখে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি-২ ব্লকের বিজুর-১ পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান ঝর্ণা রায় সদলবলে কংগ্রেসে যোগদান করলেন। যদিও শাসক দলের নেতৃত্ব দাবি ঝর্ণাকে নিয়ে দলের অন্য ভাবনা ছিল । কিন্তু তিনি হঠকারিতা করে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন ।
পঞ্চায়েত প্রধান হওয়া সত্ত্বেও উপার্জনের জন্য ঝর্ণা রায়ের লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করার খবর কয়েক মাস আগে সংবাদ মাধ্যম প্রকাশ্যে আনে। সেই খবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও মন কাড়ে। মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুরের সভা থেকে ঝর্ণার প্রশংসা করে তাঁকে মডেল হিসেবে তুলে ধরেন। তার পরেও দল এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঝর্ণাকে প্রার্থী না করায় কার্যতই হতাশ তাঁর অনুগামীরা।দলের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পেরে ঝর্ণা সহ শাতাধিক জন বৃহস্পতিবার বিকালে আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেস দলো যোগদান করেন ।
প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক অভিজিৎ ভট্টাচার্য এ বিষয়ে এদিন বলেন,’রাজ্য জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক পড়ে গেছে।
মেমারির বিজুরের যাঁরা টাকা তুলে তৃণমূল দলে দিতে পারেনি তাঁদের ওই দলে কোন সম্মান নেই।
ঝর্ণা রায়সহ যাঁরা কংগ্রেসে যোগদান করলেন তাঁরা এবার থেকে কংগ্রেসের হাতকে শক্তিশালী করবেন বলে আমার মত ।’ আর দলত্যাগী ঝর্ণা রায় সহ বাকিদের বক্তব্য,দল তাদের যোগ্য সম্মান দেয়নি । এমনকি দল আজ তাদের খোঁজ নেয় না। সেই জন্যই তাঁরা কংগ্রেস পতাকা হাতে তুলে নিয়ে কংগ্রেসের যোগদান করেছেন । ঝর্ণা রায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন,’মুখ্যমন্ত্রী আমাকে সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন । তবুও আমি সততার দাম পেলাম না ।’
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন,’দলে দু’টো দিক থাকে । একটা হল প্রশাসনিক আর একটা হল সাংগঠনিক । দল হয়ত ভেবে ছিল,ঝর্ণা রায়কে সাংগঠনিক কাজে লাগাবে।কিন্তু উনি তড়িঘড়ি দল ছেড়ে অন্য দলে চলে গেলেন । আমরাও তার কাজের প্রসংশা করি । মুখ্যমন্ত্রীও তার কাজের প্রসংশা করেছিলেন ।’।

