এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,১৩ সেপ্টেম্বর : রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের নিয়ে বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না । শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, রেশন দুর্নীতির পর এবারে আন্তরাজ্য জাল নোট পাচার চক্র চালানোর মত মারাত্মক অপরাধে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতার নাম জড়িয়েছে । আন্তরাজ্য জাল নোট পাচার চক্রের মূল পান্ডা মালদার মোস্ট ওয়ান্টেড তৃণমূল নেতা আসাদুল্লাহ বিশ্বাসকে (Asadulllah Biswas) গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ । মধ্য দিল্লির দিল্লির নবী করিম থানা এলাকার একটি হোটেল আত্মগোপন করেছিল ওই তৃণমূল নেতা । বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সেন্ট্রাল) এম হর্ষবর্ধনের নেতৃত্বে একটি দল হানা দিয়ে তাকে পাকড়াও করে ।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে ডিসিপি সেন্ট্রাল, এম হর্ষ বর্ধন বলেছেন,’কেন্দ্রীয় জেলার বিশেষ কর্মীরা মধ্য দিল্লির নবী করিম থানা এলাকার একটি হোটেল থেকে আসাদুল্লাহ বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে৷ আমরা তাকে গ্রেপ্তার করেছি গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যে একজন ব্যক্তি মালদা জেলায় ওয়ান্টেড ৷ পশ্চিমবঙ্গের একটি হত্যা মামলায় আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারি যে ১৮ আগস্ট একটি দাঙ্গা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিটির বিরুদ্ধে এনআইএ এবং ইডির অধীনে ৫০ টিরও বেশি ফৌজদারি মামলা রয়েছে তাদের বেশিরভাগই জঘন্য অপরাধ সংক্রান্ত । আমরা ৬ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছি, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ তার হেফাজতে চাইছে যা সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দেওয়া হবে।’
চলতি বছরের ১৮ আগস্ট মালদহের কালিয়াচকের মোজমপুরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে অহেদুল শেখ নামে এক তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী খুন । আর ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে পুলিশের সামনেই । ওই ঘটনার মূল অভিযুক্ত ছিল আসাদুল্লাহ বিশ্বাস। ঘটনার পরেই চম্পট দেয় সে ৷ ওই ঘটনায় আসাদুল্লাহ-এর ছেলে সরফরাজ বিশ্বাস,মোজমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান মহাম্মদ সারিউলসহ মোট ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে কালিয়াচক থানার পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্ত আসাদুল্লাহ বিশ্বাসের হদিশ করতে পারেনি । অবশেষে দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হল ওই কুখ্যাত দুষ্কৃতী ।
প্রসঙ্গত,আসাদুল্লাহ বিশ্বাস, আগে সিপিএম-এর সাথে যুক্ত ছিল এবং ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিল । সিপিএমে থাকার সময় থেকেই আসাদুল্লাহ সীমান্ত পেরিয়ে গবাদি পশু-পাচার, মাদক পাচার,অস্ত্র চোরা চালান, মানব পাচার এবং জাল ভারতীয় মুদ্রায় চোরাচালানে জড়িত ছিল । প্রকৃতপক্ষে কালিয়াচকের ডন বলে পরিচিত আসাদুল্লাহ এলাকার সমস্ত অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করত । এমনকি নিজের বিরুদ্ধে প্রমাণ সম্বলিত সমস্ত অপরাধের ফাইল ধ্বংস করার জন্য এক সময় কালিয়াচক থানায় হামলার পরিকল্পনাও করে আসাদুল্লাহ । এত বড় এক কুখ্যাত দুষ্কৃতীকে দলে স্থান দেওয়ায় সিপিএম ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আঙুল উঠছিল বারবার । এবারে ওই দুষ্কৃতী গ্রেফতার হওয়ার পর চরম অস্বস্তিতে পড়ে গেছে রাজ্যের বর্তমান শাসকদল ।।